• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
হুড়োহুড়িতে কাবুল বিমানবন্দরে নিহত ৭

সংগৃহীত ছবি

এশিয়া

হুড়োহুড়িতে কাবুল বিমানবন্দরে নিহত ৭

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ২৩ আগস্ট ২০২১

আফগানিস্তানের কাবুল বিমানবন্দরে আতঙ্কে হুড়োহুড়ি ও পদদলিত হয়ে সাত আফগান নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী। গতকাল রোববার তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে জানানো হয় সংবাদমাধ্যম এপির প্রতিবেদনে।

তালেবান সশস্ত্র গোষ্ঠী আফগানিস্তানের শাসনক্ষমতা দখলের পর থেকে হাজার হাজার আফগান দেশ ছাড়তে মরিয়া হয়ে ওঠেন। তারা যে কোনো উপায়েই কাবুল বিমানবন্দরে পৌঁছান।

কাবুল বিমানবন্দরে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) আফগান শাখা হামলা চালাতে পারে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।  সেই হামলার আশঙ্কার কথার মধ্যেই হুড়োহুড়িতে এমন প্রাণহানির ঘটনা ঘটল।

অবশ্য তালেবান যোদ্ধারা এরই মধ্যে বিমানবন্দর এলাকা ঘিরে রেখেছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য দেশ তাদের নাগরিকদের সরিয়ে নিতে দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র আশঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছে, আইএস বিমানকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে পারে।

এজন্য দেশটি গত শনিবার নতুন একটি নিরাপত্তা সতর্কতা জারি করেছে। বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের নির্দেশনা ছাড়া যেন সে দেশের কোনো নাগরিক ব্যক্তিগতভাবে কাবুল বিমানবন্দরে প্রবেশ না করেন।

যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনী বরং দেশটির নাগরিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিমানবন্দরে আনার ব্যবস্থা করবে।

ব্রিটিশ সেনাবাহিনী বলেছে, রোববার যে সাতজন নিহত হয়েছেন তারা পদদলিত হয়ে ও ভিড়ের মধ্যে পড়ে মারা গেছেন। মূলত তালেবান যোদ্ধারা কাবুল বিমানবন্দরে প্রবেশে বাধা দিতে ফাঁকা গুলি ছুঁড়লে হুড়োহুড়িতে তাদের মৃত্যু হয়।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, বিমানবন্দরের অবস্থা এখন খুব চ্যালেঞ্জিং। এটা ভালো অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সেনারা কাজ করছেন। তারা বিশ্বাসী, বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা তারা দ্রুতই ফিরিয়ে আনবেন।’

আফগানিস্তানের সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী তালেবান গত ১৫ আগস্ট রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয়। এরপর থেকেই সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নাগরিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে নিতে অভিযান শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশ। তাদের সঙ্গে যে কোনোভাবে বিমানে উঠতে মরিয়া হাজারো আফগান পরিবার।

এ অবস্থায় গত রোববার থেকে বিমানবন্দরটিতে বিশৃঙ্খলার মধ্যে প্রাণ গেছে কমপক্ষে ১২ জনের। কয়েকজন ভিড়ে পদদলিত হয়ে এবং কয়েকজন গোলাগুলিতে নিহত হয়েছেন।

দুই দশক আগে প্রথম দফায় আফগানিস্তানের ক্ষমতায় থাকাকালীন মানবাধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপক অভিযোগ ছিল ধর্মভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবানের বিরুদ্ধে। দেশ দখলের পর সুন্নি মুসলিম সংগঠনটি আবারো কঠোর শরিয়াহ আইন চালু করতে পারে বলে শঙ্কা ঘনিয়ে উঠছে।

এ অবস্থায় শনিবার পর্যন্ত সাত দিনে আফগানসহ বিভিন্ন দেশের ১৭ হাজার মানুষকে কাবুল বিমানবন্দর হয়ে আফগানিস্তান থেকে বের করা হয়েছে। এদের মধ্যে আমেরিকান নাগরিক প্রায় আড়াই হাজার।

ভিড়ের কারণে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের হাজারো কূটনীতিক ও নাগরিকদের উদ্ধার কার্যক্রম চরম ব্যাহত হচ্ছে। ফ্লাইটে চড়ে দেশ ছাড়তে কংক্রিটের দেয়াল আর কাঁটাতারের বেড়া বেয়ে বিমানবন্দরে প্রবেশ করছিল হাজারো আফগান মা-বাবা, সন্তান।

অরাজক পরিস্থিতির কারণে শুক্রবার প্রায় ছয় ঘণ্টা বন্ধ ছিল বিমানবন্দরের কার্যক্রম। শনিবারও একটি চার্টার ফ্লাইট স্থগিত করতে বাধ্য হয় সুইজারল্যান্ড।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads