• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯

ফুটবল

চ্যাম্পিয়ান মানাংকে হারালো আবাহনী

  • স্পোর্টস রিপোর্টার
  • প্রকাশিত ০৪ এপ্রিল ২০১৯

এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি) কাপের গ্রুপ পর্ব পেরোতে না পারার হতাশা দূর করতে উন্মুখ হয়ে ছিল বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী দল ঢাকা আবাহনী লিমিটেড। আর তার জন্য এবারের আসরে জয় দিয়ে শুরুর লক্ষ্য নিয়ে নেপাল যায় আবাহনী। গতকাল বুধবার স্বাগতিক নেপালের চ্যাম্পিয়ন মানাং মার্সিয়াংদিকে ১-০ গোলে পরাজিত করে প্রথম লক্ষ্য পূরণ করেছে তারা।

‘ই’ গ্রুপের এই ম্যাচটি কাঠমান্ডুর আনফা কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত হয় গতকাল বেলা সোয়া ৩টায়। নেপালের লিগ চ্যাম্পিয়ন মানাং ও বাংলাদেশের ফেডারেশন কাপের চ্যাম্পিয়ন আবাহনীর ম্যাচটি দারুণ উপভোগ্য হয়। 

ম্যাচের শুরু থেকে নেপালের দলটি কিছুটা প্রাধান্য বিস্তার করে খেললেও ধীরে ধীরে আবাহনী আধিপত্য নিতে থাকে। ম্যাচের ২৮ মিনিটের সময় আবাহনীর আফগান মিডফিল্ডার মাসিহ সাইঘানি গোল করে দলকে এগিয়ে নেন। কর্নার থেকে বল পেয়ে হেডের সাহায্যে তিনি গোলটি করেন। এরপর মানাং গোল পরিশোধের আর আবাহনী গোলসংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করে।

প্রথমার্ধের শেষদিকে রুবেল মিয়ার ক্রস বিপদমুক্ত করতে গিয়ে মার্সিয়াংদির এক ডিফেন্ডার প্রায় নিজেদের জালেই জড়িয়ে দিতে গিয়েছিলেন। যোগ করা সময়ে সানডে চিজোবার শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে ব্যবধান দ্বিগুণ হয়নি।

দ্বিতীয়ার্ধেও গোছালো ফুটবল খেলে নেপালের চ্যাম্পিয়ন দলটিকে চাপে রাখে আবাহনী। রক্ষণে বাদশা-রায়হান ছিলেন দুর্ভেদ্য দেয়াল হয়ে। ৭৮ মিনিটে আফেজ ওলাওলের শট ফিরিয়ে আবাহনীকে জয়ের পথে রাখেন শহীদুল। শেষ পর্যন্ত গোল আর না হওয়ায় আবাহনী পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ত্যাগ করে।

এএফসি কাপে এই প্রথম জয়ে শুরু পেল আবাহনী। গত দুই আসরে হার দিয়ে এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশনের এই প্রতিযোগিতা শুরু করেছিল দেশের ঐতিহ্যবাহী দলটি।

আগামী ১৭ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের মিনারভা পাঞ্জাবের মুখোমুখি হবে আবাহনী। মার্সিয়াংদির সঙ্গে ফিরতি লেগের ম্যাচটি হবে আগামী ১৯ জুন ঢাকায়।

গত রোববার নেপাল যায় আবাহনী দল। চোটের কারণে দলের সঙ্গে যেতে পারেননি নির্ভরযোগ্য ডিফেন্ডার তপু বর্মণ। দক্ষিণ কোরিয়ার ফরোয়ার্ড মিন-হিয়োক কোর জায়গায় ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ওয়েলিংটন সিরিনো প্রিওরিকে দলভুক্ত করে আবাহনী।

জাতীয় দলের খেলোয়াড় নিয়ে সমৃদ্ধ আবাহনী। চার বিদেশি বাদ দিলে স্থানীয়দের ১৬ সদস্যের মধ্যে ১৩ জনেরই জাতীয় দলে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। কম্বোডিয়ার বিপক্ষে শেষ আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে বাংলাদেশ দলের ছয়জন আছেন এই দলে। জাতীয় দলের খেলোয়াড় সংখ্যা বিবেচনায় আবাহনী পিছিয়ে থাকলেও এগিয়ে আছে বিদেশি কোটায়।

একে তো প্রতিপক্ষের মাঠে ছিল খেলা। খেলতে হয় আবার কৃত্রিম ঘাসের মাঠে। আবাহনীর পর্তুগিজ কোচ মারিও লেমোস অবশ্য দলকে নিয়ে কমলাপুর স্টেডিয়ামের কৃত্রিম ঘাসের মাঠে প্র্যাকটিস করেন। সেটাই বেশ কাজে লাগল। জয় পেল আবাহনী।

আশঙ্কা ছিল ইতিহাস পাশে নেই আবাহনীর। ২০০৫ সালে ভুটানে কিংস কাপে বাংলাদেশ  ফেডারেশন কাপের চ্যাম্পিয়নরা ২-০ গোলে হেরেছিল মানাং মার্সিয়াংদির কাছে।

গতকালের ম্যাচের আগে সেই ইতিহাসকেই টেনেছিলেন মানাং ক্লাবটির নতুন কোচ সিরিং লোপসাং, ‘ভুটানে আবাহনীকে হারিয়েছিলাম। এবার কাঠমান্ডুতে নিজেদের সমর্থকদের সামনে খেলব। ম্যাচ জেতাই আমাদের লক্ষ্য। ম্যাচটি আমার কাছে পঞ্চাশ-পঞ্চাশ। যারা সুযোগ কাজে লাগাতে পারবে, তারাই জিতবে।’ কিন্তু কোচের সেই আশা বিফলে গেল। ইতিহাসকে মিথ্যে প্রমাণ করে বাংলাদেশের আবাহনী তাদেরকে হারিয়েই এএফসি কাপে শুভ সূচনা করল।

গতকালের ম্যাচে আবাহনীর তুলনায় মানাং বেশিরভাগ সময় বলের দখল নিজেদের কাছে রেখেও হেরে যায়। মানাং দল ৭টি কর্নার পেলেও আবাহনী পায় ৪টি। গোল করার পর আবাহনী রক্ষণাত্মক ভূমিকায় খেলে। আর ওই পরিকল্পনায় সফল হয় আবাহনী। অনেক দিন পর বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের কোনো ক্লাব দল জয় পেল।    

এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশনের তৃতীয় সারির টুর্নামেন্ট প্রেসিডেন্টস কাপে ২০০৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত খেলা পাঁচ আসরে গ্রুপ পর্ব পেরোতে পারেনি আবাহনী। এরপর ২০১৭ ও ২০১৮ সালে খেলা এএফসি কাপেও একই অবস্থা তাদের।

গত দুই আসরে ছয় ম্যাচে ১টি করে জয় ও ড্র এবং চার হার নিয়ে গ্রুপ পর্ব থেকে যাত্রা থামে আবাহনীর। ২০১৭ সালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বেঙ্গালুরু এফসির বিপক্ষে ২-০ গোলে একমাত্র জয়টি পেয়েছিল তারা; সেবার একমাত্র ড্র (১-১) মোহনবাগানের সঙ্গে। পরেরবার একমাত্র জয় (১-০) বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে পাওয়া; ১-১ ড্রটি ভারতের লিগের আরেক দল আইজল এফসির সঙ্গে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads