• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
বাণিজ্য ঘাটতি প্রায় ২ হাজার কোটি ডলার

সংগৃহীত ছবি

আমদানি-রফতানি

বাণিজ্য ঘাটতি প্রায় ২ হাজার কোটি ডলার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৫ জুলাই ২০২১

সদ্য বিদায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই থেকে মে) আমদানির পেছনে দেশের ব্যয় হয়েছে ৫ হাজার ৪২৩ কোটি ডলার। একই সময়ে দেশের রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৩ হাজার ৪৩৮ কোটি ডলার। সে হিসাবে গত অর্থবছরের ১১ মাসে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯৮৪ কোটি ডলার।

দেশে রপ্তানির তুলনায় আমদানির প্রয়োজনীয়তা বেশি থাকায় বরাবরই বাণিজ্য ঘাটতি থাকে। এর আগের অর্থবছরের (২০১৯-২০২০) একই সময়ে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৬০৬ কোটি টাকা। সেই হিসেবে সমান সময়ে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে ৩৭৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন সূত্রে এ চিত্র উঠে এসেছে।

প্রাপ্ততথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আলোচিত সময়ে পণ্য বাণিজ্য ঘাটতি বাড়লেও সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতি কিছুটা নিম্নমুখী। গত ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ২৩৪ কোটি ডলার। আর সদ্য বিদায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই-মে সময়ে সেবা খাতে বাংলাদেশের ব্যয় হয়েছে ২৩০ কোটি ডলার। অর্থাৎ সেবা খাতে বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে ৪ কোটি ডলার। দেশের বাইরে ভ্রমণ, চিকিৎসা ব্যয়, উচ্চ শিক্ষার ব্যয়সহ বিভিন্ন ধরনের ব্যয়কে সেবা খাতের বাণিজ্যের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বাণিজ্য ঘাটতি বাড়তে থাকায় দেশের চলতি হিসাবে ঘাটতি আগের মাসের তুলনায় বেশ কিছুটা বেড়েছে। তবে আগের অর্থবছরের একই সময়ে চলতি হিসাবে ঘাটতি আরও বেশি ছিল।

২০২০-২১ অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) চলতি হিসাবে ১৮৪ কোটি ৮০ লাখ ডলারের ঘাটতিতে পড়ে দেশ। গত এপ্রিলে এ ঘাটতি ছিল ৯৭ কোটি ডলার। তবে এর আগের অর্থবছরের জুলাই-মে সময়ে ৪৪৩ কোটি ৪০ লাখ ডলারের ঘাটতি ছিল। সেই দিক দিয়ে বিদায়ী বছরে চলতি হিসাব ব্যবস্থাপনা তুলনামূলক স্বস্তিদায়ক ছিল।

চলতি হিসাবে বিদেশ থেকে যে পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা আসে এবং সেখান থেকে বিদেশে চলে যাওয়া অংশটুকু বাদ দিয়ে ব্যালান্স হিসাব করা হয়। এক্ষেত্রে রেমিট্যান্স, প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগসহ (এফডিআই) অন্যান্য উৎসের লেনদেন হিসাব-নিকাশ করে সার্বিক হিসাব প্রস্তুত করা হয়। গত মে মাস পর্যন্ত সার্বিক হিসাবে দেশের ব্যালান্স ছিল ৮৫১ কোটি ডলার। এর আগের অর্থবছরে এই ব্যালান্স ছিল ১৩৯ কোটি ডলার।

সার্বিক হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকার অর্থ হলো দেশকে বৈদেশিক লেনদেনের জন্য কোনো ব্যয় করতে হচ্ছে না। এখানে ঘাটতি থাকলে তা বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ থেকে কর্তন করে পূরণ করতে হয়। আর উদ্বৃত্ত থাকলে তা রিজার্ভে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে বিদেশি মুদ্রার প্রবাহ ভালো থাকায় সার্বিক হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকছে এবং রিজার্ভও বাড়ছে।

গত ২৯ জুন বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ প্রথমবারের মতো ৪৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। গত বছরের মার্চের পর থেকেই রিজার্ভ বাড়ছে। তখন রিজার্ভ ছিল ৩২ বিলিয়ন ডলার। বিদায়ী অর্থবছরের ১ জুলাই থেকে ২৮ জুন পর্যন্ত ২ হাজার ৪৫৮ কোটি ৯০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। যা এর আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৬ দশমিক ৪০ শতাংশ বেশি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, দেশের তৈরি পোশাক খাত রপ্তানির প্রায় ৮৪ শতাংশ অবদান রাখলেও এ খাতের ৬৪-৬৫ শতাংশ কাঁচামাল বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। আর গত বছর রপ্তানির তুলনায় আমদানির প্রবণতা বেশি ছিল। আর এ কারণেই চলতি বছরে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads