• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
বাজেট হবে করোনা মোকাবিলার

সংগৃহীত ছবি

বাজেট

বাজেট হবে করোনা মোকাবিলার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৯ মে ২০২১

করোনা মোকাবিলায় এবারের ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট তৈরি করা হচ্ছে।  সম্ভাব্য বাজেটের আকার ৬ লাখ ২ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা। নতুন প্রস্তাবিত বাজেটের আয়-ব্যয়ের ঘাটতি দাঁড়াবে ২ লাখ ১৩ হাজার ৮০২ কোটি টাকা। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে, আগামী ৩ জুন জাতীয় সংসদে নতুন বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আ.হ.ম. মুস্তফা কামাল। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে  চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ১০ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল থাকছে। উৎপাদনের চাকা ঘোরেনি বহুদিন। জীবন-জীবিকা নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে নিম্নআয়ের মানুষ। বিস্তর বিবেচনায় রেখে এবারের বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আকার বাড়ছে। এ খাতে বরাদ্দ রাখা হচ্ছে ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা।

আগামী অর্থবছরের বাজেট কেমন হওয়া উচিত-এ বিষয়ে গত মঙ্গলবার এক ওয়েবিনারে পিআরআইর নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, আগামী বাজেটে করোনার টিকাকে গুরুত্ব দিতে হবে। এলক্ষ্যে বাজেটে অন্তত ১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব দিয়ে তিনি বলেন, যেন তা প্রথম দিন থেকেই বাস্তবায়ন করা যায়। সূত্র জানিয়েছে, ২০২১-২২ অর্থবছরের তুলনায় ১০ শতাংশ বাড়িয়ে আগামী বছর বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৫ হাজার ১২৪ কোটি টাকা। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে এডিপিতে ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ২ লাখ ১৫ হাজার ৪৫ কোটি টাকা। সূত্র জানিয়েছে, করোনার কারণে চলতি অর্থবছরের প্রবৃদ্ধিও কাটছাঁট করা হয়েছে। নতুন বাজেট তৈরিতে নজর রাখা হচ্ছে কাভিড-১৯ প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় অগ্রাধিকার খাতগুলোয় প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করা। গুরুত্ব পাচ্ছে স্বাস্থ্য, কৃষি, সমাজকল্যাণ, খাদ্য, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, কর্মসংস্থান খাত। গবেষণাখাতে চলতি অর্থবছরের বরাদ্দ ১০০ কোটি টাকা ব্যবহূত না হওয়ার বিষয়টি সরকার অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। এবারো এখাতে বরাদ্দ থাকবে। বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে জোর দেওয়ার নির্দেশনাও থাকবে বাজেট প্রস্তাবনায়।

জানা গেছে, এবারের নতুন বাজেটে জিডিপি নিয়ে মাতামাতি নেই। মহামারীর কারণে নতুন বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ঘুরে ফিরে ৭ শতাংশের ঘরেই রাখছেন বলে জানা গেছে। এসএমই খাতেও আরো অর্থায়ন করা হবে। কারণ বেসরকারিখাতে ঋণপ্রবাহ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, এবারো বাজেট ঘাটতি ৫ শতাংশের বেশি। জানা গেছে, ৮০ হাজার থেকে ৯০ হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক ঋণ পাওয়ার আশা করছে সরকার। যা ঘাটতি অর্থায়নে সহায়ক হবে। এ অর্থায়নের প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণের মাধ্যমে সংগ্রহ করার টার্গেট করা হচ্ছে। সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে আয় করার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে ২৫ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের চারমাস বাকি থাকতেই সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। প্রতি বছরই বাস্তবায়নাধীন মেগা প্রকল্পগুলোর মতো বড় খাতে বড় ধরনের বরাদ্দ রাখছে সরকার। এবারো ব্যতিক্রম হবে না। আগামী বাজেটেও এসব মেগাপ্রকল্পে বড় ধরনের বরাদ্দ থাকছে। নিত্যপণ্যের মূল্য অস্বাভাবিক বেড়েছে। পাশাপাশি খাদ্য উৎপাদনও বেড়েছে। তবে করোনায় বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির আশঙ্কা কম। এর প্রভাব অভ্যন্তরীণ বাজারেও পড়বে। এসব কারণে এবারও মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৩ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরও মূল্যস্ফীতি নির্ধারণ করা আছে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সরকারের ইকনোমিক কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের বৈঠকে রাজস্বখাতে মোট আদায়ের হার জিডিপির প্রায় ১১ দশমিক ২ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে কর রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৩০ হাজার ৭৮ কোটি টাকা। যা মোট জিডিপির ৯ দশমিক ৫ শতাংশ।

চলতি অর্থবছর কাস্টমস আয় কমে যাওয়ার বিষয়টি মাথায় রেখে আমদানি ও রপ্তানির পরিমাণ বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। উভয় খাতের প্রবৃদ্ধি বাড়িয়ে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর তাগিদ দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান আগামী তিন বছরে কোম্পানির করহার ধাপে ধাপে সাড়ে সাত শতাংশ কমানোর প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, এটি কমানোর পর যে করহার হবে, তাও বিশ্বের গড় করপোরেট হারের তুলনায় বেশি।

মেট্রোপলিটান চেম্বারের প্রেসিডেন্ট ব্যরিস্টার নিহাদ কবীর বলেন, ১০ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা হচ্ছে। আর অর্থমন্ত্রী বলছেন, এতে অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমার তো সেটা ভালো লাগে না। কারণ আমি সাড়ে ৩২ শতাংশ কর দিই। আমরা যখন কর ব্যবস্থাপনার সংস্কার নিয়ে কথা বলি, সেটা গুরুত্ব দেওয়া দরকার।

বেসরকারি গবেবষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ায় ১২ হাজার কোটি টাকা অর্থনীতিতে আসছে। কিন্তু এর ফলে কী পরিমাণ রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে, তা হিসাব করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads