• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
এগিয়ে যাওয়ার টার্গেট

সংগৃহীত ছবি

বাজেট

দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাজেট

এগিয়ে যাওয়ার টার্গেট

  • এম এ বাবর
  • প্রকাশিত ১০ জুন ২০২২

করোনা মহামারির অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তনকে সামনে রেখে জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল গতকাল বৃহস্পতিবার আগামী অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন। যা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১৫ দশমিক ২ শতাংশ। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আকারের বাজেট।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বেলা ৩টায় শুরু হয় সংসদ অধিবেশন। এর আগে জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। নিয়ম অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এতে অনুমোদন দিয়ে স্বাক্ষর করেন। পরে দুপুর পৌনে তিনটার দিকে ব্রিফকেস হাতে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সংসদ কক্ষে প্রবেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

এবারের বাজেটটি প্রস্তুত হয়েছে সরকারের অতীতের অর্জন এবং উদ্ভূত বর্তমান পরিস্থিতির সমন্বয়ে। বাজেটে সঙ্গত কারণেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, কৃষিখাত, স্বাস্থ্য, মানবসম্পদ, কর্মসংস্থান ও শিক্ষাসহ বেশ কিছু খাতকে। এটি বর্তমান সরকারের ২৩তম এবং বাংলাদেশের ৫১তম ও বর্তমান অর্থমন্ত্রীর চতুর্থ বাজেট। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রথম বাজেট ঘোষণা করেন তাজউদ্দীন আহমদ। ১৯৭২ সালের ৩০ জুন ঘোষণা করা সেই বাজেটের আকার ছিল ৭৮৬ কোটি টাকার।

২০২১-২২ অর্থবছর বাজেট বরাদ্দ ছিল ছয় লাখ তিন হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাজেটের আকার বাড়ছে ৭৪ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা। সামনের অর্থবছরের বাজেট বাস্তবায়ন করতে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে চার লাখ ৩৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। ফলে ঘাটতি বাজেট (অনুদানসহ) হবে দুই লাখ ৪১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা। আর দেশে সব পণ্যের দাম বাড়ায় আগামী অর্থবছরের জন্য মূল্যস্ফীতির লক্ষ্য কিছুটা বাড়িয়ে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ করা হয়েছে।

প্রস্তাবিত বাজেটে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে দুই লাখ ৫৯ হাজার ৬১৭ কোটি টাকা। সবচেয়ে বেশি ব্যয় ধরা হয়েছে শিক্ষা ও প্রযুক্তিখাতে। সবচেয়ে কম ব্যয় ধরা হয়েছে শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবাখাতে। এছাড়া, শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবা খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে বাজেটের শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ। পেনশনখাতে চার দশমিক ৬ শতাংশ। ভর্তুকি ও প্রণোদনা খাতে ৮ দশমিক ৪ শতাংশ। বিবিধ ব্যয় ৪ দশমিক ৯ শতাংশ। শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে ব্যয় হবে ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ। সুদ ১১ দশমিক ৯ শতাংশ। পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে ১১ দশমিক ৮ শতাংশ। স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন খাতে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ। জ্বালানী ও বিদ্যুৎ খাতে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ। স্বাস্থ্য ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। কৃষিখাতে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ। প্রতিরক্ষা খাতে ৫ শতাংশ। জনপ্রশাসন খাতে ৭ দশমিক ৩ শতাংশ। সামাজিক নিরাপত্তা ও কল্যাণ খাতে ৪ দশমিক ৯ শতাংশ। জনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা ৪ দশমিক ৪ শতাংশ। গৃহায়ন এক শতাংশ। বিনোদন, সংস্কৃতি ও ধর্ম খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ।

বাজেটে পরিচালনসহ অন্যান্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৩১ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা। যার মধ্যে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদ ব্যয় করা হবে ৭৬ হাজার ৪১২ কোটি টাকা। পণ্য ও সেবার জন্য ব্যয় করা হবে ৩৮ হাজার ৩৩২ কোটি টাকা। ঋণের সুদ পরিশোধে ব্যয় হবে ৮০ হাজার ৩৭৫ কোটি। ভর্তুকি প্রণোদনা ও নগদ ঋণ বাবদ এক লাখ ৭৭ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে।

উন্নয়ন ব্যয়ের মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) খরচ করা হবে দুই লাখ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। এডিপি বহির্ভূত বিশেষ প্রকল্পে ব্যয় হবে সাত হাজার ৭২১ কোটি টাকা। কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচিতে দুই হাজার ৬৭৫ টাকা খরচ করা হবে।

বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী বাজেটে মূল্যস্ফীতি দঢ়ভাবে মোকাবিলায় সর্বাপেক্ষা অগ্রাধিকার রেখে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কৃষি হচ্ছে আমাদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার খাত। বিগত কয়েক বছর ধরে কৃষিখাতের যে অগ্রগতি অব্যাহত রয়েছে তা আরও বেগবান করে অধিক খাদ্য উৎপাদনের লক্ষ্যে গবেষণা ও সমপ্রসারণ, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, সেচ ও বীজে প্রণোদনা, কৃষি পুনর্বাসন এবং সারে ভর্তুকি প্রদান চলমান থাকবে।

মুস্তফা কামাল বলেন, আমাদের তৃতীয় অগ্রাধিকার খাত হলো স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নসহ সার্বিক মানবসম্পদ উন্নয়ন। ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে মানবসম্পদ উন্নয়নে আমরা বরাদ্দ অব্যাহত রাখব। অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ বৃদ্ধি, রপ্তানি বৃদ্ধি ও রপ্তানি বহুমুখীকরণকে আমরা চতুর্থ অগ্রাধিকার দিয়েছি। বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখা হবে। তাছাড়া, আমাদের পঞ্চম অগ্রাধিকার খাত হচ্ছে কর্মসৃজন ও পল্লী উন্নয়ন। এছাড়া, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব মোকাবেলা আমাদের অগ্রাধিকারের অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, সবসময় নিম্ন-আয়ের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকারবদ্ধ এ সরকার আগামীতেও সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমের আওতা সমপ্রসারণ করবে। সে ধারাবাহিকতায় নিম্ন-আয়ের মানুষের মাঝে স্বল্পমূল্যে এমনকি বিনামূল্যে খাদ্য বিতরণের পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে। আগামী বাজেটে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের সফল বাস্তবায়ন আমাদের সরকারের অগ্রাধিকারের অন্যতম ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচিত হবে।

প্রধান ৬ চ্যালেঞ্জ : কৃষি ও শিল্প উৎপাদন বৃদ্ধি, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়ন, মানবসম্পদ উন্নয়ন, সম্পদের সুষম বণ্টনের মাধ্যমে দারিদ্র্য প্রশমন, শিক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতা বৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয়গুলোকে প্রস্তাবিত বাজেটে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তাই আগামী বাজেটে চ্যালেঞ্জগুলো হলো : ১. মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা এবং অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা। ২. গ্যাস, বিদ্যুৎ ও সারের মূল্যবৃদ্ধিজনিত বর্ধিত ভর্তুকির জন্য অর্থের সংস্থান। ৩. বৈদেশিক সহায়তার অর্থ ব্যবহার এবং মন্ত্রণালয় বা বিভাগের উচ্চ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্পসমূহ নির্ধারিত সময়ে শেষ করা। ৪. শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের প্রকল্প যথাসময়ে বাস্তবায়ন। ৫. অভ্যন্তরীণ মূল্য সংযোজন কর সংগ্রহের পরিমাণ এবং ব্যক্তি আয়করদাতার সংখ্যা বৃদ্ধি করা। ৬. টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সন্তোষজনক পর্যায়ে রাখা।

কমবে বাজেট ঘাটতি : প্রস্তাবিত বাজেটে সামগ্রিক বাজেট ঘাটতি হবে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। গত বাজেটে ঘাটতি ছিল জিডিপির ৬ দশমিক ২ শতাংশ। তবে নতুন অর্থবছরে তা হবে মোট জিডিপির ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত উৎস থেকে ঘাটতি অর্থায়ন করা হবে।

প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭.৫ শতাংশ : প্রস্তাবিত বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করেছে সরকার। বাজেটে মোট জিডিপির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে ৪৪ লাখ কোটি টাকা।

মূল্যস্ফীতি মোকাবিলাসহ ৫ খাতে অগ্রাধিকার : বাজেটে পাঁচটি বিশেষ খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এর মধ্যে মূল্যস্ফীতি মোকাবিলাকে অগ্রাধিকারের শীর্ষে রাখা হয়েছে। এরপর খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কৃষিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার খাত। বিগত কয়েক বছর ধরে কৃষিখাতের যে অগ্রগতি অব্যাহত রয়েছে তা আরও বেগবান করে অধিক খাদ্য উৎপাদনের লক্ষ্যে গবেষণা ও সমপ্রসারণ, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, সেচ ও বীজে প্রণোদনা, কৃষি পুনর্বাসন এবং সারে ভর্তুকি প্রদান চলমান থাকবে। তৃতীয় অগ্রাধিকার খাত হলো স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নসহ সার্বিক মানবসম্পদ উন্নয়ন। ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে মানবসম্পদ উন্নয়নে আমরা বরাদ্দ অব্যাহত থাকবে। অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ বৃদ্ধি, রপ্তানি বৃদ্ধি ও রপ্তানি বহুমুখীকরণকে চতুর্থ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখা হবে। আর পঞ্চম অগ্রাধিকার খাত হচ্ছে কর্মসূজন ও পল্লী উন্নয়ন। এছাড়া, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব মোকাবেলাও অগ্রাধিকারের অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

বিদ্যুৎ-জ্বালানিতে বরাদ্দ কমেছে : এ বছর বিদ্যুৎ-জ্বালানিতে উন্নয়ন বরাদ্দ মোট বাজেটের তিন দশমিক ৯ শতাংশ। বাজেটে বিদ্যুতে ২৪ হাজার ১৯৬ কোটি টাকা এবং জ্বালানিতে ১ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা উন্নয়ন বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ দুই খাতে মোট ২৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যা ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ছিল ২৭ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে বাজেট অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বর্তমান বিশ্বে জ্বালানি তেল এবং এলএনজির মূল্য বাড়ছে। এ কারণে দেশেও জ্বালানির মূল্য সমন্বয় করা হবে। কিন্তু ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক বাজারে যতটা জ্বালানির দাম বাড়বে তার পুরোটা দেশে বাড়ানো হবে না।

এছাড়া, বিগত ১৩ বছর ধরে বিদুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারের নিরলস প্রচেষ্টার ফলে দেশে সমপ্রতি মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা (ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ) ২৫, হাজার ৫৬৬ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। ১৩ বছরে মাথাপিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন ২২০ কিলোওয়াট-আওয়ার হতে ৫৬০ কিলোওয়াট আওয়ারে উন্নীত হয়েছে। এ সময়কালে ৫ হাজার ২১৩ সার্কিট কিলোমিটার সঞ্চালন এবং ৩ লাখ ৩৬ হাজার কিলোমিটার বিতরণ লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। বিদ্যুৎ বিতরণে সিস্টেম লস ১৪ শতাংশ থেকে ৮ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।

আরও জানানো হয়, বর্তমানে দেশে ১৩ হাজার ৫৩০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৩৪টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণাধীন। জমির প্রাপ্যতা, জ্বালানি পরিবহন সুবিধা ও লোড সেন্টার বিবেচনায় পায়রা, মহেশখালী ও মাতারবাড়ী এলাকাকে পাওয়ার হাব চিহ্নিত করে বৃহৎ প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর মধ্যে কয়লাভিত্তিক পায়রা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণ শেষে সমপ্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণিজ্যিক উৎপাদন উদ্বোধন করেছেন। এছাড়াও কয়লাভিত্তিক রামপাল ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী সুপার তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাতারবাড়ী ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট আল্ট্রাসুপার ক্রিটিকাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ পুরোদমে চলছে। রাশিয়ার সহায়তায় রূপপুরে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাস্তবায়নাধীন।

নবায়নযোগ্য জ্বালানি হতে প্রায় ৭৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। মোট চাহিদার শতকরা ১০ ভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি হতে উৎপাদনের লক্ষ্যে সৌরশক্তিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

মন্ত্রী আরও জানান, পায়রা-গোপালগঞ্জ ৪০০ কেভি ডাবল সার্কিট সঞ্চালন লাইন এবং গোপালগঞ্জ-রামপাল ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন দুটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন করে ইতোমধ্যে কমিশনিং করা হয়েছে।

এছাড়া, মোংলা-খুলনা (দক্ষিণ) ২৩০ কেভি সঞ্চালন লাইন নির্মিত হয়েছে। গোপালগঞ্জ-আমিনবাজার ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইনের ৭.৫ কিমি পদ্মা রিভার ক্রসিং অংশের পদ্মা রিভার বেডের ৭টি টাওয়ারের ফাউন্ডেশনের নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য ৪০০ কেভি ও ২৩০ কেভি ভোল্টেজের ৬টি সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে।

বাজেটে জানানো হয়, দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি জ্বালানির চাহিদাও দ্রুতগতিতে বাড়ছে। যার একটি বড় অংশ মূলত প্রাকৃতিক গ্যাসের মাধ্যমে পূরণ করা হচ্ছে। দেশে আবিষ্কৃত ২৮টি প্রাকৃতিক গ্যাসক্ষেত্রের মধ্যে ২০টিতে উৎপাদন চলছে। ২০০৯ সালে দেশে দৈনিক ১,৭৮৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদিত হতো যা বেড়ে বর্তমানে ২ হাজার ৫২৫ মিলিয়ন ঘনফুট হয়েছে। পাশাপাশি গ্যাসের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পুরণে দৈনিক প্রায় ৬০০ থেকে ৭৫৩ মিলিয়ন ঘনফুট তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) হিসেবে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা হচ্ছে।

পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনতে সাধারণ ক্ষমা: বিদেশে পাচার করা অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে সাধারণ ক্ষমার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। প্রস্তাবিত বিধান অনুযায়ী, যদি কোনো করদাতা বিদেশে পাচার করা অর্থ বা এ ধরনের সম্পদের কর দেন, তাহলে আয়কর কর্তৃপক্ষসহ কোনো কর্তৃপক্ষই বিদেশে অবস্থিত তার সম্পদের উৎস সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন তুলবে না।

মন্ত্রী প্রস্তাবে আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে ফেরত না আনা স্থাবর সম্পত্তির জন্য ১৫ শতাংশ, অস্থাবর সম্পত্তির জন্য ১৫ শতাংশ এবং নগদ ও সমমানের জন্য ৭ শতাংশ কর রেয়াত সুবিধা থাকবে। ২০২৩ অর্থবছরের প্রথম দিন থেকে শুরু করে ৩০ জুন, ২০২৩ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে এ সুযোগ।

কামাল বলেন, প্রস্তাবিত বিধানটি বাস্তবায়িত হলে আমাদের অর্থনীতিতে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বাড়বে, আয়কর রাজস্ব বাড়বে এবং করদাতারাও তাদের নিজ নিজ দেশে বিদেশে অর্জিত/অর্জিত সম্পদ আয়কর রিটার্নে ঘোষণা করতে পারবেন, এতে তারা স্বস্তি বোধ করবেন।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads