• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
ঘুরে আসুন ভারতের ডালহৌসি থেকে

সংগৃহীত ছবি

ভ্রমণ

ঘুরে আসুন ভারতের ডালহৌসি থেকে

  • তাবাস্সুম তৈয়্যবা
  • প্রকাশিত ০৬ জুলাই ২০১৯

ডালহৌসি ভারতের সবচেয়ে সুন্দর জায়গাগুলোর মধ্যে অন্যতম। ব্রিটিশদের নামকরণে জায়গাটির নামকরণ করা হয় ডালহৌসি। মিনি সুইজারল্যান্ড নামে পরিচিত এই জায়গাটি অবস্থিত হিমাচল প্রদেশে।

পাইন গাছবেষ্টিত এ জায়গাটির তাপমাত্রা গরমকালে থাকে ১৫ থেকে ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময়টাই ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত। এখানে দু’ধরনের আবহাওয়া উপভোগ করতে পারবেন। একই সঙ্গে দিনে আকাশ থাকে সাদা মেঘে আচ্ছন্ন আর মিষ্টি রোদ। চারদিকে বাতাস। আবার কখনো পুরো দিনই থাকে বৃষ্টিময়। চারদিকে বৃষ্টির টিপ টিপ আওয়াজ আর মেঘের গর্জন। ভিন্নরকম আবহাওয়া থাকলেও  জায়গাটির দুই রকম সৌন্দর্য একসঙ্গে উপভোগ করাটা ভাগ্যের ব্যাপার।

ডালহৌসি যাওয়ার পথে অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গা দেখতে পাওয়া যায়। এসব জায়গায় না নামলেই নয়। যখন আপনি হিমাচল প্রদেশে প্রবেশ করবেন, তখনই অনুভব করবেন ঠান্ডা বাতাস। তাই আপনি যতক্ষণ ভ্রমণ করবেন, ততক্ষণই উপভোগ করবেন আশপাশের মনোমুগ্ধকর পরিবেশ। পাহাড়গুলোয় যেন সবুজ মাদুর বিছানো, মাঝে মাঝে মেঘের ছোঁয়ায় হয়ে ওঠে অসম্ভব সুন্দর।

যে জায়গাটির জন্য ডালহৌসিকে মিনি সুইজারল্যান্ড বলা হয়, সে জায়গাটির নাম হচ্ছে খাজিয়ার। ডালহৌসির মেইন পয়েন্ট থেকে আনুমানিক ২৪ কিলোমিটার দূরে গেলেই পৌঁছে যাবেন খাজিয়ার। পানি পাহাড় মাঠ আর গাছের এক অপরূপ সমাহার এ জায়গাটিতে। নিঃসন্দেহে বলতে পারি এমন জায়গায় যাওয়ার পর আপনার মন প্রকৃতির রূপের কাছে হার মানবেই। আরো কিছু আকর্ষণীয় জিনিস আছে এখানে, সেটা হচ্ছে প্যারাগ্লিডিং আর হর্স রাইডিং। চাইলে এ দুটি জিনিস উপভোগ করতে পারবেন।

এরপর যেতে পারেন পানচপুলা। এ জায়গাটিও বেশ সুন্দর। কিছু অ্যাডভেঞ্চার আক্টিভিটিস করতে চাইলে জায়গাটা আপনার জন্য আদর্শ। পাহাড়ের মাঝখানে বড় বড় পাথর আর ঝরনা নিয়ে গঠিত হয় পানচপুলা। ছোট একটি পার্ক আছে বাচ্চাদের জন্য। পাহাড়ের মাঝখানে কিছু ক্যাফেও পাবেন। বিকেলের চা-নাস্তার জন্য এমন পরিবেশ পাওয়াটা দুর্লভ।

এরপর ডালহৌসির মেইন পয়েন্টের দিকে চলে যেতে পারেন। যাওয়ার রাস্তায় একটা সুন্দর স্পট আছে, যা গ্রিন ভ্যালি নামে পরিচিত। পাইন গাছের সৌন্দর্য কী, সেখানে গেলে স্পষ্ট বোঝা যায়। মনে হবে গাছগুলো একই রকম করে কাটা হয়েছে, অথচ এগুলো প্রাকৃতিকভাবেই এমনভাবে গড়ে উঠেছে।

আরেকটি বিখ্যাত স্পট হচ্ছে গান্ধী চৌক। এখানে কিছু মার্কেট আছে, যেগুলো থেকে টুকটাক শপিং করতে পারেন। অনেক সুন্দর একটি স্পটও আছে গান্ধী চৌকে। এখান থেকে মোটামুটি পুরো ডালহৌসি শহর দেখতে পাবেন। এখানে আরেকটি মজার জিনিস পাবেন, সেটা হচ্ছে ‘তন্দুরি চা’। শুনতে একটু অবাক লাগল তন্দুরি চা তাই না? আমাদেরও অবাক লেগেছিল দেখার পর। এটা এখানকার মাস্ট ট্রাই আইটেম।

মোটামুটি কম খরচের মধ্যে ঘুরে আসতে পারেন এই অসম্ভব সুন্দর জায়গাটি। কিন্তু যাওয়ার সঠিক রুট সম্পর্কে জানতে হবে। কিছু সহজ রুট আছে।

ট্রেন : ঢাকা-কলকাতা-পাঠানকোট-ডালহৌসি

বিমান : প্রথমে ঢাকা-দিল্লি। এরপর পাঞ্জাব-পাঠানকোট- ডালহৌসি। বাসে ভ্রমণ করতে হবে। অথবা ৩ হাজার টাকা/দিন গাড়ি ভাড়া করে সরাসরি পাঞ্জাব থেকে ডালহৌসি ঘুরে আসতে পারেন।

হোটেল ভাড়া মোটামুটি কম; কিন্তু একটু খুঁজতে হবে। খাওয়ার খরচটা একটু বেশি। হালাল মাংস পাওয়া একটু কঠিন। দুদিনের জন্য একটু কমই খেলেন না হয়! যদি ভারত ভ্রমণের কেউ পরিকল্পনা করে থাকেন, তাহলে আমার মতে ডালহৌসিকে অবশ্যই ভ্রমণতালিকায় একদম প্রথম দিকে রাখবেন।

বি. দ্র. : ডালহৌসি শহরটা খুবই পরিষ্কার। এখানে রাস্তাঘাটে ময়লা-আবর্জনা ফেলা নিষেধ। এমনকি পলিথিন ব্যবহারের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আছে। অতএব বুঝতেই পারছেন কত সুন্দরভাবে শহরটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা হয়। আশা করি, আপনারা কেউ গেলে এ বিষয়টির ওপর বিশেষ খেয়াল রাখবেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads