• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
বছরে ২০০ কোটি টাকা আয়বঞ্চিত হচ্ছে দেশ

প্রতীকী ছবি

রাজস্ব

বছরে ২০০ কোটি টাকা আয়বঞ্চিত হচ্ছে দেশ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০

ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে বঙ্গোপসাগরের নতুন সমুদ্রসীমা অর্জিত হলেও আকাশসীমার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি বাংলাদেশ। ফলে ওই এলাকার আকাশসীমায় চলাচলকারী আন্তর্জাতিক ফ্লাইট থেকে কোনো ধরনের ওভার ফ্লাইং চার্জ আদায় করা যাচ্ছে না। এতে প্রতি বছর ২০০ কোটি টাকার বেশি ওভার ফ্লাইং চার্জ আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বাংলাদেশ।

বর্তমান রাডারসহ এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট (এটিএম) সিস্টেমে এই আকাশসীমায় চলাচলকারী উড়োজাহাজগুলো শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে বঙ্গোপসাগরের ওই অঞ্চল দিয়ে যেসব উড়োজাহাজ চলাচল করে সেগুলোর কাছ থেকে চার্জ আদায়ও করা যাচ্ছে না। কষ্টের বিষয় এখনো সমুদ্রের আকাশসীমায় ওভার ফ্লাইং চার্জ বা আর্থিক সুবিধা আদায় করছে ভারত ও মিয়ানমার।

সূত্র বলছে, ভারত ও মিয়ানমারের কাছ থেকে সমুদ্রের আকাশসীমার নিয়ন্ত্রণ পেতে তৎপরতা শুরু করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এজন্য নতুন রাডার স্থাপনসহ অটোমেটেড এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট চালু করবে সংস্থাটি। এ ছাড়া ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশনের (আইকাও) মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান হবে। তথ্যমতে, বিরোধপূর্ণ সমুদ্রসীমা ফিরে পেতে আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতের দ্বারস্থ হয় বাংলাদেশ। ২০১২ সালে আন্তর্জাতিক সালিশি আদালত মিয়ানমারের সঙ্গে ৮০ হাজার বর্গকিলোমিটারের বিরোধ নিষ্পত্তি করে বাংলাদেশকে ৭০ হাজার বর্গকিলোমিটার সমুদ্রসীমার মালিকানা দেয়। অন্যদিকে, ২০১৪ সালে ভারতের সঙ্গে ২৫ হাজার বর্গকিলোমিটারের বিরোধ নিষ্পত্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ ১৯ হাজার বর্গকিলোমিটারের নিয়ন্ত্রণ অর্জন করে।

বেবিচক সূত্র জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরের নতুন সমুদ্রসীমা অর্জিত হলেও সেখানকার এয়ার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতা নেই বেবিচকের। ঢাকায় থাকা বেবিচকের রাডারটি ২০০ নটিক্যাল মাইল ও চট্টগ্রামে থাকা রাডারটি ২৫০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত নেভিগেশন করতে সক্ষম। এ কারণে ওই এলাকার আকাশসীমায় চলাচলকারী আন্তর্জাতিক ফ্লাইট থেকে কোনো ধরনের ওভার ফ্লাইং চার্জ আদায় করা যাচ্ছে না।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বঙ্গোপসাগরে নতুন করে মালিকানা পাওয়া সমুদ্রসীমার আকাশে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারলে ওভার ফ্লাইং ফ্লাইট থেকে বছরে ২০০ কোটি টাকারও বেশি আয় করা সম্ভব হবে।

বেবিচকের এক কর্মকর্তা জানান, যে কোনো দেশের ওপর দিয়ে চলাচলকারী ফ্লাইটগুলোকে নেভিগেশন সুবিধা দিতে হয় সংশ্লিষ্ট দেশকে। সমুদ্রসীমা জয়ের পর বাংলাদেশ ওই এলাকার আকাশসীমায় নেভিগেশন সুবিধা আদায়ের সক্ষমতা অর্জন করতে পারেনি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই আগে থেকে যেসব দেশ নেভিগেশন সুবিধা নিত, এখনো তারাই তা নিচ্ছে।

বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের আকাশসীমায় বেশকিছু রুট আছে, যা অন্য দেশ নিয়ন্ত্রণ করছে। যেহেতু আমাদের সক্ষমতা বাড়ছে, আমরা এ রুটগুলো নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আনব। আইকাওয়ের অনুমোদন নিয়ে এখানে নেভিগেশন পরিচালনা করব। রুটগুলো নিয়ন্ত্রণে চলে এলে রাজস্ব আয়ও বাড়বে।’

উল্লেখ্য, ২০১২ সালে মিয়ানমারের সঙ্গে এবং ২০১৪ সালে ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা সংক্রান্ত মামলা আন্তর্জাতিক আদালতে নিষ্পত্তি হয়। মিয়ানমারের সঙ্গে মামলার রায়ে বাংলাদেশ ৭০ হাজার বর্গকিলোমিটার সমুদ্রসীমার ওপর কর্তৃত্ব অর্জন করে। ভারতের সঙ্গে মামলার রায়ে সাগরে ১৯ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকার নিয়ন্ত্রণ পায় বাংলাদেশ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads