চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকার একটি কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ আগুনে মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলছে। সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, মৃতের সংখ্যা ৪৩ জনে দাঁড়িয়েছে। তাদের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের সাত কর্মীও রয়েছেন।
সীতাকুণ্ডের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহাদাত হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আগুনে দগ্ধ ও আহত হয়েছে শতাধিক মানুষ। তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক ও চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত আলাউদ্দিন তালুকদার জানান, নিহতদের মধ্যে ২৫ জনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। বাকিদের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
বি এম কনটেইনার ডিপোর আগুন এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট। চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের বিভিন্ন ইউনিটের সঙ্গে যোগ দিয়েছে নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর থেকে আসা কয়েকটি ইউনিট।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক। তিনি কৌশল নির্ধারণে ফায়ার ফাইটারদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন জানিয়েছেন, আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচ কর্মী নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ২১ জন। আহতরা সিএমএইচে চিকিৎসাধীন। কয়েকজন কর্মীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
অগ্নিকাণ্ডে নিহত ফায়ার সার্ভিসের কর্মীর মধ্যে একজনের নাম মনিরুজ্জামান (৩২)। অন্যদের নাম জানা যায়নি। নিহতদের মধ্যে আরও চার জনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন—মোমিনুল হক, মহিউদ্দিন, হাবিবুর রহমান ও রবিউল আলম।
চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক নিউটন দাশ বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিসের সব ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। এখনও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। তবে তীব্রতা কিছুটা কমেছে। এরই মধ্যে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সেই সঙ্গে পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এ জন্য আমরা নিরাপদে অবস্থান করছি। পানির ব্যবস্থা করে আবারও উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করা হবে।’
এদিকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা মো. আলমগীর জানান, কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে হতাহতদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ডিপোতে আমদানি-রফতানির বিভিন্ন মালামালবাহী কনটেইনার ছিল। ডিপোর কনটেইনারে রাসায়নিক ছিল, বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। দ্রুত চারদিকে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় হতাহত হয়েছে বেশি। আহতদের উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের খুদেবার্তায় জানানো হয়, আগুনে প্রাণ হারানো বাহিনীর সাতজনের মধ্যে মনিরুজ্জামান নামের একজনের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে। তিনি কুমিরা ফায়ার স্টেশনে নার্সিং অ্যাটেনডেন্ট ছিলেন।