• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪২৯
কক্সবাজারে লাখো পর্যটক, বৃষ্টি দমাতে পারেনি আনন্দ আয়োজন

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

ভ্রমণ

কক্সবাজারে লাখো পর্যটক, বৃষ্টি দমাতে পারেনি আনন্দ আয়োজন

  • কক্সবাজার প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৮ জুন ২০১৯

দুর্যোগপুর্ণ আবহাওয়ার মধ্যেও কক্সবাজারে লাখো পর্যটক এসেছেন। গত বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত লাখো পর্যটকে ভরপুর হলেও হঠাৎ ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে কিছুসময়ের জন্য সবকিছু থমকে দাড়িয়েছিল। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। বৃষ্টির মধ্যে সমুদ্র সৈকতে লাখো পর্যটকের আগমনে মুখরিত ছিল পর্যটন নগরী কক্সবাজার।

হোটেল মালিক ও টুরিস্ট পুলিশের ভাষ্যমতে, গত তিন দিনে অন্তত ৪ লাখেরও বেশী পর্যটক সৈকত ভ্রমণে এসেছেন। যার অধিকাংশই বৃষ্টি উপেক্ষা করে আনন্দ আয়োজনে মাতায়োরা।

শুক্রবার সকালে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে নেমে দেখা গেছে, বিপুলসংখ্যক পর্যটক গোসলে ব্যস্ত কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টিতে সবকিছু থমকে দাড়ায়। অন্যদিকে হোটেল না পেয়ে শহরের কলাতলী সড়কে বিভিন্ন হোটেলের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল অসংখ্য পর্যটক। তাদের সঙ্গে শিশুরাও। জীবনের প্রথম বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত ভ্রমণে এসে দুর্ভোগে পড়তে হবে- তা তাদের জানা ছিল না।

শহরের সুগন্ধা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র মোড়েও হোটেলের অপেক্ষায় বসে থাকতে দেখা গেছে শতাধিক পর্যটককে। এর মধ্যে নারী ও শিশুদের দুর্ভোগ চরমে।

ঢাকা থেকে আগত কামরুজ্জামান জানান, চার ছেলেমেয়ে নিয়ে সকালে কলাতলী হাঙর ভাস্কর্য মোড়ে নামেন। এরপর আশপাশের ১০-১২টি হোটেলে খোঁজ নেন তিনি। কিন্তু কোথাও কক্ষ ভাড়া পাওয়া যায়নি। দুপুর ১২টার দিকে একটি হোটেলে কক্ষ পেলেও আর বৃষ্টির কারণে আর বের হতে পারেননি। এমন আবহাওয়াও এত লোক এখানে আসবে, কল্পনাও করিনি।

হোটেল সুগন্ধার ম্যানেজার নুরুল আবছার বলেন, গত এক যুগে এত বিপুল পর্যটকের সমাগম কক্সবাজারে হয়নি। গত তিন দিনে সৈকত ভ্রমণে এসেছেন ৪ লাখের বেশী মানুষ। চার শতাধিক হোটেল-মোটেল-কটেজের কক্ষ অগ্রিম বুকিং থাকায় অনেকে বিপাকে পড়েছেন। বিভিন্ন এনজিও সংস্থা অন্তত অর্ধশতাধীক হোটেল ও গেস্ট হাউজ অফিস হিসাবে ব্যবহার করার আবাসন সংকট আরো তীব্র হয়েছে। ভবিষ্যতে এ সংকট আরো বাড়তে পারে। এ ক্ষেত্রে অগ্রিম হোটেলকক্ষ বুকিং দিয়েই ভ্রমণে আসা উচিত।

তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার লাখো পর্যটকে ভরপুর হওয়ার কিছু সময়ের জন্য ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে সবকিছু থমকে দাঁড়ায়। তবে শুক্রবার থেকে পর্যটকরা বেশ সাচ্ছন্দে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা অনেকে দল বেধে ইনানী হিমছড়ি,সাফারী পার্ক সহ অনেক দর্শনীয় স্থানে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজারের (টুয়াক) সভাপতি তোফায়েল আহমদ বলেন, গত তিন দিনে চার লাখের বেশি পর্যটক কক্সবাজারে এসেছেন। এর বিপরীতে যে ব্যবসা হওয়ার কথা তা হচ্ছে না। পর্যটকরা সেন্টমার্টিন যাওয়ার সকল কর্মসূচি এখন বাতিল করেছে। হোটেল মোটেলের বাইরে রেস্টুরেন্টেও তেমন ব্যবসা হচ্ছে না। অনেক পর্যটক তাদের কার্যক্রম সীমিত করে এনেছেন।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজারের সুপার মো. জিল্লুরর রহমান বলেন, হঠাৎ করে কয়েক লাখ মানুষের উপস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে হিমশিম খেতে হয়। এত পর্যটক আসার পরও কোথাও তেমন জটলা নেই। সৈকত ভ্রমণের পাশাপাশি পর্যটকেরা দলে দলে পাহাড়ি ঝরনার হিমছড়ি, দরিয়ানগর, পাথুরে সৈকত ইনানী, টেকনাফের মাথিন কূপ, নাফ নদী, মেরিন ড্রাইভ, সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ভ্রমণের জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ছে এটা দেখে আমাদের খুব ভাল লাগছে। পর্যটকদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, বিপুলসংখ্যক পর্যটকের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি তাদের সমস্যা সম্পর্কে সজাগ আছে প্রশাসন। পর্যটকদের কাছ থেকে হোটেলের অতিরিক্ত ভাড়া আদায় হচ্ছে কি না- তা তদারকির জন্য ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে আছে। পর্যটক হয়রানির যেকোনো অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads