• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪২৯
অপূর্ব সৌন্দর্যময় শ্রীমঙ্গলের ‘কাশবন’

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

ভ্রমণ

অপূর্ব সৌন্দর্যময় শ্রীমঙ্গলের ‘কাশবন’

  • আতাউর রহমান কাজল
  • প্রকাশিত ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০

ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। আমাদের দেশে দুই মাস পর পর ঋতু পরিবর্তন হয়। এখন চলছে আশ্বিন। শরৎকাল। প্রকৃতিতে যখন শরৎকাল আসে তখন শরৎ এর আগমনী বার্তা জানিয়ে দেয় ‘কাশফুল’। শরৎ ঋতুতে ধবধবে সাদা রঙের কাশফুল ফুটে। কাশফুলের শুভ্রতাই আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় শরৎ এসেছে। এ সময় দিগন্তজোড়া প্রান্তরে কাশফুলের মনোরম দৃশ্য চোখে পড়ে।

শরৎকাল মানেই শুভ্রতার ঋতু। শরৎ মানেই নদীর তীরে, বালুচরে, গ্রামের উঁচু কোন জায়গায় কাশফুলের সাদা হাসি। আদি নিবাস রোমানিয়ায় হলেও আমাদের দেশে নদীর তীর, পুকুর পাড় কিংবা বালুচরসহ গ্রামাঞ্চলে কাশবন দেখা যেত। এই জায়গাগুলোতে অর্থাৎ নদীর ধারে কিংবা বালুচরে চিরচেনা সেই দৃশ্য এখন আর খুব একটা চোখে পড়ে না। কালচক্রে হারিয়ে যাচ্ছে কাশবন।

তবে শ্রীমঙ্গল-ভানুগাছ সড়কের পাশে চা গবেষণা কেন্দ্রে যাবার আগে টার্নিং পয়েন্টে ভুরভুরিয়া ছড়ার (পাহাড়ি নদী) দু'পাশে রয়েছে কাশবন। ফুটেছে প্রচুর কাশফুল। দেখলে মন-প্রাণ জুড়িয়ে যায়।

দু'পাশে সারি সারি চা-বাগান। মাঝ দিয়ে চলে গেছে আঁকা-বাঁকা পীচঢালা পথ। শ্রীমঙ্গল শহরের জিরো পয়েন্ট থেকে এ পথে প্রায় দেড়-দুই কিলোমিটার পথ পাড়ি দিলেই চোখ পড়বে কাশবনে। ১৫/২০ মিনিটের মধ্যেই পৌছা যায় কাশবনে। রিক্সা, অটোরিক্সা বা সিএনজি অটোরিক্সায় ২৫/৩০ টাকা থেকে ৭০/৮০ টাকা ভাড়ায় পৌছা যায় কাশবনে।

আকাশে নরম তুলার মতো, শুভ্র মেঘের মতো ভেসে বেড়াতে না পারলেও কাশফুলের জগতে ঘুরে বেড়াতে পারেন, পারেন সাদা ধবধবে কাশবনে হারিয়ে যেতে। শহুরে ব্যস্ত জীবন আর কোলাহলময় যান্ত্রিক জীবন থেকে কিছুক্ষণের জন্য হলেও কাশফুলের বিস্তৃর্ন প্রান্তরে ঘুরতে বা বেড়াতে যেতে পারেন। কাশফুলের শুভ্রতায় ঘুরে বেড়াতে পারেন শ্রীমঙ্গলের ভুরভুরিয়া ছড়ার দু'পাশে অপূর্ব সৌন্দর্যমণ্ডিত কাশবনে। হারিয়ে যেতে পারেন কিছুক্ষনের জন্য হলেও ধবধবে সাদা কাশফুলের বনে। ইচ্ছে করলে আপনি ছড়াটির হাটু পানি পেড়িয়ে ওপারেও যেতে পারেন। ছড়ার দুই পাশে ফুটে থাকা কাশফুল আপনার মনকে কিছু সময়ের জন্য হলেও নিয়ে যাবে কল্পনার রাজ্যে। কাশবনের মাঝে ছড়ার বালুময় পরিবেশ আপনাকে মুগ্ধ করবেই।

সেপ্টেম্বরের শুরু থেকেই এখানে দর্শনার্থীদের আগমন শুরু হয়েছে। বিশেষ করে প্রতিদিন বিকেলে কাশবনে দর্শনার্থীদের আসা-যাওয়া শুরু হয়। তাছাড়া ছুটির দিনগুলোতে দর্শনার্থীদের আগমন ঘটে বেশি। চলে সেলফি তোলার প্রতিযোগিতা। বাড়তি পাওনা হিসেবে চা-বাগানের স্নিগ্ধতা আর সবুজ-শ্যামল পরিবেশ অন্যদিকে পাহাড়ি ছড়ার হিমেল হাওয়া আলোড়িত করবে আপনাকে।

কাশবনের অপরুপ সৌন্দর্য দেখার পাশাপাশি আপনি চা-বাগানে চা-কন্যাদের দু'টি পাতা একটি কুঁড়ি চয়নের দৃশ্যও উপভোগ করতে পারেন। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে বানরসহ নানা জীবজন্তুরও দেখা পেয়ে যেতে পারেন।

কাশবনে দেখা হয় সিলেটের বালাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের অধ্যাপক অবিনাশ আচার্যের সাথে। তিনি দুই পুত্র আর স্ত্রীকে নিয়ে এসেছেন কাশবন দেখতে। অবিনাশ আচার্য বললেন, ‘সাদা মেঘদল’ নীল আকাশকে আচ্ছন্ন করে আর থেমে থেমে বৃষ্টি নামে। প্রকৃতি যেনো নিজেকে  ভিজিয়ে দেয় পরম আদরে। অঝোর বৃষ্টির পর আকাশ আরও নীল হয়। তখন ভেতরটা আবেশে নেচে ওঠে। করোনার এই কঠিন  সময়ে অনেকটা গৃহবন্দী মন একটু সুযোগ কাছেপিঠে একটু কাশফুলের নরম ছোঁয়া পেতে ছুটে যায়। ফেসবুকের মাধ্যমে আমরা  এসব ছবি দেখে আপ্লুত হই'।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads