• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
সেতিয়েনকে বরখাস্ত করলো বার্সেলোনা, নতুন কোচের পদে কোম্যান এগিয়ে

সংগৃহীত ছবি

ফুটবল

সেতিয়েনকে বরখাস্ত করলো বার্সেলোনা, নতুন কোচের পদে কোম্যান এগিয়ে

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ১৮ আগস্ট ২০২০

কোচ কিকে সেতিয়েনকে বরখাস্ত করেছে বার্সেলোনা, ক্লাব সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তার স্থানে রোনাল্ড কোম্যানই এগিয়ে রয়েছে বলে জানা গেছে।

এক টুইটার বার্তায় বার্সার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘নতুন মৌসুমকে সামনে রেখে বার্সেলোনার মূল দলটি পুনর্গঠনের লক্ষ্যে নতুন কোচের নাম খুব শিগগিরই ঘোষনা করা হবে।’

লা লিগায় রিয়াল মাদ্রিদের কাছে শিরোপা হারানোর পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে বিধ্বস্ত হওয়ায় কোচের পদ থেকে জানুয়ারিতে নিয়োগ পাওয়া সেতিয়েন বরখাস্ত হতে যাচ্ছেন এটা অনুমেয় ছিল। ক্যাম্প ন্যুতে গতকাল এক জরুরী সভায় তার বিদায় নিশ্চিত করা হয়। প্রায় ছয় ঘন্টার এই সভায় কোম্যানকে নতুন কোচ হিসেবে দায়িত্ব দেবার পক্ষে অনেকেই সহমত পোষন করেছেন।
এছাড়া ক্লাব আরো ঘোষনা দিয়েছে আগামী বছর জুনে অনুষ্ঠিতব্য সভাপতি নির্বাচনের তারিখ এগিয়ে ১৫ মার্চ করা হয়েছে।

বার্সেলোনার ক্ষুব্ধ সমর্থকরা আশা করেছিল চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায়ের সাথে সাথে সভাপতিরও বিদায় ঘন্টা বাজবে। কিন্তু আপাতত সেই সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। এর অর্থ হচ্ছে চাপে থাকা জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউ আরো কিছুদিন ক্লাব প্রধানের দায়িত্বে থাকছেন।

বিবৃতিতে আরা বলা হয়েছে, ‘সব ধরনের চিন্তা ভাবনা করে বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে আগামী নির্বাচনের জন্য ১৫ মার্চ একটি সুবিধাজনক তারিখ হতে পারে। বোর্ড মনে করে আগামী ১২ সেপ্টেম্বর যেহেতু নতুন মৌসুম শুরু হচ্ছে সে কারনে এই মুহূর্তে নির্বাচন দেয়াটা যথার্থ হবে না। তার উপর কোভিড-১৯ এর কারণে ক্লাব এমনিতেই আর্থিক সমস্যায় রয়েছে।’

২০১৮ সাল থেকে নেদারল্যান্ড জাতীয় দলের কোচের দায়িত্বে আছেন কোম্যান। করোনার কারনে আগামী বছর পর্যন্ত স্থগিত হয়ে যাওয়া ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়ন ও ২০২২ সালের সালের বিশ্ব =কাপ পর্যন্ত তার সাথে চুক্তি আছে ডাচ জাতীয় দলটির। কোচ হিসেবে মরিসিও পোচেত্তিনোর নামও এসেছিল। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বী এস্পানিওলের সাথে যোগাযোগের সূত্র ধরে বার্সেলোনা সম্পর্কে তার অতীতের একটি বিরুপ মন্তব্য তাকে পিছিয়ে দিয়েছে। দুই বছরের চুক্তিতে কোম্যান ও তার এজেন্ট সোমবার বার্সেলোনার সাথে আলোচনা করেছে। স্প্যানিশ গণমাধ্যমের মতে সভাপতি নির্বাচনের ফলাফলের উপর দ্বিতীয় বছরটি নির্ভর করছে।

ইয়োহান ক্রুইফের অধীনে খেলোয়াড় হিসেবে বার্সেলোনায় দারুন সময় কাটিয়েছেন কোম্যান। ১৯৯২ সালের ইউরোপীয়ান কাপের ফাইনালে জয়সূচক গোলটিও করেছিলেন। কিন্তু তার কোচিং ক্যারিয়ারে রয়েছে মিশ্র অভিজ্ঞতা। একটি সংকটময় মুহূর্তে তিনি বার্সেলোনায় আসতে যাচ্ছেন। কোচ হিসেবে তার প্রথম কাজই হবে অধিনায়ক লিওনেল মেসিকে দলে ধরে রাখা।

সোমবার বোর্ড সভা শুরু হবার কিছুক্ষন আগে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে মেসির দল ছাড়া নিয়ে ক্লাব এখনো কোন কিছু শোনেনি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ৩৩ বছর বয়সী এই আর্জেন্টাইন সুপারস্টার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বেশ হতাশা প্রকাশ করেছেন। স্থানীয় একটি গণমাধ্যম গতকাল রিপোর্ট করেছে গ্রীষ্মেই বার্সা ছাড়ার পরিকল্পনা করে ফেলেছেন মেসি।

এদিকে জেরার্ড পিকে জানিয়েছেন প্রয়োজন হলে তিনি বার্সা ছেড়ে দিতে প্রস্তুত আছেন। যদিও কোন বিষয়ই চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে একটি ধারণা অন্তত করা যায় ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে বার্সেলোনা তরুনদের উপরই নির্ভর করতে চাইছে। এক্ষেত্রে আনসু ফাতি, রিকুই পুইগ কিংবা ফ্রেংকি ডি জংই হতে পারে বার্সার পরবর্তী প্রজন্মের কান্ডারি।

কোম্যানও বার্সেলোনার হয়ে চ্যালেঞ্জের পরিমাপটা বেশ ভালই অনুধাবন করতে পারছেন। একটি অসাধারণ দল শুধুমাত্র কোচের কারনে কিভাবে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে তা আরেকজন কোচের বোঝাটা কঠিন নয়। সেতিয়েনের অধীনে বার্সেলোনা শুরু থেকেই কোন সাফল্য পায়নি। বরং দিনে দিনে পিছিয়েই পড়েছে। তার অধীনে ২৫টি ম্যাচে বার্সোলানা ১৬টি জয়, চারটিতে ড্র ও পাঁচটিতে পরাজিত হয়েছে। মাঝে মাঝে কোন ম্যাচে হয়ত বড় জয় তুলে নিয়েছে। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সেতিয়েনের অধীনে বার্সার রক্ষনভাগের দূর্বলতা প্রতিটি ম্যাচেই চোখে পড়েছে। এই একটি জায়গায় কোনভাবেই উন্নতি করতে পারেননি সেতিয়েন। করোনার কারনে তিন মাসের জন্য লিগ বন্ধ হবার আগে ক্লাসিকোতে তারা রিয়াল মাদ্রিদের কাছে পরাজিত হয়। এরপর পুনরায় লিগ শুরু হলে সেভিয়া, সেল্টা ভিগো ও এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের সাথে ড্র করে। ওসাসুনার সাথে পরাজয়ে মাদ্রিদের শিরোপা জয় নিশ্চিত হয়। এর পরপরই হতাশ মেসি বলেছিলেন জানুয়ারির থেকেই দল পিছিয়ে পড়েছে। এর অর্থ হচ্ছে তিনি কার্যত বুঝাতে চেয়েছেন সেতিয়েনের নিয়োগের পরই বার্সা আর ঘুড়ে দাঁড়াতে পারেনি। সেতিয়েন অবশ্য স্বীকার করেছেন তিনি বার্সেলোনার মত দলের ড্রেসিং রুম কখনই নিজের নিয়ন্ত্রনে নিতে পারেননি।

বেশীরভাগ সমর্থকই অবশ্য বার্সেলোনার এই ব্যর্থতায় বার্তোমেউ এবং বোর্ডকেই বেশী দায়ী করেছে। ট্রান্সফার মার্কেটের ভুলও এক্ষেত্রে তারা সামনে নিয়ে এসেছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads