• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
মানুষের বাঁচার কোনো সীমা নেই

মানুষ আসলে কত দিন বাঁচবে তার কোনো নির্ধারিত সময় নেই

ছবি সংরক্ষিত

জীব বিজ্ঞান

মানুষের বাঁচার কোনো সীমা নেই

  • আসিফ খান
  • প্রকাশিত ০১ জুলাই ২০১৮

জন্ম নিলে মরতে হবে, এটাই চিরন্তন সত্য। কিন্তু জন্মের ঠিক কত দিন পর মানুষ মারা যায়? না এই প্রশ্নের কোনো জবাব জানা নেই। ধর্মীয় সৃষ্টিতত্ত্ব কিংবা বিজ্ঞান কেউই এখনো বলতে পারে না একজন মানুষ কখন মারা যাবে। তবে একটি দেশের মানুষ গড়ে কত দিন করে বাঁচতে পারে তার একটা হিসাব করা হয়। এই হিসাবকে বলা হয় সেই দেশের মানুষের গড় আয়ু। এক সময় জাপানিদের গড় আয়ু সবচেয়ে বেশি হলেও এখন সবচেয়ে বেশি প্রত্যাশিত গড় আয়ু কোরিয়ানদের। দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিকদের প্রত্যাশিত গড় আয়ু এখন ৯০ বছর। সম্প্রতি বাংলাদেশের মানুষেরও প্রত্যাশিত গড় আয়ু বেড়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ‘স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিস্টিকস’ জরিপ অনুযায়ী ২০১৬-এর তুলন অনুযায়ী ২০১৭-তে বাংলাদেশে মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে প্রায় চার মাস। ২০১৬-তে যেখানে গড় আয়ু ছিল ৭১.৬ বছর, ২০১৭-তে তা বেড়ে হয়েছে ৭২ বছরে। কোরিয়া বা বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধির কিছু কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, বর্ধনশীল অর্থনীতি, স্বাস্থ্যসেবায় প্রচুর সুযোগ, নিম্ন রক্তচাপ, শিশুমৃত্যুর হার কমা ও খাদ্যাভ্যাসের কারণে মানুষের গড় আয়ু বাড়ে।

কিন্তু গড় আয়ু বাড়লেও বাংলাদেশ বা কোরিয়ার একজন নাগরিক কি ৭২ বা ৯০ বছর বয়সেই মারা যাবে? না তেমনটি হয় না। বাংলাদেশেও এখনো শতাধিক শতায়ু মানুষ রয়েছেন। ইউরোপের দেশ ইতালিতে এই সংখ্যা আরো বেশি। সেখানে হাজার হাজার মানুষের বয়স ১০০ বছরের বেশি।

ইতালির সেইসব বয়স্ক মানুষের ওপর পরিচালিত এক গবেষণা উন্মোচন করেছে এই তথ্য। বৃহস্পতিবার ন্যাচার ডটকমে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত এক নিবন্ধে দাবি করা হয়েছে, মানুষ আসলে কত দিন বাঁচবে তার কোনো সীমা নেই। তবে প্রতিটি মানুষের জন্মের পর থেকেই প্রতি বছরের মৃত্যুর ঝুঁকি ৫০ অনুপাত ৫০ থাকে বলে গবেষণায় দেখা গেছে।

ইতালির সেপিয়েঞ্জা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনমিতির অধ্যাপক এলিসাবেত্তা বারবি ও রোম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্রান্সিসকো ল্যাগোনা গবেষণাটির নেতৃত্ব দেন। তারা বলেন, মানুষের মৃত্যুর আসলে কোনো নির্ধারিত সময় নেই। অন্য কথায় মানুষ আসলে কত দিন বাঁচবে তার কোনো নির্ধারিত সময় নেই। বরং কারো বয়স শত বছর পেরিয়ে গেলে তার মৃত্যুঝুঁকি ৫০ অনুপাত ৫০ থাকে না। সেটা আরো কমে যায়।

যেমন জাপানের চিয়ো মিয়াকো নামের এক নারীর বয়স এখন ১১৭ বছর। কিন্তু তিনি এখন দিব্যি ভালো আছেন। কবে মারা যাবেন তা কেউ জানে না। গবেষকদের আশা তিনি আরো বাঁচবেন অনেক দিন।

এর আগে ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের এক দল গবেষক তাদের গবেষণায় জানিয়েছিলেন, মানুষ সর্বোচ্চ ১১৫ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। কিন্তু তখনও ন্যাচার জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দাবি করা হয়, মানুষের মারা যাওয়ার সর্বোচ্চ বয়সসীমার বাধ্যবাধকতার কোনো দৃষ্টান্ত নেই।

সে সময় জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউটের বয়স বিশেষজ্ঞ প্রফেসর জিম ভাওপেল বলেন, সর্বোচ্চ আয়ু সংক্রান্ত তথ্যপ্রমাণ বলে, এর কোনো ধরাবাঁধা সীমা নেই। বর্তমানে যেসব প্রমাণ রয়েছে তা বলে, যদি বেঁচে থাকার কোনো বয়সসীমা থাকে তা হলো ১২০ বছরের ওপর, এটা আরো বেশিও হতে পারে। আর সম্ভবত বয়সের এরকম কোনো সীমা বাঁধা নেই।

মনট্রিলের ম্যাকগ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর সিগফ্রিড হেকিমি বলেছেন, বিভিন্ন কাজের সঙ্গে তুলনামূলক একটি তথ্য আপনি দেখাতে পারেন। আর সেটা সর্বোচ্চ সীমা হতে পারে না।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads