এই বাড়ি ভাড়া দেওয়া হবে। বাড়ির সাইনবোর্ডে লেখা ব্যাপারী বাড়ি।
রুম ভাড়া তেরোশ
দুই রুম নিলে অ্যাটাস্ট বাথরুম থাকবে। এক রুম নিলে শেয়ার করতে হবে। বিদ্যুৎ বিল একশ তবে ফ্রিজ ব্যবহার করলে দুইশ। গ্যাস বিল একশ। গ্যাসের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম। দুই রুম নিলে একটা চুলা তার জন্য স্পেশালি থাকবে। এক রুম নিলে শেয়ার করতে হবে। মোট খরচ পড়বে আঠারোশ টাকা। যাহোক, এসব বিস্তারিত দিয়ে সাইনবোর্ড দেওয়া কয়েক দিনের মধ্যে ভাড়াটিয়াও জোগাড় হয়ে গেল। চার জন ভাড়াটিয়া শেয়ারের বিষয় সব মিটমাট করে দিয়ে গেল। দশ-পনেরো দিন বেশ ভালোই চলছিল। তারপর দিনে তিন-চারবার ঝগড়া শুরু হয়।
একদিন বিকেলে তুমুল ঝগড়া শুরু হলো। বাড়িওয়ালা রাগারাগি করে কোনো রকমে ঝগড়া থামিয়ে দিয়ে চলে গেল চা খেতে। চা খেতে খেতে ভাবছে কী করা যায়। তারপর কম্পিউটারের দোকানে গিয়ে কিছু শর্ত কম্পিউটার কম্পোজ করে আনলো, যদি ঝগড়ার শব্দ হয় তাহলে তাকে নিম্নোক্ত শাস্তি পেতে হবে-
১. ঝগড়ার শব্দ ঘর থেকে বাইরে এলে দুই হাজার টাকা জরিমানা আর ঘরে থাকলে এক হাজার।
২. ঝগড়ায় যদি কোনো হাতাহাতি হয়, তাহলে তাদের বাসা থেকে বের করে দেওয়া হবে। তবে তাদের আসবাবপত্র, বাসনকোসন কিছুই দেওয়া হবে না।
৩. ঝগড়া করে রান্না বন্ধ করলে সেদিন থেকেই তিন দিন তার জন্য গ্যাসের চুলা স্পর্শ করা নিষিদ্ধ।
৪. সর্বশেষ কথা, এই নিয়ম যাদের ভালো লাগবে না, অভিযোগ করার কোনো সুযোগ নেই। অভিযোগ করলে তিন মাসের ভাড়া বুঝিয়ে দিয়ে রুম ছাড়তে হবে।
সকাল সকাল প্রত্যেক ঘরে এই চিঠি দেখে ভাড়াটিয়ারা মহাবিপদে; কিন্তু এসব মেনে নিয়েও থাকতে হচ্ছে কারণ ওই এলাকায় সবচেয়ে কম দামে ওই বাড়িটায় রুম ভাড়া পাওয়া যায়।
তারপর একদিন পাশের বাড়িওয়ালা জিজ্ঞেস করছে- ব্যাপারী, আপনার ভাড়াটিয়ারা এখন ঝগড়া করে না?
ব্যাপারী : না ভাই, এখন শুধু মোবাইল ভাঙার শব্দ পাই।
পাশের বাড়িওয়ালা : তার মানে কী?
ব্যাপারী : শুনেছি এখন আধুনিক স্টাইলে ঝগড়া হয়।
পাশের বাড়িওয়ালা : মানে কী? একটু বুঝিয়ে বলেন।
ব্যাপারী : শুনেছি স্বামী-স্ত্রী দুজনের ফেসবুক আইডি খোলা আছে। আর ঝগড়া করে চেটিংয়ের মাধ্যমে। তাই শব্দ হয় না। যখন রাগ খুব হয়, হাতাহাতি না করে ফোনটা ঢিল মারে আর দেয়ালে লেগে ভেঙে যায়। তাছাড়া ফোন ভাঙার কোনো শর্ত দিইনি তো।
পাশের বাড়িওয়ালা এসব শুনে একগাল হেসে বলল- যাই, আমিও এই পদ্ধতি ব্যবহার করি।