• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
 বৈরুতের স্মৃতি ফেরালো সীতাকুণ্ড!

সংগৃহীত ছবি

দুর্ঘটনা

বিএম কন্টেইনার ডিপো ট্র্যাজেডি

বৈরুতের স্মৃতি ফেরালো সীতাকুণ্ড!

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৭ জুন ২০২২

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কনটেইনার বোঝাই রাসায়নিক বিস্ফোরণ যেন মনে করিয়ে দিল লেবাননের বৈরুতের ভয়াবহ স্মৃতি। লেবাননের অর্থনীতি ধসিয়ে দেয়া সেই বিস্ফোরণের পর বন্দরে রাসায়নিকের মজুত নিয়ে সতর্কতা বাড়ে সারা বিশ্বেই। অথচ চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে রাখা হয় ঝুঁকিপূর্ণ রাসায়নিক। ২০২০ সালের ৪ আগস্ট। হঠাৎ করেই নজিরবিহীন বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে লেবাননের বৈরুত বন্দর। এতোটাই শক্তিশালী বিস্ফোরণ যে, কয়েক মাইল দূরেও ভেঙে পড়ে ঘরবাড়ি। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় দেশটির রাজধানীর বিশাল এলাকা।
সারা বিশ্বকে নাড়া দেয়া বৈরুতের সেই ভয়াবহতার সাথে খুব একটা পার্থক্য নেই সীতাকুণ্ডের কনটেইনার ডিপোর অগ্নিকাণ্ডের। গত শনিবার রাত ১০টার দিকে হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয় রাসায়নিক বোঝাই কনটেইনার। ধসে পড়ে ডিপোর শেড, বহুদূরে ছিটকে পড়ে কনটেইনারের ভগ্নাংশ। ৫ কিলোমিটার দূরেও টের পাওয়া যায় বিস্ফোরণের ধাক্কা। ভেঙে পড়ে বহু ভবনের জানালা-দরজা। ডিপোর গা ঘেঁষে লোকালয় থাকলে পরিস্থিতি কী হতো, তা চিন্তাও করা যায় না।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য আর প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে জানা যায়, সীতাকুণ্ডে ভয়াবহতার মূল কারণ রাসায়নিক দ্রব্য। অনুমতি না নিয়ে কিংবা প্রশাসনকে না জানিয়েই কনটেইনার বোঝাই হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড রাখা হয় ওই ডিপোতে। আগুনের তাপে ভয়ংকর বোমার শক্তি নিয়ে বিস্ফোরিত হয় এ রাসায়নিক।

বৈরুত দুর্ঘটনায় প্রাণ যায় দুই শতাধিক মানুষের। লেবাননের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ছাড়ায় দেড় হাজার কোটি মার্কিন ডলার। ওই দুর্ঘটনার পরই আলোচনায় আসে বন্দরে রাসায়নিকের মজুত বিষয়টি। তদন্তে উঠে আসে, অবৈধভাবে বৈরুত বন্দরে মজুদ করে রাখা হয়েছিলে প্রায় ৩ হাজার টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট। পরমাণু বোমার শক্তি নিয়ে বিস্ফোরিত হয় এসব রাসায়নিক।

বৈরুতের ঘটনার পর বন্দরের কাছাকাছি রাসায়নিক মজুত নিয়ে কড়াকড়ি আরোপ করে বিভিন্ন দেশ। তবে রাসায়নিক মজুত নিয়ে এখানে কোন কড়াকড়ি আরোপ করা হয়নি। ফলে লেবাননের ওই ভয়াবহতার মাত্র দু’বছর না যেতেই রাসায়নিক কন্টেইনারের বিস্ফোরণ দেখতে হলো বাংলাদেশকে।

৪৫ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে : গত শনিবার রাতে লাগা আগুনে পরপর ১৫ থেকে ২০টি কন্টেইনারে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সে সময় প্রতিটি কন্টেইনার একেকটি শক্তিশালী বোমায় পরিণত হয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসংলগ্ন সীতাকুণ্ডের শীতলপুর এলাকায় ২৬ একর জায়গার ওপর কনটেইনার ডিপোটি অবস্থিত। এখানে সব সময় কয়েক হাজার কন্টেইনার থাকে। এসব কন্টেইনারের কোনো একটিতে বিস্ফোরণ ঘটে আগুন লেগে যায়, যা মুহূর্তের মধ্যে পুরা এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। অবশেষে প্রায় ৪৫ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিস। তবে গতকাল সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ওই এলাকাকে ঝুঁকিমুক্ত ঘোষণা করা হয়নি। রাতের মধ্যেই আগুন পুরোপুরি নেভানো যাবে বলে আশা করছে ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিস ছাড়াও কাজ করছেন সেনাবাহিনীর বিশেষজ্ঞ দল।

ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট কাজ করে। ১২টি বিশেষ গাড়ির সাহায্যে জ্বলন্ত কনটেইনারগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন পানি ছিটানো হয়। কোনো গাড়ির পানি শেষ হলে সেখানে নতুন গাড়ি পাঠানো হয়। এছাড়া নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকেও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেন। আর আগুন নেভানোর পুরো কাজের নেতৃত্ব দেন ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক ফারুক হোসেন সিকদার।

৪৯ নয়, মৃতের সংখ্যা ৪১ : আগুনের ঘটনায় হতাহতের তথ্য সংশোধন করে নিহতের সংখ্যা ৪১ জনে নামিয়ে এনেছে কর্তৃপক্ষ। গতকাল সোমবার দুপুরে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য সংশোধনের বিষয়টি জানান। তবে দুর্ঘটনাস্থলে আরও মরদেহ থাকতে পারে। কিংবা মরদেহের ছাই ভস্ম, এমনও শঙ্কা করছে ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমান বলেন, কনটেইনার ডিপোতে আগুনের ঘটনার পর কিছু মরদেহ চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়েছিল। সেখানে একবার গণনা করা হয়। আবার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও সেগুলো গণনা করা হয়। তাতে সংখ্যা বেড়ে ৪৯ হয়ে গিয়েছিল। পরে সব মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাখা হয়। সেখানে শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ৪১ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে। এ কারণে মৃতের প্রকৃত সংখ্যা ৪১। তবে এরপর আর কোনো মৃতদেহ উদ্ধার হলে তা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে রাখা হবে। আর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান সংবাদ সম্মেলনে জানান, একই মরদেহ একাধিকবার গণনা করায় মৃতের সংখ্যা বেশি হয়েছিল। এছাড়া একাধিক হাসপাতালে লাশ থাকাতেও গণনায় ভুল হয়েছিল। তারা মোট ৪১টি মরদেহ পেয়েছেন।

এর আগে রোববার জেলা প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিস এ ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ৪৯ বলে জানিয়েছিল। মোট মৃতের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের ৯ জন রয়েছে। তবে ফায়ার সার্ভিসের আরও অন্তত চার কর্মী নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজ ফায়ার ফাইটাররা হলেন মো. রবিউল ইসলাম (ফায়ার ফাইটার), ফরিদুরুজ্জামান (ফায়ার ফাইটার), শফিউল ইসলাম (ফায়ার ফাইটার), মো. ইমরান হোসেন মজুমদার (লিডার)।

এদিকে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় চট্টগ্রামে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১০২ জন। তাদের মধ্যে ১৫ জনেরই শ্বাসনালী পুড়ে গেছে, যারা আশঙ্কজনক অবস্থায় আছেন। এছাড়া ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন দুই ফায়ার সার্ভিস কর্মীসহ ১৪ জনের মধ্যে ১০ জনের অবস্থাই আশঙ্কাজনক। গতকাল সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে সীতাকুণ্ড ট্র্যাজেডিতে দগ্ধ রোগীদের শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন ডা. সামন্ত লাল সেনসহ তিন সদস্যের বিশেষজ্ঞ দল। আইসিইউতে থাকা তিন রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের দ্রুত ঢাকা নেয়ার তাগিদ দেয়া হয়।
এ সময় ড. সামন্ত লাল সেন বলেন, যদি রোগীদের আত্মীয়স্বজন রাজি হয়, তবে তাদের ঢাকা নিয়ে যেতে হবে, নিয়ে যাওয়া উচিত। কারণ, তাদের শরীর পুড়ে গেছে, শ্বাসনালী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাতে কিন্তু শ্বাস নিতে অসুবিধা হবে। বার্ন আইসিইউ গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। এখানে বার্ন আইসিইউ নেই, সাধারণ আইসিইউ। এখানকার চিকিৎসকরা সকল বার্ন রোগীরই সঠিক চিকিৎসা দিতে সক্ষম। কিন্তু এখানে সকল সুযোগ-সুবিধা নেই।

দর্শনার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা হাসপাতালে ভিড় করবেন না। একজন বার্ন রোগী কিন্তু বাংলাদেশে মারা যায় একটি কারণেই, সেটি ইনফেকশন। আর কোনোটি নয়। ইনফেকশন হলে বার্ন রোগীকে কেউ বাঁচাতে পারবে না। ইনফেকশনের কারণে পুড়ে যাওয়া একটি ক্ষত অনেক বড় হয়ে যায়।

শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ জানান, ১৪ জনের মধ্যে ৪ জন খুবই সংকটাপন্ন অবস্থায় আছেন। তাদের আইসিইউতে রাখা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন ফায়ার ফাইটারের ৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। আরেক ফায়ার ফাইটারের পুড়ে গেছে ৬৪ শতাংশ। বাকি ১০ জনের মধ্যে ৬ জনের অবস্থাই আশঙ্কাজনক। চট্টগ্রাম মেডিকেলে ভর্তিদের মধ্যে থেকে আরও ৭ থেকে ১০ জনকে ঢাকায় আনা হতে পারে। সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউট।

২২ জনের মরদেহ হস্তান্তর : অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত নিহত ৪৯ জনের মধ্যে ২২ জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল সকালে স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।

এছাড়া নিহত বাকিদের পরিচয় শনাক্তের জন্য ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করছে সিআইডির ফরেনসিক বিভাগ। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের সামনে নির্ধারিত বুথে এসব নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এজন্য সকাল থেকেই সেখানে ভিড় করছেন নিহতদের স্বজনরা। নমুনা সংগ্রহে নেতৃত্ব দিচ্ছেন চট্টগ্রাম সিআইডির অ্যাডিশনাল এসপি জাহাঙ্গীর আলম। নিখোঁজের বাবা-মা, ভাই-বোন কিংবা সন্তানদের মধ্যে যে কোনো দুজন দিতে পারছেন নমুনা। যেসব লাশ শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি, সেগুলোর সঙ্গে এসব নমুনা মিলিয়ে দেখা হবে। ডিএনএ সংগ্রহকারীরা জানিয়েছেন, ডিএনএ রিপোর্ট পেতে সময় লাগবে এক মাস কিংবা আরও বেশি।

ডিপো মালিকপক্ষের দাবি নাশকতা : বিস্ফোরণ ও আগুনের ঘটনাকে নাশকতা বলে দাবি করেছেন সীতাকুণ্ডের বেসরকারি বিএম কনটেইনার ডিপোর মালিকপক্ষ। গতকাল বিকাল ৪টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহতদের দেখতে এসে এমন দাবি জানান প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক আজিজুর রহমান।

এ সময় তিনি বলেন, ডিপোতে আট থেকে নয়শ’ কনটেইনার ছিল। কোনোটাই বিস্ফোরিত হয়নি। একটা কনটেইনারে কেন বিস্ফোরণ ঘটেছে। এখানে নাশকতার বিষয়টি স্পষ্ট।

এর আগে, রোববার (৫ জুন) রাতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় হতাহত ব্যক্তিদের পরিবারের দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দেয় ডিপোর মালিকপক্ষ। গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে স্মার্ট গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) শামসুল হায়দার সিদ্দিকী দুর্ঘটনায় মৃত প্রত্যেক ব্যক্তির পরিবারকে ১০ লাখ টাকা করে দেওয়ার কথা জানান। প্রসঙ্গত, বিএম কনটেইনার ডিপো স্মার্ট গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান।

বিবৃতি তিনি আরও উল্লেখ করেন, এ ঘটনায় আমাদের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এটা কি দুর্ঘটনা, নাকি প্রতিপক্ষ কোনও নাশকতা চালিয়েছে, সেটা তদন্ত করে দেখার জন্য সরকারের সব কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

পোশাক খাতেই ১৩শ’ কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা : ডিপোর আগুন ও বিস্ফোরণের ঘটনায় শুধু তৈরি পোশাক খাতেই প্রায় ১৩শ’ কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা করছেন শিল্প মালিকরা। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি-বিজিএমইএ’র পরিচালক খসরু চৌধুরী জানান, বিএম ডিপোতে আমদানি এবং রপ্তানির জন্য তাদের ১ হাজার ৩৪০টি মালবোঝাই কন্টেইনার ছিল। কেমিকেলের কারণে এসব কন্টেইনারের প্রায় ৮০ শতাংশের বেশি পণ্য নষ্ট হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এ সময় তদন্ত করে প্রকৃত দোষীকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান বিজিএমইএ পরিচালক। আগুনের ঘটনাটি অবহেলাজনিত নাকি পরিকল্পিত নাশকতা তা খতিয়ে দেখার তাগিদ দেন তিনি। এছাড়া অন্যান্য ডিপোরগুলোতে নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি জানান বিজিএমইএ নেতারা।
তিনি জানান, ৪ থেকে ৫শ কোটি টাকার আমদানি পণ্য সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। পাশাপাশি ডিপোর অবকাঠামো পুড়ে ক্ষতি হয়েছে এক থেকে দেড়শ’ কোটি টাকার। এই বিস্ফোরণের ঘটনায় রপ্তানি কার্যক্রম কিছুটা ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।

তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন : বিএম কন্টেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসন, চট্টগ্রাম কাস্টমস, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর রোববার তিনটি পৃথক কমিটি গঠন করেছে। আহতদের দ্রুত চিকিৎসা প্রদান ও পরিস্থিতি মোবাবিলায় স্বাস্থ্য বিষয়ক মনিটরিং কমিটি গঠন করেছে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়।

বিস্ফোরণের ঘটনায় বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়ে নয় সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। কমিটির প্রধান করা হয়েছে জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (স্থানীয় সরকার) বদিউল আলমকে।
এদিকে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের কমিশনার ফখরুল আলম অগ্নিকা্লের ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি করেছে। সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিটিকে। অন্যদিকে অগ্নিকাণ্ডজনিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় ৫ সদস্যের স্বাস্থ্য বিষয়ক মনিটরিং কমিটি গঠন করেছে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন কার্যালয়। এতে চট্টগ্রামের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আসিফ খানকে আহ্বায়ক করা হয়।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহেদ মালেক বলেছেন, এ ধরনের আগুনের মতো আর কোনো ঘটনা সরকার দেখতে চায় না। এই ঘটনায় তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গতকাল রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ব্যক্তিদের দেখতে এসে তিনি এসব কথা বলেন।
ঘটনায় নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে জাহেদ মালেক বলেন, আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম ও ঢাকার হাসপাতালগুলোকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া আছে। বার্ন ইনস্টিটিউটে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। ঢাকা থেকে একটি মেডিকেল টিম চট্টগ্রামে গেছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads