• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
কিশোর ফুটবলারদের সাফ জয়

রুদ্ধশ্বাস টাইব্রেকারে জয় নিশ্চিতের পর ট্রফি হাতে বাংলার কিশোর ফুটবলাররা

ছবি - বাফুফে

ফুটবল

কিশোর ফুটবলারদের সাফ জয়

  • স্পোর্টস রিপোর্টার
  • প্রকাশিত ০৪ নভেম্বর ২০১৮

কিশোরদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা পুনরুদ্ধার করেছে বাংলাদেশ। শক্তিশালী পাকিস্তানকে ফাইনালের মহারণে টাইব্রেকারে ৩ (১)-২ (১) গোলে পরাস্ত করে লাল-সবুজের পতাকার সম্মান বৃদ্ধি করেছে মেহেদী, জুনায়েদ, আদনানরা। এ ম্যাচেও জয়ের নায়ক গোলরক্ষক মেহেদী হাসান। যশোরের এ কিশোরের বীরত্বে টাইব্রেকারে পাকদের বিরুদ্ধে দারুণ এ জয় পায় মোস্তফা আনোয়ার পারভেজের শিষ্যরা। ম্যাচের মূল সময় ১-১ গোলে ড্র ছিল। আজ বেলা ৩টায় সাফের শিরোপা নিয়ে দেশে ফিরবে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা।

সেমিফাইনালে গত আসরের রানার্সআপ ভারতকে পরাস্ত করে ফাইনালে ওঠে বাংলাদেশ। ওই ম্যাচেও টাইব্রেকারে মেহেদী জাদুতে ভারতকে ধরাশায়ী করেছিল বাংলার কিশোররা। গতকাল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাদশে ছিল না গোলরক্ষক মেহেদী। লাল কার্ডের সমস্যা দূর হওয়ায় এক নম্বর গোলরক্ষক মিতুল মারমা সুযোগ পান। তবে ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে নামানোর জন্য কোচ হয়তো রিজার্ভ বেঞ্চে রেখে দিয়েছিলেন মেহেদীকে। কোচের সে টোটকা বেশ ভালোই কাজে লেগেছে। কারণ ম্যাচ যখন ১-১ গোলের সমতায় শেষ হওয়ার পথে, তখন কোচ আনোয়ার পারভেজ মিতুল মারমাকে তুলে নিয়ে মাঠে নামান মেহেদীকে। তার হয়তো অগাধ বিশ্বাস ছিল ১৫ বছর বয়সী এ গোলরক্ষকের ওপর। কোচের সে বিশ্বাসের প্রতিদান গুনে গুনে দিয়েছেন মেহেদী। ১-১ গোলে ম্যাচ শেষ হওয়ার পর শুরু আসল রোমাঞ্চ- টাইব্রেকার।

একে তো ফাইনালের স্নায়ুচাপ, তার ওপর টাইব্রেকার। দুয়ে মিলে বাংলাদেশের প্রথম শট নিতে গিয়েই ক্রসবারের অনেক ওপর দিয়ে বল বাইরে পাঠিয়ে দিয়ে দলকে বিপদে ফেলে দেয় রাজন হাওলাদার। সে চাপটা সামলে প্রতিপক্ষের জুনায়েদ সাহার শট বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রতিহত করে লাল-সবুজ শিবিরকে উল্লাসে মাতিয়ে তোলে মেহেদী। এরপর বাংলাদেশের হয়ে গোল করে তৌহিদুল ইসলাম। পাকিস্তানের হয়ে দ্বিতীয় শট নিতে আসা আদনান জাস্টিনের শটটিও দারুণ দক্ষতার সঙ্গে ডান দিকে ঝাঁপিয়ে রক্ষা করে শিরোপার পথ প্রসারিত করে মেহেদী। এরপর লাল-সবুজদের হয়ে টানা দুটি গোল করে রাজা আনসারি ও রুস্তম ইসলাম দুখু মিয়া। পাকিস্তানের মহিব উল্লাহ ও ওয়াসিফ নিশানা ভেদ করে ব্যবধান ৩-২-এ নামিয়ে আনে। বাংলাদেশের হয়ে শেষ শট নিতে আসা রবিউল আলম স্কোর করতে পারলেই ৪-২ ব্যবধানে শিরোপা উল্লাস করতে পারত বাংলাদেশ। কিন্তু বাংলাদেশি এ কিশোর বোকার মতো শট তুলে দেয় পাকিস্তানি গোলরক্ষকের হাতে। জমে ওঠে ম্যাচ। আবারো কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হয় গোলরক্ষক মেহেদী। তার ওপরই নির্ভর করছিল সব। শট ফেরাতে পারলেই শিরোপার স্বাদ। নয়তো আবারো পেনাল্টি শুটআউটের মুখোমুখি। এমন টেনশনের মুখোমুখি হয়েও মেহেদী নিজেকে সংবরণ করেছে সাবলীলভাবেই। ঠান্ডা মাথায় পাকিস্তানের মোদাসসর নজরের শটটি রুখে দেন পা দিয়ে। আর সঙ্গে সঙ্গে শিরোপা পূনরুদ্ধারের উল্লাসে মেতে ওঠে বাংলাদেশ। ২০১৬ সালেও ফাইনালে ভারতের কিশোরদের বিরুদ্ধে টাইব্রেকারে শিরোপা জয় করেছিল লাল-সবুজরা।

নেপালের এএনএফএ কমপ্লেক্স গ্রাউন্ডে দুপুরে শুরু হওয়া এ ম্যাচে শুরু থেকেই বেশ আক্রমণাত্মক খেলেছিল বাংলার কিশোররা। তিন মিনিটেই গোলের সহজ সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি রাসেল। গোলরক্ষককে একা পেয়েও নিশানা ভেদ করতে পারেনি এ ফরোয়ার্ড। ৯ মিনিট পর উচ্ছ্বাসও মিস করে গোলের সুযোগ। তবে ২৫ মিনিটে আত্মঘাতী গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। কর্নার থেকে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে হেড দিয়ে নিজেদের জালেই পাঠিয়ে দেয় পাকিস্তানি ডিফেন্ডার হাসিব আহম্মেদ খান (১-০)। এগিয়ে যাওয়ার উৎসবে মেতে ওঠে লাল-সবুজরা। কিন্তু এরপরই যেন ছন্দপতন ঘটে বাংলাদেশের। নিজেদের খুঁজে পাচ্ছিল না আনোয়ার পারভেজের শিষ্যরা। আর এ সুযোগটা কাজে লাগিয়ে ম্যাচের ৫৪ মিনিটে পেনাল্টি থেকে সমতা ফিরিয়ে আনে পাকিস্তান। বাংলাদেশি ডিফেন্ডার হেলাল নিজেদের বক্সে প্রতিপক্ষের এক ফরোয়ার্ডকে রাফ ট্যাকল করলে রেফারি সুদীপ কুমার পেনাল্টির নির্দেশ দেন। স্পটকিক থেকে গোল করে মহিব উল্লাহ (১-১)। শেষ পর্যন্ত সমতায় ম্যাচ শেষ হলে টাইব্রেকারে নিষ্পত্তি হয় শিরোপাভাগ্য।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads