• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
আপনার শিশুকে কেন বই পড়তে দেবেন

সংগৃহীত ছবি

শিশু

আপনার শিশুকে কেন বই পড়তে দেবেন

  • আল সানি 
  • প্রকাশিত ২৮ নভেম্বর ২০২০

একটা সময় ছিল যখন উপহার মানেই ছিল এক সেট ভালো মানের বই। কালের বিবর্তনে তা পরিবর্তিত হয়েছে। তবে বইয়ের বিকল্প শুধু বই-ই। শিশু বয়স থেকেই বাবা-মার উচিত সন্তানকে বই পড়ার প্রতি আগ্রহী করা; পরিবারে সন্তানদের বই পড়ার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা। ‘ভালো খাবার যেমন শরীরের প্রশান্তি দেয়, একটি ভালো বই তেমনি মনের প্রশান্তি আনে।’ শিশুদের কেন বই পড়তে আগ্রহী করবেন তার নয়টি কারণ জানাচ্ছেন আল সানি।

১. স্মৃতিশক্তি প্রখর করতে

শিশুদের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে একটি ভালো পদ্ধতি হলো বই পড়া। একটি গল্প ভালোভাবে বুঝতে হলে গল্পের চরিত্রগুলোকে ভালোভাবে মনে রাখা দরকার হয়। আনন্দদায়ক গল্পগুলো শিশুরা দীর্ঘদিন মনে রাখতে পারে ফলে স্মৃতি ধারণের শক্তি প্রখর হয়।

২. পৃথিবী সম্পর্কে জানতে

বিভিন্ন ভ্রমণ কাহিনী কিংবা বিদেশি প্রেক্ষাপটে তৈরি গল্পগুলো শিশুদের মননে নিজের চারপাশের বাইরের দুনিয়াটা জানতে আগ্রহ সৃষ্টি করে। তার চোখের সামনে নতুন একটি দুয়ার খুলে দেয়, ভবিষ্যতে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে যা যথেষ্ট ভূমিকা পালন করে।

৩. মস্তিষ্কের অনুশীলন দুর্দান্ত মাধ্যম

শিশুদের মস্তিষ্ক বিকাশের জন্য ক্রমাগত অনুশীলনের দরকার হয়। বই পড়া সবচেয়ে ভালো মস্তিষ্কের ব্যায়াম। মস্তিষ্ক যত বেশি অনুশীলন করবে, শিশু তত ভালোভাবে সব শিক্ষা রপ্ত করবে যা তাদের আত্মোপলব্ধি ও শব্দভান্ডার বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করে।

৪. অপার সম্ভাবনা নিয়ে ভাবতে

একটি ভালো বই পড়ার মাধ্যমে শিশুদের বোধগম্যতা এবং বিশ্লেষণাত্মক চিন্তার দক্ষতা বাড়ে। একটি বইয়ের অর্ধেক পড়েই সে ভাবতে থাকে বাকি অংশে কী থাকতে পারে, কাহিনীগুলো কীভাবে বদলে যাবে; এসব ব্যাপারে ভবিষ্যদ্বাণী চিন্তা করে সে। এভাবে তার মস্তিষ্ক ভবিষ্যতে বিভিন্ন কাজের বা ঘটনার সম্ভাবনা সহজেই অবলোকন করতে পারে।

৫. সহানুভূতিশীলতার বিকাশ করতে

আমরা যখন ছোটবেলায় রবীন্দ্রনাথের ‘ছুটি’ গল্প পড়ি তখন কিন্তু ফটিকের প্রতি তীব্র সহানুভূতি অনুভব করতে থাকি। এরকমই শিশুরা যখন ছোটগল্প পড়ে তখন সেখানে উপস্থিত চরিত্রগুলোর প্রতি সমবেদনা বা ভালোবাসা তৈরি হয় ফলে তার ভেতর আবেগ এবং ভালোবাসার অনুভূতির সম্পর্ক আরো গাঢ় হয়।

৬. ভাষার উচ্চারণ বিকাশে

শিশুরা অনুকরণপ্রিয়। পাশের জনের কথা বলা ও ভালো বই পড়ার মাধ্যমে তারা ভাষার উচ্চারণ দক্ষতা অর্জন করে। আপনি যদি তাদের হাতে সহজ সাবলীল ভাষার বই তুলে দেন, তারা সেটা পড়েই ভাষার দক্ষতা অর্জন ও বিকশিত করবে। অনেকক্ষেত্রে নতুন ভাষা শেখার ক্ষেত্রেও এটি সাহায্য করে।

৭. কল্পনাশক্তি এবং ধৈর্য বাড়াতে

একটি ছোটগল্পের বই পড়ে শেষ করতে বেশ কিছুদিন সময় লাগে। অনেক সময় বইটি শেষ না করে সে উঠতেই চায় না। এতে শিশুর ভেতর ধৈর্যশক্তি বাড়ে ও কল্পনাশক্তি প্রখর হয়। পরে এ ধরনের শিশুরাই একজন ভালো লেখক বা ভালো শ্রোতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

৮. বিদ্যালয়েও সেরাদের সেরা হতে

গবেষণায় দেখা যায়, যেসব শিশু পাঠ্যপুস্তকের পাশাপাশি গল্প, ছড়া ইত্যাদি বই পড়ে, তার শ্রেণি পারফরম্যান্সও ভালো হয়। একাডেমিক ফল, নেতৃত্ব, সামাজিক অনুষ্ঠান সবকিছুতেই তারা এগিয়ে থাকে।

৯. বিনোদনের সেরা মাধ্যম

এখন অনেক শিশুই বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে মুঠোফোন ও টেলিভিশনের প্রতি ঝোঁক দেখায়। এতে অনেকক্ষেত্রেই শারীরিক ও মানসিক বেশকিছু অসঙ্গতি দেখা দেয়। কিন্তু বাবা-মা তাদের উপহার হিসেবে মোবাইল না দিয়ে ভালো বই তুলে দিতে পারে তাদের হাতে, যা শিশুর বিনোদনের উপযুক্ত মাধ্যম হতে পারে। হাসির বইগুলো পড়ে শিশুরা আনন্দ নিতে পারে, গোয়েন্দা কাহিনী পড়ে সৃষ্টিশীলতা বাড়াতে পারে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads