• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
বালি যাবেন?

ছবি : সংগৃহীত

ভ্রমণ

বালি যাবেন?

  • সোহেল অটল
  • প্রকাশিত ২৭ জুলাই ২০১৯

বালি ও তার আশপাশের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দ্বীপমালা নুসা পেনিদা, নুসা লেমবনগান ও নুসা সেনিনগান নিয়ে ইন্দোনেশিয়ার প্রদেশ বালি গঠিত। অনিন্দ্য সুন্দর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে বছরজুড়েই বালিতে পর্যটক থাকে। বিশ্বের প্রতিটি প্রান্ত থেকে পর্যটক যায় বালিতে। ভ্রমণপিয়াসুদের কাছে বালি অন্যতম সেরা গন্তব্য হয়ে উঠেছে গত তিন দশকে। বালি ঘুরে এসে জানাচ্ছেন সোহেল অটল

 

প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে— বালি কেন যাবেন?

ভ্রমণপিয়াসুদের কাছে বালি এক আকর্ষণের নাম। ইন্দোনেশিয়ার এই দ্বীপ-প্রদেশটির আয়তন প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার বর্গকিলোমিটার। পুরোটা জুড়েই অনিন্দ্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। পাহাড়-সমুদ্রের মেলবন্ধন, আগ্নেয়গিরি, ঝরনা, পুরনো সভ্যতার নানা উপাখ্যান— সব মিলিয়ে বালি পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকে। এ ছাড়া বালিতে থাকা-খাওয়া বেশ সস্তা। সে কারণেও বালি পর্যটকদের অন্যতম গন্তব্য।

বালিতে দেখার আছে অনেক কিছু। এয়ারপোর্টের খুব কাছেই বালির অন্যতম উন্নত শহর কুতা। সেখানে থাকলে যেদিন পৌঁছাবেন সেদিন কুতা বিচে বিকেলটা ঘুরে বেড়াতে পারেন। বিচের পাশে খুব সুন্দর কিছু রেস্টুরেন্ট। এখানে খাবারের দাম খুব বেশি নয়। রাতে বিচওয়াক বা ডিসকভারি মার্কেট ঘুরে দেখতে পারেন। রাত ৮টার পরে মার্কেট অবশ্য বন্ধ হয়ে যায়।

বালিতে দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে যেতে পারেন নুসা দুয়া, উলুওয়াতু, পাদাম পাদাম বিচ, কিন্তামানি মাউন্ট বাতুর, উবুদ, তানালক মন্দির, মাংকি ফরেস্ট। এ জায়গাগুলোয় যেতে হলে অবশ্যই আপনাকে একটা গাড়ি ভাড়া করে নিতে হবে সারাদিনের জন্য। কিন্তামানি মাউন্ট বাতুর, উবুদ একদিকেই পড়বে। তানালট অন্যদিকে আর নুসা দুয়া আর উলুওয়াতু আরেকদিকে। তাই একদিনে সব দেখতে পারবেন না। কিন্তামনি উবুদ ঘুরে আসতে হলে সকাল সকাল ট্যাক্সি ভাড়া করে বের হয়ে পড়বেন। জীবন্ত আগ্নেয়গিরি দেখতে পাবেন যা থেকে মাত্র কিছুদিন আগেও অগ্ন্যুৎপাত হয়েছে। সেখানে লাঞ্চ করে নিতে পারবেন ১ হাজার ৫০০ টাকা পড়বে জনপ্রতি বুফে-তে। আসার পথে উবুদে রাইস টেরেস, মানকি ফরেস্ট আর জলপ্রপাত দেখতে পাবেন। এখানেও চাইলে ট্র্যাডিশনাল বোরোঙ নাচ দেখতে পারেন। সকালে গিয়ে সন্ধ্যার মধ্যেই ফিরে আসতে পারবেন। বাংলাদেশি টাকায় ভাড়া পড়বে ৩ হাজার ৫০০ টাকার মতো। এসব জায়গায় ঢুকতে আপনার টিকেট কাটতে হবে।

উলুওয়াতু মন্দির, পাদাম পাদাম বিচে গেলে ওখানে সানসেটটা দেখতে ভুলবেন না। অসাধারণ এক দৃশ্য। সূর্য ডোবার পরে সেখানে বালিনেস নাচ আর ওদের ঐতিহ্যবাহী কেসাক নাচ দেখতে পারবেন তবে তার জন্য টিকেট কাটতে হবে। এই এলাকায় বাঁদরের বাঁদরামিটা একটু বেশি। সুযোগ পেলেই সানগ্লাস, ক্যাপ, খাবার চুরি করে ভাগবে। কুতা থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে। এখানেও আপনি উলুয়াতুরের মতো সমুদ্রের ওপর মন্দির আর সানসেট দেখতে পাবেন। বালির দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম।

আর অবশ্যই যাবেন গিলি আইল্যান্ড।  বালির সব থেকে সুন্দর জায়গা এই গিলি আইল্যান্ড। গিলিতে তিনটি দ্বীপ আছে— গিলি ত্রাওয়ানগান, গিলি মেনো আর গিলি এয়ার। গিলি ত্রাওয়ানগানে এক রাত থাকবেন সুন্দর কোনো রিসোর্টে। ভাড়া পড়বে বাংলাদেশি টাকায় ২ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকার মধ্যে। ছবির মতো সুন্দর গিলিতে কোনো গাড়ি বা যানবাহন নেই। ঘোড়ার গাড়ি আর সাইকেল হচ্ছে বাহন। ঘণ্টা হিসেবে সাইকেল ভাড়া করে ঘুরতে পারবেন এই দ্বীপটিতে। এখানে আপনি স্নোরকেলিং করতে পারবেন জনপ্রতি দেড় লাখ রুপিয়ায়। চার ঘণ্টার এই ট্যুরে আপনাকে গিলি মেনো আর গিলি এয়ার ঘুরে টার্টেল রিফ, ফিশ রিফ আর কোরাল আইল্যান্ড ঘুরে দেখাবে স্পিড বোটে আর সমুদ্রের নিচে সাঁতার কেটে আসবেন লাইফ জ্যাকেট, মাস্ক পরে। অসাধারণ এক অভিজ্ঞতা নিঃসন্দেহে। রাতে বিচ পার্টিতে ডিজে’র তালে তালে সময়টা উপভোগ করতে পারেন। বালি থেকে গিলি যেতে আপনাকে ফাস্ট বোটের টিকেট করতে হবে। জনপ্রতি ৫ লাখ রুপিয়া বা বাংলাদেশি ৩ হাজার টাকার মতো খরচ পরবে রিটার্ন টিকেটসহ। অনলাইনে বা ট্যুর গাইড থেকেও টিকেট কিনতে পারেন। ওরাই আপনাকে হোটেল থেকে পিক করে ওদের গাড়িতেই পাদাম হারবারে পৌঁছে দেবে। গাড়িতে দেড়ঘণ্টা লাগে জেটিতে যেতে। সেখান থেকে গিলি পৌঁছাতে বোটে লাগবে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা।

 

বালির আরো কিছু জনপ্রিয় ট্যুরিস্ট স্পট রয়েছে। চাইলে সেগুলোও ঘুরে দেখতে পারেন।

সেমিনিয়াক

বালির ভিলা আর লাক্সারি রিসোর্ট হোটেলগুলো এখানে। যারা হানিমুনে যায় তাদের জন্য বেস্ট।

নুসা দুয়া

ওয়াটারব্লো নামে একটি জায়গা আছে। সমুদ্রের ধারে পাহাড়ে বড় বড় ঢেউয়ের আছড়ে পড়া দেখতে যায় সবাই। সি-ওয়াক আর ওয়াটার অ্যাক্টিভিটির জন্য ভালো।

সানুর বিচ

এখানে সি-ওয়াক+ ওয়াটার অ্যাক্টিভিটি করতে পারেন। আর নুসা পেনিদা যেতে হলে আপনাকে এখান থেকেই ফাস্ট বোট নিতে হবে।

উবুদ

উবুদ শহর হলো রিল্যাক্স করার জায়গা। এখানে হোটেল ভাড়া অনেক কম। উবুদ অনেকটা বালির মাঝখানে। তাই এখান থেকেই আপনি পুরো সেন্ট্রাল বালি এক্সপ্লোর করতে পারবেন। বালির গ্রাম বললে ভুল হবে না। ইয়োগা আর কুকিং ক্লাস করতে ইউরোপিয়ানরা এখানে থাকে। ক্রাফটের কাজ আর সুন্দর সব মন্দির এখানেই। উবুদ থেকে কিছুটা দূরেই জাতিলুয়িহ্ রাইস ট্যারেস। অনেকে এটাকে বালির সবচেয়ে সুন্দর রাইস ট্যারেস বলে।

বেদগুল

উবুদ থেকে ৫০ কিলোমিটার মতো দূরে হলো বেদগুল শহর। বালির সেন্ট্রাল মাউন্টেন রেঞ্জ। একদম ঠান্ডায় কাঁপাকাঁপি অবস্থা। যদি এখানে যাওয়ার ইচ্ছা থাকে, তাহলে সঙ্গে গরম কাপড় নিতে হবে। বেদগুল এরিয়ায় গেলে আপনি অনেক মুসলমান পাবেন। বেদগুলে প্রথমেই যেটা চোখে পড়ে তা হলো বেরাতান লেক। পাহাড়ে ঘেরা অপরূপ সুন্দর জায়গা। বেশিরভাগ সময় পাহাড়ের চূড়া মেঘে ঢেকে যায়। চোখ জুড়িয়ে যাবে দেখে। আর লেকের পাশেই বালি সবচেয়ে সুন্দর মন্দির। পুরা উলুন দানু বেরাতান টেম্পল। লেকের ওপর অনেক সুন্দর সাজানো গোছানো মন্দির। চারপাশের আবহাওয়ায় এক অদ্ভুত মুগ্ধতা আছে যা নিজে অনুভব না করলে বোঝানো সম্ভব নয়।

 

পুরা উলুন দানু বেরাতান টেম্পল

এরপর পাঁচ কিলোমিটার গেলেই বুয়্যান লেক পড়ে, সেখানেও লেকের পাশে একটি টেম্পল আছে। নামটা হলো পুরা উলুন দানু বুয়ান টেম্পল। এই মন্দির দেখার পর ১০ কিলোমিটার মতো গেলেই গিটগিট ওয়াটার ফল। গিটগিট সবচেয়ে সুন্দর ওয়াটারফল। এখানে পার্কিং স্পট থেকে অনেকটা পথ হেঁটে নিচে নামতে হয়। যেতে আসতে একঘণ্টা মতো সময় লাগবে। ঘণ্টাখানেক নিচে বসে ঝরনা দেখতে পারেন। তিন ঘণ্টা সময় নিয়ে গেলে সব থেকে ভালো হয়।

 

গিটগিট ওয়াটার ফল

গিটগিট ঝরনার ১০ কিলোমিটার রেডিয়ামে আরো তিনটি সুন্দর ঝরনা আছে। আলিং আলিং, বানয়ুমালা আর সেকুমপুল ফলস। যদি সেকুমপুল যান তাহলে একটা পুরো দিন চলে যাবে। অনেকটা পথ ট্রেক করে যেতে হয় আর গাইড ছাড়া যেতে পারবেন না। গুগল ম্যাপ ধরে সোজা চলে যাবেন। এন্ট্রি গেট থেকেই গাইড নিতে পারবেন। বিভিন্ন প্যাকেজ আছে ৭০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত। আপনার যেটা সুবিধা হয় নিতে পারেন।

হান্দ্রা গলফ রিসোর্ট

বালির সব জায়গায় আপনি একধরনের গেট দেখতে পাবেন। যেটাকে বালিনিজ গেট বলে। হান্দ্রা গলফ রিসোর্টের বালিনিজ গেটটি অনেক বড় আর সুন্দর। সঙ্গে সহজেই এক্সেসিবল। এ গেটের সঙ্গে ছবি তুলতে আপনাকে সময়ভেদে লাইন দিতে হতে পারে। আর এখানে ছবি তুলতে আপনাকে ১০ মিনিট সময় দেবে। তার জন্য এন্ট্রি ফি ৩০ হাজার রুপিয়া বা ১৮০ টাকা।

 

মুন্দুক

সেন্ট্রাল বালির একটি শহর মুন্দুক। এটি বেদগুলের পাশেই। মুন্দুক অনেকটা বাংলাদেশের বান্দরবানের মতো। মুন্দুকের রাস্তায় বাইক চালানো ওয়ান্স ইন এ লাইফটাইম এক্সপেরিয়েন্স। আপনি মাথা থেকে বের করতে পারবেন না এই রাস্তা। মেঘের মধ্য দিয়ে বাইক চালাবেন রীতিমতো। আর মুন্দুকে থাকতে হলে গরম কাপড় লাগবে। সেকুমপুল, আলিং আলিং, গিটগিট, মুন্দুক ফলস, এই ঝরনাগুলো সব দেখতে হলে আপনার মুন্দুকে থাকা বেটার হবে।

 

নর্থ বালি

সেন্ট্রাল বালির পরেই নর্থ বালি শুরু। নর্থ পার্টটি বালির পুরনো ক্যাপিটাল ছিল ডাচদের সময়। লোভিনা বিচ সবচেয়ে ফেমাস জায়গা। খুব বেশি কিছু নেই এদিকে। এখানে ডলফিন দেখার অ্যাক্টিভিটি আছে একটা, যার জন্য বেশিরভাগ ট্যুরিস্ট আসে। বেশকিছু ট্র্যাভেল ব্লগার এটাকে সাপোর্ট করে না। ডলফিন দেখার অ্যাক্টিভিটিটা এতই পপুলার হয়েছে যে, ডলফিনের চেয়ে নৌকা বেশি সেখানে। আর অনেকের মতে, এটা ডলফিনদের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে।

 

পুরা লেমপুয়াং লুহুর টেম্পল

এই টেম্পলের নাম অনেকেই জানেন না। এখানে একটা বালিনিজ গেট আছে, যেটাকে স্বর্গের দরজা বলে। মাউন্ট লেমপুয়াংয়ের ওপর অবস্থিত এই টেম্পল। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১ হাজার ১৭৫ মিটার উপরে এই মন্দির। একদম নিচ থেকে মন্দিরে যেতে আপনাকে ১ হাজার ৭০০’র মতো সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হবে। প্রায় দুই ঘণ্টা সময় আর যথেষ্ট ভালো ফিটনেস দরকার। স্থানীয়দের মতে, এখানে ওঠার সময় যারা অভিযোগ করে যে পারবো না বা অনেক কঠিন তারা কখনো উপরে যেতে পারে না। এটা মাউন্ট আগুং এর বেশ কাছেই। মন্দিরের উপর থেকে মাউন্ট আগুং দেখা যায় অনেক ভালোভাবে। আর যেহেতু পাহাড়ের চূড়ায় টেম্পল, তাই চারপাশ দেখে চোখ জুড়িয়ে যাবে। অনেকে এখানে সানরাইজ দেখতে আসে, তাই সেটা করতে হলে আপনাকে মাউন্ট বাতুর ট্রেকের মতো করে রওনা দিতে হবে। এখানে কোনো প্যাকেজ ট্যুর নেই, নিজে নিজেই যেতে হবে। অ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করলে কখনোই মিস করবেন না।

 

কীভাবে যাবেন

বালিতে যাওয়ার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো ইন্দোনেশিয়া অন অ্যারাইভাল ভিসা হওয়ায় ঝামেলা পোহাতে হয় না। শুধু বিমানের টিকেট থাকলেই চলে। মালিন্দো, থাই এয়ার, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস, মালয়েশিয়ান এয়ারের বিমানে আপনি বালি যেতে পারেন। টিকেটের দাম ২২ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকার মধ্যে ওঠানামা করে।

মালিন্দো এক্ষেত্রে সাশ্রয়ী হবে। যাত্রার যত আগে টিকেট কাটা সম্ভব হবে তত সাশ্রয়ী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কুয়ালালামপুরে ট্রানজিট বাদে বালি পৌঁছাতে সময় লাগে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা। বাংলাদেশের সময়ের সঙ্গে দুই ঘণ্টার ব্যবধান ইন্দোনেশিয়ার।

ইন্দোনেশিয়ার ইমিগ্রেশনে যে বিষয়গুলো দেখতে চাইবে তা হলো আপনি কতদিনের জন্য ওখানে যাচ্ছেন, যে হোটেলে থাকবেন তার বুকিং কনফারমেশন পেপার, পাসপোর্ট ডলার এনডোর্স করা কি-না। সব দেখে আপনার পাসপোর্টে এন্ট্রি ভিসা দিয়ে দেবে ৩০ দিনের জন্য।

 

কখন যাবেন

বালিতে আপনি বছরের যে কোনো সময় যেতে পারেন। বালিতে দুটি সিজন, বলা চলে গ্রীষ্ম ও বর্ষা। এপ্রিল থেকে অক্টোবর হলো গ্রীষ্ম বা শুকনো মৌসুম। আর নভেম্বর থেকে মার্চ বর্ষা বা ভেজা মৌসুম। এ সময় বৃষ্টি হয় মূলত। বালিতে যদি ঘুরতে চান তাহলে শুকনো মৌসুমই ভালো হবে। এপ্রিল থেকে অক্টোবরের মাঝে। এখন এপ্রিল-অক্টোবরের মধ্যে পিক ট্যুরিস্ট সিজন হলো জুলাই-আগস্ট। বেশি ভিড় এড়াতে এবং কিছুটা পিক সিজনের মজা নিতে চাইলে জুনে অথবা সেপ্টেম্বরে যাওয়া ভালো। তাহলে আপনি সবকিছু একটু কম দামে পাবেন এবং দরদাম করার সুযোগ পাবেন। তাছাড়া হোটেল বুকিং নিয়ে ভাবতে হবে না। দিনে দিনে সব জায়গায় হোটেল পাবেন। এ ছাড়া ডিসেম্বর মাসও বাদ দেওয়া উচিত। ক্রিসমাস আর নিউ ইয়ারের জন্য এ সময়টায় বেশ চাপ থাকে।

 

কারেন্সি

লাখ লাখ টাকা নিমিষেই খরচ করার জায়গা ইন্দোনেশিয়া। ১০০ ডলার ভাঙালেই আপনি পেয়ে যাবেন ১৩ লাখ ৬০ হাজার ইন্দোনেশিয়ান রুপিয়া। ১ লাখ রুপিয়া মানে বাংলাদেশি ৬১৫ টাকা মনে রাখলেই হবে। টাকা ভাঙতি অবশ্যই অথরাইজড মানি চেঞ্জার থেকে করবেন। নয়তো প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এয়ারপোর্ট থেকে অল্প কিছু ডলার ভাঙতি করে নেবেন ট্যাক্সি ভাড়া দেওয়ার জন্য। কারণ এয়ারপোর্টে মানি একচেঞ্জ রেট কম।

 

ট্রান্সপোর্ট

এয়ারপোর্ট থেকে যখন বের হবেন তখন এয়ারপোর্ট ট্যাক্সি সার্ভিস না নিয়ে চেষ্টা করবেন যেন বাইরে গিয়ে ব্লু বার্ড ট্যাক্সিতে মিটারে যেতে। মিটারে আপনার ৩০-৪০ হাজার রুপিয়া বাংলাদেশি টাকায় যা ১৮০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যেই থাকবে। আর এয়ারপোর্ট থেকে নিলে এই একই দূরত্বে ভাড়া নেবে ৭৫ হাজার থেকে দেড় লাখ রুপিয়া।

 

কোথায় থাকবেন

বালিতে হোটেল ভাড়া তুলনামূলক অনেক কম। বাংলাদেশি টাকায় ১ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকার মধ্যে ভালো মানের হোটেল পাওয়া যাবে ব্রেকফাস্টসহ। যে কোনো অনলাইন বুকিং সাইট থেকে যাওয়ার আগেই হোটেল বুক করে যাওয়া উচিত। সেক্ষেত্রে বুকিং.কম কিংবা অ্যাগোডা.কম ভালো অপশন হতে পারে। এলাকা হিসেবে কুতা বিচ বা লেগিয়ান বিচের আশপাশেই হোটেল নির্বাচন করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

 

কী খাবেন

বালিতে ইন্দোনেশিয়ার লোকাল খাবার নাসি গোরেন, নাসি আয়াম, মি আয়াম খেতে পারেন। দাম পড়বে ৩০ হাজার রুপিয়া থেকে শুরু করে ৬০ হাজার রুপিয়া। এ ছাড়া ম্যাকডোনালডস, কেএফসি, বারগার কিং তো আছেই। দামও বেশ কম। আর সি-ফুড লাভারসদের জন্য তো এ এক স্বর্গরাজ্য। কম খরচে অনেক রকম সি-ফুড খেতে পারবেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads