• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮

ব্যাংক

৪৫ বিলিয়নের মাইলফলকে রিজার্ভ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৯ এপ্রিল ২০২১

মহামারী কারোনার মধ্যেও বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়ন (রিজার্ভ) ৪৫ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক ছুঁতে চলেছে। গতকাল বুধবার দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪৪ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার, যা আগের যে-কোনো সময়ের চেয়ে বেশি।

অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক শিগগিরই ৪৫ বিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম। গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, সামনে ঈদ। সবসময় ঈদের আগে প্রবাসীরা বেশি করে রেমিট্যান্স দেশে পাঠান। এবারো প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাদের আত্মীয়স্বজনদের জন্য স্বাচ্ছন্দ্যে ঈদ উদ্যাপন করতে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। মূলত প্রবাসীদের রেমিট্যান্সের ওপর ভর করেই রিজার্ভ বাড়ছে।

সব‌শেষ তথ্য অনুযায়ী, ২৮ এপ্রিল দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ ৪৪.৮৫ বিলিয়ন বা চার হাজার ৪৮৫ কোটি ডলার ছাড়ি‌য়ে‌ছে। বাংলা‌দে‌শি মুদ্রায় যার প‌রিমাণ তিন লাখ ৮১ হাজার কো‌টি টাকা (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধরে)। প্রতি মাসে চার বিলিয়ন ডলার আমদানি ব্যয় হিসেবে মজুত এ বৈদেশিক মুদ্রা দিয়ে প্রায় ১১ মাসের বে‌শি আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।

চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়া‌রি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ ৪৪.০২ বিলিয়ন বা চার হাজার ৪০২ কোটি ডলার ছাড়ি‌য়ে‌ছিল। এরও আগে ৩০ ডিসেম্বর দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ ৪৩ বিলিয়ন ডলার, ১৫ ডিসেম্বর ৪২ মি‌লিয়ন এবং ২৮ অক্টোবর রিজার্ভ ৪১ বিলিয়ন অতিক্রম করেছিল।

আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রার মজুত থাকতে হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখন বৈধ পথে রেমিট্যান্স আসছে। রপ্তা‌নিও বে‌ড়ে‌ছে। এ ছাড়া আমদানি ব্যয়ের চাপ কম, দাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ ও জাইকার বৈদেশিক ঋণ সহায়তা ও বিশ্ব সংস্থার অনুদানের কারণে রিজার্ভ বেড়েছে। ত‌বে সাম‌নে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) বিল প‌রি‌শোধ কর‌লে রিজার্ভ আবার কিছুটা ক‌মে যা‌বে।

বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা, ইরান ও মালদ্বীপ-এই ৯টি দেশ বর্তমানে আকুর সদস্য। এ দেশগুলো থেকে বাংলাদেশ যেসব পণ্য আমদানি করে এর বিল দুই মাস পর পর আকুর মাধ্যমে পরিশোধ ক‌রে থা‌কে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সূত্রে জানা গেছে, করোনা মহামারীর মধ্যেও চলতি অর্থবছরের ১০ মাস পার না হতেই রেমিট্যান্স দুই হাজার কোটি (২০ বিলিয়ন) ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে। এর আগে কোনো অর্থবছরে এত পরিমাণ রেমিট্যান্স আসেনি বাংলাদেশে। এর আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে এক হাজার ৮২০ কোটি ডলার বা ১৮ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলের প্রবাসীরা। অর্থবছর হিসাবে যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স আহরণের রেকর্ড হয়। ওই সময় এক হাজার ৬৪২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসে দেশে।

২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে দুই শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। অর্থাৎ কোনো প্রবাসী ১০০ টাকা দেশে পাঠালে এর সঙ্গে আরো দুই টাকা যোগ করে মোট ১০২ টাকা পাচ্ছেন সুবিধাভোগী। এ ছাড়া ঈদ ও উৎসবে বিভিন্ন ব্যাংক এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান সরকারের প্রণোদনার সঙ্গে বাড়তি এক শতাংশ দেওয়ার অফার দিচ্ছে। এতে করে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহী হচ্ছেন প্রবাসীরা।  

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads