• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
বিদায় বাংলাদেশ, ফাইনালে ফিলিস্তিন

ফিলিস্তিনের কাছে গতকাল সেমিফাইনালে হারলেও দর্শকদের উচ্ছ্বাসের কমতি ছিল না

ছবি : বাংলাদেশের খবর

ফুটবল

বিদায় বাংলাদেশ, ফাইনালে ফিলিস্তিন

  • প্রকাশিত ১১ অক্টোবর ২০১৮

কবিরুল ইসলাম, কক্সবাজার থেকে

স্বাগতিক বাংলাদেশকে বিদায় করে দিয়ে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের ফাইনাল নিশ্চিত করেছে শক্তিশালী ফিলিস্তিন। গতকাল দ্বিতীয় সেমিফাইনালের মহারণে লাল-সবুজদের ২-০ গোলে ধরাশায়ী করেছে এশিয়ার পরাশক্তিরা। একটি করে গোল করেন মোহাম্মেদ বালাহ ও সামি মারাবাহ। এ নিয়ে চারবারের লড়াইয়ে তিনবারই হারতে হলো বাংলাদেশকে। আর একটি ম্যাচ ছিল ড্র। কাল শুক্রবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের শিরোপা নির্ধারণী লড়াইয়ে র্যাঙ্কিংয়ের শততম স্থানে থাকা ফিলিস্তিন মুখোমুখি হবে তাজিকিস্তানের। ম্যাচটি শুরু হবে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়।

ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ এ লড়াইয়ে একাদশে চারটি পরিবর্তন এনেছিলেন কোচ জেমি ডে। ইনজুরি কাটিয়ে ফিরেছিলেন অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া ও ডিফেন্ডার ওয়ালী ফয়সাল। সঙ্গে জায়গা পেয়েছিলেন ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ ঘোষ ও ফরোয়ার্ড মাহবুবুর রহমান সুফিল। আর একাদশ থেকে বাদ পড়েছিলেনন তৌহিদুল আলম সবুজ, সুশান্ত ত্রিপুরা, রহমত মিয়া ও রবিউল হাসান। তবে লোকাল কোনো ফুটবলারই জায়গা পাননি একাদশে। কাগজে-কলমে শক্তির বিচারে পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশ এ ম্যাচে লড়াই করেই হেরেছে। কাউন্টার অ্যাটাকে নয়, বরং পুরো ম্যাচেই আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে খেলেছে। বার বার আক্রমণ করেও গোলের দেখাটা পাওয়া হয়নি তাদের। ফিনিশিংয়ের অভাবটা গতকালও ফুটে উঠেছে। ফুটবল গোলের খেলা। দিন শেষে গোলের বিচারেই জয়-পরাজয় নির্ধারণ হয়ে থাকে। ইতিহাসও মনে রাখে বিজয়ীদের। তপুু-সুফিল-জীবনরা গোলের সুযোগ কাজে লাগাতে না পারলেও সফরকারীরা ঠিকই সুযোগের সদ্ব্যবহার করেছে। দুই গোল আদায় করে নিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে তারা।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে গত তিন দিন ধরেই কক্সবাজারের আকাশে মেঘ জমে আছে। বৃষ্টি ঝরছে প্রতিনিয়ত। লাল-সবুজদের সমর্থন দিতে বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই এদিন সমর্থকরা ছুটে আসেন মাঠে। গ্যালারি ছিল কানায় কানায় পরিপূর্ণ। টিকেট না পেয়ে অনেকেই ফিরে গেছেন হতাশা নিয়ে। টানা বৃষ্টির কারণে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমীন স্টেডিয়াম হয়ে ওঠে কর্দমাক্ত। মাঠের মধ্যে পানি জমে ছিল। বার বার থেমে যাচ্ছিল বল। বলের নিয়ন্ত্রণ নিতে উভয় দলের ফুটবলারদেরই গলদঘর্ম পোহাতে হয়েছে। এমন ভারী মাঠে ম্যাচের শুরুতেই পিছিয়ে পড়ে স্বাগতিকরা। ৮ মিনিটেই গোল হজম করে তারা। ফিলিস্তিনের পরিকল্পিত আক্রমণের সামনে অসহায় ছিল লাল-সবুজদের রক্ষণভাগ। ডানপ্রান্ত দিয়ে মুসাবের ক্রসে মোহাম্মেদ বালাহর দারুণ এক হেডে বল আশ্রয় নেয় জালে (১-০)। গোলরক্ষক আশরাফুল রানা চেষ্টা করেও পারেননি প্রতিহত করতে। পিনপতন নীরবতা নেমে আসে গ্যালারিজুড়ে। এরপরই যেনো জেগে উঠেছিল বাংলার দামাল ছেলেরা। আক্রমণের পর আক্রমণ করে ভাবিয়ে তুলেছিল সফরকারীদের। ম্যাচের ১৩ মিনিটে সমতা ফেরানোর সুযোগটা হাতছাড়া হয় গোলরক্ষক রামি হামাদার কারণে। মাহবুবুর রহমান সুফিলের কাটব্যাকে বল পেয়ে বক্সের ঠিক বাইরে থেকে মাসুক মিয়া জনি জোরালো শট নিয়েছিলেন। ফিলিস্তিনের গোলরক্ষক সেই বল গ্রিপে নিয়ে হতাশ করেন লাল-সবুজ জার্সিধারীদের। আট মিনিট পরই গোল মিস করেন সুফিল। বক্সের ভেতরে বল পেয়ে দুই ডিফেন্ডারকে কাটালেও গোলমুখে শট নিতে পারেননি এ ফরোয়ার্ড। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার এক মিনিট আগে আবারো ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন জীবন। সুফিলের বাড়ানো বলে গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল আদায় করতে পারেননি এ ফরোয়ার্ড। তার নেওয়া শটটি ছিল দিকভ্রষ্ট। ফিনিশিংয়ের যে অভাবটা তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে স্বাগতিক ফরোয়ার্ডদের একের পর এক গোল মিসের মহড়ায়।

পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশ দ্বিতীয়ার্ধেও ছিল আগ্রাসী। গোলের দেখা পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল। এ অর্ধে অনেকটাই রক্ষণাত্মক ভূমিকায় খেলতে থাকেন ফিলিস্তিনিরা। প্রতিপক্ষের রক্ষণ দেয়ালে ফাটল ধরাতে পারেননি জামাল, বিপলু, সবুজরা। বরং কাউন্টার অ্যাটাকে খেলে ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে ব্যবধান দ্বিগুণ করে ফেলে চলতি এ আসরের শীর্ষ র্যাঙ্কধারী দলটি। বাঁপ্রান্ত দিয়ে ইয়াজানের লং বলে দাবাগের হেডে বল পেয়ে যান এ ফরোয়ার্ড। তার সামনে একজন ডিফেন্ডারও ছিলেন না। সময় নিয়ে ঠান্ডা মাথায় দ্বিতীয় বার দিয়ে নিশানা ভেদ করেন তিনি (২-০)।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads