• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮

কৃষি অর্থনীতি

কাজিপুরে বিষমুক্ত বেগুন উৎপাদন করে লাভবান হচ্ছেন কৃষক

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ০১ ডিসেম্বর ২০২২

আইয়ুব আলী, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলায় ব্যাপকভাবে রাসায়নিক সারমুক্ত বেগুন চাষ হচ্ছে। এই উপজেলার মাটি বেগুন চাষের উপযোগী হওয়ায় দিন দিন এর চাষ বাড়ছে। জৈবিক বালাইনাশক ব্যবহার করে নানা রকমের বেগুন চাষ করছেন কৃষকরা। এতে কম খরচে বিষমুক্ত বেগুন উৎপাদন করে লাভবান হচ্ছেন তারা। কাজিপুর উপজেলায় এ বছর ৯০ হেক্টর জমিতে বিষমুক্ত বেগুন চাষ করা হয়েছে।
জানাগেছে, কৃষকরা রাসায়নিক বালাইনাশক ছাড়াই পরিবশেবান্ধব চাষাবাদ জৈবিক বালাইনাশক পদ্ধতিতে বেগুন আবাদ করছেন। চাষে এ পদ্ধতি প্রয়োগে বেগুন ক্ষেতকে সবসময় পরিচ্ছন্ন রাখতে হয়। এছাড়াও কৃষকরা পাখির আক্রমণ ঠেকাতে জাল ও পোকা দমনে সেক্স ফেরোমন ফাঁদ ও হলুদ ফাঁদ স্থাপন করেছেন। এ পদ্ধতিতে এক ধরনের বক্স ব্যবহার করা হয় যার দুপাশে তিন কোণা ফাঁক থাকে। পুরুষ পোকাকে আকৃষ্ট করতে স্ত্রী পোকার শরীর থেকে নি:সৃত এক রকম রাসায়নিক পদার্থ বা স্ত্রী পোকার গন্ধ ব্যবহার করা হয় এই ফাঁদে। এর ফলে পুরুষ পোকা ফাদে পড়ে মারা যায়। এটি হচ্ছে কীটপতঙ্গ দমন পদ্ধতি। এতে ফসল নিরাপদ থাকে।
কাজিপুর উপজেলার সোনামুখী গ্রামের কৃষক আব্দুল ওয়াহাব ও চারিতাডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল লতিফ বলেন, এবছর ১ বিঘা জমিতে উন্নত হাইব্রিড জাতের ইরি বেগুন, উত্তরা, সবুজ সাথী বেগুন চাষ করেছি। এছাড়াও সাথে দেশীয় থাকা, গ্রিনবল, বারী বেগুন —২, বারী বেগুন —৪, কাঁটা বেগুনও রয়েছে। এপদ্ধতিতে চাষে প্রতি একরে ১৫—২০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। যা আগের তুলনায় প্রায় ৪০ শতাংশ কম। আমাদের এই পদ্ধতিতে চাষ করা দেখে অনেকেই এইভাবে চাষ শুরু করেছেন। মহিষামুড়া গ্রামের বেগুনচাষী ওয়াহেদুল ইসলাম, আব্দুল মান্নান , পেচিবাড়ী গ্রামের হবিবর রহমান বলেন, বেগুনখেতে সেক্স ফেরামোন ফাঁদ ব্যবহার এবং পরিচ্ছন্ন পদ্ধতিতে বেগুন চাষ করছি। এই পদ্ধতিতে খরচ আগের তুলনায় অনেক কম। আর ফসল উৎপদনও বেশি হচ্ছে। আশা করছি এই পদ্ধতিতে বেগুন চাষে আগের তুলনায় দ্বিগুণ লাভবান হবো। এই পদ্ধতির চাষকে আরো ছাড়িয়ে দিতে কৃষি বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ের উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা দিলীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, সেক্সফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করায় জমির ফসল নিরাপদ থাকছে। খাদ্যমান ও পুষ্টি সঠিকভাবে পাওয়া যাবে। তাছাড়া বিষমুক্ত উৎপাদন হওয়ায় এর চাহিদার বৃদ্ধি পাচ্ছে। এত কৃষকরা লাভবান হবেন।
কাজিপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রেজাউল করিম বলেন, বেগুন একটি পুষ্টিকর ও অধিক চাহিদাপূর্ণ সবজি। যা সারাবছর আমাদের প্রয়োজন। বেগুন চাষে মূল সমস্যা হলো এর ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা। আগে এই পোকা দমনে কীটনাশক ব্যবহার করা হতো। ফলে সবজি বিষাক্ত হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পেত। এই পোকাকে রোধ করতে জৈবিক পদ্ধতি ব্যবহার ও সেক্সফেরোমন ফাঁদ ব্যবহারে পোকা থেকে বেগুনকে রক্ষা করা ও বিষ মুক্ত করে চাষ করা হচ্ছে। যার ফলে কৃষক বিষমুক্ত বেগুন উৎপাদন করতে সক্ষম হবে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads