• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
জবির নিয়োগে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ

সংগৃহীত ছবি

ক্যাম্পাস

জবির নিয়োগে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ

  • ইমরান হুসাইন, জবি
  • প্রকাশিত ২১ এপ্রিল ২০২১

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) অসংখ্য শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে আত্মীয়তার ও স্বজনপ্রীতির সম্পর্ক দেখা গেছে। তাদের কারো স্ত্রী, ভাই, ভাতিজা, ভাগনে, কারো বোনজামাই, কারো শ্যালিকা বা কারো দেবর বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করছেন। স্বজনদের কোনো একজন বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি পেলে পরের জনের চাকরি পেতে সহজ হয়ে যায়। এতে স্বজনের লিঙ্ক-লবিং, প্রভাব ও অর্থ বড় ধরনের সহায়তা করে বলে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়। এর অধিকাংশই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. মীজানুর রহমানের দুই মেয়াদের মধ্যে নিয়োগপ্রাপ্ত।

মনোবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. অশোক কুমার সাহার স্ত্রী উজ্জলা সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দপ্তরের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে কর্মরত আছেন। অন্যদিকে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার আচার্যের স্ত্রী গত সিন্ডিকেটে (সাবেক ভিসি ড. মীজানের শেষ সিন্ডিকেট) তৃতীয় শ্রেণি থেকে পদোন্নতি পেয়ে কর্মকর্তা হিসেবে রেজিস্ট্রার দপ্তরের কর্মরত আছেন। এ ছাড়া লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের স্ত্রী সহকারী রেজিস্ট্রার দিলরুবা বেগম কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে কর্মরত আছেন। বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শামীম আরার দেবর সাইফুল আলম রেজিস্ট্রার দপ্তরে সহকারী রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট কর্মকর্তার সংখ্যা ২১২ জন। এর মধ্যে সত্তরের বেশি কর্মকর্তার সাথে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে রক্তের বা আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে। যেমন প্রকৌশল দপ্তরের উপপ্রধান প্রকৌশলী সুকুমার চন্দ্র সাহার ভাগনে নির্বাহী প্রকৌশলী অপূর্ব কুমার সাহা, ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জাহিদ আলমের স্ত্রী কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের ডেপুটি রেজিস্ট্রার আশরা-উন-আক্তার-তুহিন, ডেপুটি রেজিস্ট্রার মশিরুল ইসলামের স্ত্রী (ছনিয়া) প্ল্যানিংয়ে কর্মচারী, ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের স্ত্রী কর্মচারী হিসেবে, আইটি সেলের কম্পিউটার প্রোগ্রামার হাফিজুর রহমানের শ্যালিকা (হাসিনা), সহকারী রেজিস্ট্রার রিফাত আলী খানের স্ত্রী ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের কর্মচারী, সহকারী রেজিস্ট্রার জামাল হোসেনের ভাই আবুল হোসেন ইংরেজি বিভাগের কর্মচারী, সহকারী রেজিস্ট্রার জাহাঙ্গীর আলমের ভাই নুর ইসলাম ভিসি দপ্তরে, কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি সহকারী রেজিস্ট্রার কামাল হোসেন সরকারের ভাই জামাল হোসেন গণিতের কর্মচারী, পরিবহনের প্রকৌশলী আজিজুর রহমানের ভাই প্রকৌশল দপ্তরের প্রকৌশলী আনিছুর রহমান, সহকারী লাইব্রেরিয়ান লায়লা আক্তারের স্বামী সহকারী রেজিস্ট্রার খসরু আলম, আইটি দপ্তরের নাজমুল হাসানের ভাই মাহবুব গণিতের কর্মচারী, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের উত্তম কুমারের ভাই দিলীপ কুমার ট্রেজারার দপ্তরে পিয়ন ও রিদয় পরিবহন পুলের হেলপার, সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাকসুদুর রহমানের ভাই কুদ্দুস অর্থ দপ্তরের কর্মচারী, একই দপ্তরের আবু ইমরানের ভাই এহসান মাইক্রোবায়োলজির কর্মচারী ও সুজন রায়ের স্ত্রী ভূমি ও ব্যবস্থাপনা আইনে কর্মচারী হিসেবে কর্মরত আছেন। এ ছাড়া সেকশন অফিসার আইনুন নাহারের বোন ও মেডিকেলের টেকনিশিয়ানের স্ত্রী কর্মচারী হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত রয়েছেন। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহায়ক কর্মচারী সমিতির (চতুর্থ শ্রেণি) সভাপতি আবু সাঈদ দর্শন বিভাগে কর্মরত। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়েই তার বাবা, বোনজামাই চাকরি করে গেছেন। এখন করছেন আরেক বোনজামাই, তিন ভাগনেসহ তিনি। প্রক্টর দপ্তরের সহায়ক কর্মচারী হাসান আলীর আপন ভাই, চাচাতো ভাই দুজন, শ্যালিকাসহ নিজ এলাকা চাঁদপুরের মতলবের আত্মীয়ের সম্পর্কের আছেন আরো অনেকে।

উপরে উল্লেখিত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বিভিন্ন দপ্তরে কর্মক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতির বলয় গড়ে তুলেছেন। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে কে কার স্বজন এটা তো আমার জানা নেই।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads