• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮

ছবি : ফারহানা রহমান

শিশু

মায়ের মুখের ভাষা

  • প্রকাশিত ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২

প্রত্যেক জাতির রয়েছে নিজস্ব ভাষা। মায়ের মুখ থেকে পাওয়া ভাষাই মাতৃভাষা। বাংলাদেশিদের মাতৃভাষা বাংলা, যা বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত একটি ভাষা। মানুষ ভাবের আদান-প্রদান করে থাকে তাদের মাতৃভাষায়। জন্মের পর যখন শিশুর মুখে ভাষা ফোটে, তখনই শব্দের খোঁজে থাকে শিশুটি। মা-বাবা হিসেবে এ সময় আপনার দায়িত্ব, সন্তানকে ভাষা শেখানো। তবে তা অবশ্যই আঞ্চলিক মাতৃভাষা এবং স্পষ্ট ও চলতি ভাষা হতে হবে। আর এক্ষেত্রে পরিবারই শিশুর প্রথম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কারণ পরিবার থেকে শিশুর সামাজিকতা শেখা শুরু হয়।

শিশুরা অনুকরণ প্রিয়। বাচ্চারা সব সময় বড়দের অনুকরণ করে থাকে। বিশেষ করে বাবা-মার সাথে শিশুরা সব সময় হাসি-ঠাট্টা আর খেলায় মেতে থাকে। বাচ্চাদের সাথে সময় কাটানোর সময় বাবা মাকে অবশ্যই শিশুর সাথে কথা বলার চেষ্টা করতে হবে। শিশুর সাথে বেশি বেশি কথা বলার মাধ্যমে ভাষা শেখানো যায় সহজে।

শিশুর প্রতি বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যদের যথেষ্ট সময় দিতে হবে। কর্মজীবী মহিলাদের সন্তানের প্রতি যত্ন নেয়া বা পর্যাপ্ত সময় ব্যয় করার সুযোগ খুবই কম। তবু বাবা-মাকে সময় বের করে নিতে হবে। শিশুর সাথে খেলাধুলা করতে হবে। শিশু বুঝুক আর না-ই বুঝুক, তার সাথে প্রতিনিয়ত কথা বলতে হবে। মা-বাবা যতটা সম্ভব সন্তানের সাথে সুন্দর সময় কাটানোর চেষ্টা করতে হবে। বাচ্চা যেন হীনম্মন্যতায় না ভোগে বা নিজেকে অসহায় না ভাবে, সেদিকে নজর দিতে হবে।

শিশু যদি ইশারার সাহায্যে কথা বলতে চায়, তাহলে ইশারার সাথে সংগতিপূর্ণ এবং অর্থবোধক শব্দ যোগ করে তাকে কথা বলতে উৎসাহিত করুন। যেমন- শিশু বিদায় জানাতে হাত বাড়ালে আপনি বলুন, ‘বাই বাই’ অথবা ‘টা টা’। শিশুকে প্রতিটি মুহূর্তে ইশারার সাথে সাথে মুখে আওয়াজ করে সেই ইশারার সঙ্গতিপূর্ণ আওয়াজ করাতে চেষ্টা করুন।

বিভিন্ন সমীক্ষায় জানা গেছে, শিশুরা বাড়িতে যে ভাষায় কথা বলছে তা দ্রুত এবং আরো ভালো করে শিখছে। শিশুশিক্ষা বিষয়ক গবেষক পি শ্রী নায়ার ‘শিক্ষা স্তরে শিক্ষার মাধ্যমের প্রভাব’ নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে বলেছেন, শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে যদি ইংরেজি থাকে তাহলে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার স্তরগুলো নিম্নস্তরের বিদ্যালয়ের পড়াশোনায় ভুগতে পারে। এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি দরিদ্র শ্রেণির শিশুদের ওপর হয়। কারণ তারা ইংরেজি শিখতে পরিবারের কাছ থেকে খুব কমই সমর্থন পায়।

এক্ষেত্রে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক তুহিন ওয়াদুদের পরামর্শ হচ্ছে, ‘শিশুদের বয়স উপযোগী শুদ্ধ বাংলা উচ্চারণের গল্পের বই কিনে দিন। খুব বড় নয়, তিন-পাঁচটি শব্দ দিয়ে তৈরি বাক্যের গল্পের বই তাদের জন্য নির্বাচন করুন। এতে শিশুরা বই পড়ার প্রতি আকৃষ্ট হবে এবং শুদ্ধ বাংলা শব্দ শিখবে। শুধু বই কিনে দিলে হবে না। মা-বাবাদেরও বাড়িতে বই পড়ার চর্চা করতে হবে। পরিবারের সদস্যদের বই পড়তে দেখলে শিশুরা বই পড়ার প্রতি আকৃষ্ট হবে।

 

 

খালিদ আহমেদ রাজা

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads