• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
করোনা : ভারতকে সহায়তার আশ্বাস পাকিস্তান চীন ও ব্রিটেনের

সংগৃহীত ছবি

এশিয়া

করোনা : ভারতকে সহায়তার আশ্বাস পাকিস্তান চীন ও ব্রিটেনের

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ২৫ এপ্রিল ২০২১

ভারতে প্রায় দেড় মাস ধরে লাগামহীনভাবে বেড়েই চলেছে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার। দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুর হিসাবে বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে বর্তমানে শীর্ষে আছে ভারত। এমতাবস্থায় ভারতের দিকে সাহায্যের হাত বাড়াল পাকিস্তান, চীন, ব্রিটেন।

চলমান করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে থাকা ভারত সরকারকে অ্যাম্বুলেন্স ও স্বাস্থ্যকর্মী দিয়ে সহযোগিতা করার প্রস্তাব দিয়েছে পাকিস্তানের অন্যতম বৃহৎ দাতব্য সংস্থা এধি ফাউন্ডেশন। গত শুক্রবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে লেখা এক চিঠিতে এধি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী ফাইসাল এধি এই প্রস্তাব দেন। 

চিঠিতে নরেন্দ্র মোদিকে উদ্দেশ করে ফাইসাল এধি বলেন, ‘আপনাদের দেশে বর্তমানে মহামারীর যে পরিস্থিতি চলছে, তাতে আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। প্রতিবেশী ও বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে এই পরিস্থিতে সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি আমরা আপনাদের পাশে দাঁড়াতে চাই।’

কী প্রকারে সেই সহযোগিতা হতে পারে, তা ব্যাখ্যা করে ফাইসাল এধি বলেন, ‘আমরা ৫০টি অ্যাম্বুলেন্স এবং সেই অনুপাতে স্বাস্থ্যকর্মী ও করোনা চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ ভারতে পাঠাতে চাই। আমরা আপনাদের সহযোগিতা করতে চাই, কারণ ভারতে এখন করোনার যে পরিস্থিতি তা সহ্যের অতীত। পাকিস্তানে আমাদের করোনা রোগীদের সেবা দেওয়া এবং এ ধরনের পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার অভিজ্ঞতা আছে।’ করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে ভারত সরকারের অনুমতি ও পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া এধি ফাউন্ডেশনের আর কিছু চাওয়ার নেই উল্লেখ করে চিঠিতে ফাইসাল এধি লেখেন, ‘আমাদের দলের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য, জ্বালানি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী সব ব্যবস্থাই আমরা করব। আমাদের কেবল আপনার অনুমতি ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সাহায্যটুকু প্রয়োজন।’

পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় ও প্রধান দাতব্য ও মানবিক সহায়তা দানকারী সংগঠনগুলোর একটি হলো এধি ফাউন্ডেশন। দেশজুড়ে বিনা মূল্যে অ্যাম্বুলেন্স ও স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার পাশাপাশি অনাথ আশ্রম, ও বিনা মূল্যে খাদ্য বিতরণ ও শিক্ষা কার্যক্রমও পরিচালনা করে এই সংগঠনটি। পাকিস্তানের দরিদ্র মানুষের সেবায় আত্মোৎসর্গ করা আবদুল সাত্তার এধি ছিলেন এই ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা। ২০১৬ সালে সাত্তার এধির মৃত্যুর পর থেকে তার ছেলে ফাইসাল এধি সংগঠনটি পরিচালনা করছেন।

ভারতের সাম্প্রতিক করোনা পরিস্থিতিতে পাকিস্তান কিছুটা হলেও তার বৈরী অবস্থান থেকে সরে এসেছে বলে মনে করছেন উপমহাদেশের আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশেষজ্ঞরা। কারণ, কেবল এধি ফাউন্ডেশনই নয়, চলমান করোনা পরিস্থিতিতে গোটা পাকিস্তানই কার্যত ভারতের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে। এমনকি দেশটির অনেকে নাগরিক এই কঠিন সময়ে ভারতকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বরাবর আরজিও জানিয়েছেন। টুইটারসহ সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক সাধারণ পাকিস্তান নাগরিককেই ভারতের জন্য প্রার্থনা করার আহ্বান জানিয়ে বিভিন্ন বক্তব্য ও ছবি পোস্ট করেছেন। ভারত-চীনের লাদাখ সীমান্ত দ্বন্দ্বে ভারত-চীন সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল। এই পরিস্থিতিতে ভারতকে করোনা প্রতিরোধে সাহায্য করতে হাত বাড়িয়ে দিল চীন। দেশটির কী কী সহযোগিতা প্রয়োজন তা জানতে চেয়েছে। চীনের পক্ষে বলা হয়, কোভিড-১৯ অতিমারির এক ভয়াবহ দ্বিতীয় ঢেউয়ের মুখোমুখি ভারত। এই পরিস্থিতিতে ভারতকে মহামারি প্রতিরোধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ করতে প্রস্তুত চীন। চীন উপলব্ধি করছে, কোভিড-১৯ মহামারী সমস্ত মানব জাতির শত্রু। এর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ হওয়া দরকার। বর্তমানে ভারতে চিকিৎসার সরঞ্জাম এবং করোনা রোধে ব্যবহূত বিভিন্ন জিনিসের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এই আবহে চীন ভারতকে সাহায্য করতে প্রস্তুত। দিল্লির সরকারি সূত্র জানিয়েছে, গত বৃহস্পতবারই চীনে ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে দেশটির সরকার। ভারতের কী কী সহযোগিতা প্রয়োজন জানতে চেয়েছে চীনের সরকার। এর আগে ২০২০ সালে ভারত চীনকে নামমাত্র দামের বিনিময়ে ১৫ টন মেডিকেল সরঞ্জাম পাঠিয়েছিল। এক লাখ সার্জিক্যাল মাস্ক, পাঁচ লাখ জোড়া সার্জিক্যাল গ্লাভস, ৭৫টি ইনফিউশন পাম্প, ৩০টি এন্টেরাল ফিডিং পাম্প, ২১টি ডেফিব্রিলেটর এবং চার হাজার এন ৯৫ মাস্ক পাঠানো হয়েছিল চীনে।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত ভারতকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে ব্রিটেন। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, তার দেশ ভারতকে সব রকম সাহায্য করতে প্রস্তুত। গত শুক্রবার ব্রিটেনের ডার্বিশায়ারে স্থানীয় এক নির্বাচনি প্রচার সভায় গিয়েছিলেন বরিস জনসন। সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘ভারতের পরিস্থিতি ক্রমেই উদ্বেগজনক হচ্ছে। আমরা ভারতকে সব রকম সাহায্য করতে চাই। ভারতের জনগণের সহায়তার জন্য কী করতে পারি সে বিষয়ে ভাবছি। অবশ্য এই সহায়তা ভেন্টিলেটর বা চিকিৎসা ক্ষেত্রে সহায়তা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads