• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯
বিপাকে স্বনির্ভর শিক্ষার্থীরা

প্রতীকী ছবি

ক্যাম্পাস

বিপাকে স্বনির্ভর শিক্ষার্থীরা

  • ইমরান হুসাইন, জবি
  • প্রকাশিত ২৪ এপ্রিল ২০২১

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দ্বিতীয় দফা লকডাউনে বিপাকে পড়েছে দেশের একমাত্র অনাবাসিক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ স্বনির্ভর শিক্ষার্থী। টিউশনি, খণ্ডকালীন চাকরি, প্রকাশনা সংস্থায় প্রুফ রিডিংসহ বিভিন্ন কাজ করে পড়াশোনার কাজ চালান তারা। কিন্তু লকডাউনে তারা এখন বেকার। কারণ এই সময় এসব খণ্ডকালীন কাজেরও ছুটি। ফলে বাড়ি ভাড়া ও হাত খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন অনেক শিক্ষার্থী। প্রকাশ্যে কারো কাছে হাত পাততেও পারছেন না তারা।

গত বছর দেশে করোনা আঘাত হানলে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যায় এবং একের পর এক ছুটি বাড়তেই থাকে। তবে গত বছরের শেষের দিকে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার একটা গুঞ্জন শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয় খুললেই পরীক্ষা শুরু হবে সেই সূত্রে অনেকেই ঢাকায় এসে পড়লেও খোলেনি বিশ্ববিদ্যালয়। এমতাবস্থায় নিজেদের পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশনি ও ছোটখাটো কাজ করেই চলছিলেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু লকডাউনের কারণে সেটাও বন্ধ হয়েছে। ফলে বিপাকে পড়েছে অনেক শিক্ষার্থী।

টিউশনি করে নিজের পড়াশোনা, বাসা ভাড়া ও খাবার খরচ জোগাড় করতাম। দরিদ্র কৃষক পরিবারের বড় সন্তান হওয়াতে মাঝেমধ্যে বাবা-মায়ের কাছেও কিছু টাকা পাঠাতাম। লকডাউনের কারণে টিউশনি ও কোচিং থেকেও মানা করে দিয়েছে। চলতি মাসের বাসা ভাড়ার টাকা দেওয়ার আগেই খাবার টাকা শেষ হয়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে বাড়ি যাওয়ারও উপায় নেই। কী করব এখন বুঝতেছি না। দুঃখ ভরক্রান্ত মন নিয়ে কথাগুলো বলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আরেক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে একটি দোকানে ৬ হাজার টাকা বেতনে কাজ করতেন। লকডাউনে দোকান বন্ধ থাকায় তার কাজটিও বন্ধ। এমতাবস্থায় বাসাভাড়া ও খাওয়া খরচ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তিনি।

দর্শন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থী মিরপুরে টিউশনি করে চলতেন। পরিবারে তার বাবা সংসার চালান। তারা তিন ভাই ও এক বোন পড়াশোনা করেন। এ অবস্থায় টিউশনি বন্ধ থাকায় ঢাকায় টিকে থাকায় কষ্টকর হয়ে উঠেছে তার।

তিনি বলেন,শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একের পর এক বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে আমাদের। অন্যদিকে অনলাইনে ক্লাস শেষ হয়ে যাওয়াতে বিশ্ববিদ্যালয় খুললেই পরীক্ষা এমন গুঞ্জন শোনার পর পড়াশোনা গোছানোর জন্য মেস নিই। এখন এটাই হয়েছে আমার গলার কাঁটা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ড. মোহাম্মদ আবদুল বাকি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় খুললেই আমরা এই বিষয়ে ব্যাবস্থা নেব। আপাতত এ বিষয়ে আর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। তবে এর আগে মীজানুর স্যারের কাছে আমি একটা রিপোর্ট জমা দিয়েছিলাম। এ বিষয়ে এখন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে সেটা উপচার্য স্যারই ভালো বলতে পারবেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ বলেন, লকডাউনের কারনে সবকিছুই থেমে আছে। এর আগে একটা প্রস্তাব এসেছিল সেটার কার্যকারিতা কতদূর এখন আমি জানি না। এ বিষয়ে আমার কাছে পুরোপুরি কোনো তথ্য নেই। দেখি সেটার কার্যকারিতা কতদূর এগিয়েছে। তবে আমি শিক্ষার্থীদের পক্ষে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads