• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪২৯
সন্তান জন্মপূর্ব মায়ের যত্ন ও শিশুর করোনা ঝুঁকি

সংগৃহীত ছবি

শিশু

সন্তান জন্মপূর্ব মায়ের যত্ন ও শিশুর করোনা ঝুঁকি

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ০৩ এপ্রিল ২০২০

চলমান প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে কাঁপছে পুরো বিশ্ব। মহামারী করোনা প্রতিরোধে দেশে দেশে নেওয়া হয়েছে ভিবিন্ন পদক্ষেপ। এই ভাইরাসের হাত থেকে কিভাবে বাঁচবেন, লক্ষ্মণ ও চিকিৎসা কী, কতটা মারাত্মক ইত্যাদি প্রশ্ন মানুষের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে।

মহামারী ভাইরাসের মধ্যে সন্তান সম্ভবাদের আবার একটু আতঙ্ক বেশি। কেননা শিশুর মৌলিক অধিকারের মধ্যে জন্মপূর্ব নিরাপত্তা বা চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা বাঞ্ছনীয়। আর এ জন্য মাকে থাকতে হবে সুস্থ। পরিবারের অন্যদের দায়িত্ব হল মাকে গর্ভকাল থেকেই রাখতে হবে হাসিখুশি ও দুশ্চিন্তামুক্ত।

চলমান মহামারী করোনা ভাইরাস সাধারণ মানুষের পাশাপাশি অন্তঃসত্ত্বা মায়েরাও আতঙ্কে রয়েছেন। তাদের গর্ভের সন্তান করোনা নিয়ে পৃথিবীতে আসেন কিনা সেই উদ্বেগ করছে মায়েদের মধ্যেও।

সম্প্রতি এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মায়ের গর্ভ থেকে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস নিয়ে এক শিশুর জন্ম হয়েছে।

সংবাদমাধ্যমটি আরও জানায়, করোনা আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ নিয়ে সন্তান জন্মদানের আগেই ব্রিটেনে এক গর্ভবতীকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। কিন্তু তার টেস্টের রেজাল্ট আসার আগেই জন্ম নেয় এ শিশু। জন্মের পর পরই শিশুটিকেও টেস্ট করা হয়। রেজাল্ট আসে করোনা পজিটিভ।

তাই দেখা যাচ্ছে অন্তঃসত্ত্বা মা ও গর্ভের সন্তানের করোনার ঝুঁকি রয়েছে। তাই এ সময়ে মায়েদের অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

জেনে নিন গর্ভবতী মা ও সন্তানের করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি কতটুকু এবং ঝুঁকি এড়াতে করণীয়-
গর্ভাবস্থায় অন্তঃসত্ত্বা মায়ের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। তাই গর্ভাবস্থায় যে কোনো সময়ের চেয়ে ফ্লু বা অন্য কোনো সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি। এই সময় মায়ের বুক ও পেটের মধ্যে ডায়াফ্রাম নামক পর্দাটি ওপরের দিকে উঠে যায়। খুব স্বাভাবিকভাবেই শ্বাসকষ্ট হয় গর্ভকালীন শেষ সময়ে। তাই সংক্রমণের জন্য সাধারণ মানুষের তুলনায় শ্বাসকষ্ট বেশি হতে পারে মায়েদের। গর্ভাবস্থায় কাশি–জ্বর দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপণ্ন হতে হবে।

আর শিশুর ক্ষেত্রেও করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি রয়েছে। ইনফ্লুয়েঞ্জা বা করোনা ভাইরাস সংক্রমণের জন্য গর্ভপাত, শিশুর বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়া, অপরিণত অবস্থায় জন্ম নেয়া, জন্মগত ত্রুটি হওয়া বা উচ্চ তাপমাত্রার জ্বরের জন্য গর্ভস্থ শিশুর ক্ষতি হতে পারে। এমনকি মৃত্যুঝুঁকিও রয়েছে। আর তাই মায়ের থেকে শিশুর করোনা হওয়ার ঝুঁকি এড়ানো যায় না।

অবলম্বন করতে হবে সাবধানতা

গর্ভাবস্থায় সব মায়ের বিশেষ যত্নের প্রয়োজন হয়। আর এখন যেহেতু করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে, তাই অন্য সময়ের চেয়ে আরও বেশি সতর্ক হতে হবে।

১. গর্ভাবস্থায় শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। তাই এ সময় ঘরে থাকুন ও জনসমাগম এড়িয়ে চলুন। আর চিকিৎসার প্রয়োজন হলে ফোনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
২. মার্কেট, মেলা, বিয়েবাড়ি ও গণপরিবহন এড়িয়ে চলুন।
৩. ঘরবাড়ি ও ব্যবহৃত কাপড় পরিষ্কার রাখুন। আর সংক্রমণ এড়াতে বারবার সাবান দিয়ে ২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে হাত ধুয়ে নিন।
৪. এ সময় ভ্রমণে যাবেন না।
৫. অসুস্থ ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন।
৬. বিশেষ প্রয়োজনে বাইরে বের হলে মাস্ক ও সুরক্ষা পোশাক ব্যবহার করুন।
৭. পশুপাখি বা কাঁচামাছ, মাংস ধরবেন না। আর ধরলেও দ্রুত সাবান–পানি দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন।

সন্তানকে পৃথিবীর আলো দেখাতে একজন মা কতই না কষ্ট করেন। ৯ মাস ১০ দিন সন্তানকে গর্ভে রেখে নিজের সব সুখ বিসর্জন দিয়ে থাকেন। সব মায়ের প্রত্যাশা থাকে, তার নবজাতক যেন সুস্থভাবে পৃথিবীর আলো দেখে। তাই চলমান মহামারী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে মা ও শিশুকে বাঁচতে সচেতন থাকতে হবে পরিবারের সবাইকে। নিতে হবে চিকিৎসকদের পরামর্শ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads