• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯

পণ্যবাজার

বাজারে কমেছে পেঁয়াজের ঝাঁজ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৬ অক্টোবর ২০২১

ব্রয়লার মুরগির দাম নতুন করে আরো বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে কেজিতে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ১০ টাকা পর্যন্ত। এতে ব্রয়লার মুরগির কেজি দুইশ টাকার কাছাকাছি চলে এসেছে। এদিকে পেঁয়াজ আমদানিতে শুল্ক কমানোর খবরে কমেছে পেঁয়াজের দাম। একদিনে কেজিতে পেঁয়াজের দাম কমেছে ১০ টাকা। তবে মুরগির পাশাপাশি এখনো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকা। দুই সপ্তাহ আগে ছিল ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা। আর সেপ্টেম্বর মাসের শুরুর দিকে ছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকার মধ্যে।

ব্রয়লার মুরগির মতো পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগির দামও দফায় দফায় বেড়েছে। সেপ্টেম্বর মাসের শুরুর দিকে ২১০ থেকে ২৩০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া সোনালি মুরগির দাম কয়েক দফা বেড়ে এখন ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগে এই মুরগির কেজি ছিল ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকা এবং দুই সপ্তাহ আগে বিক্রি হয় ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা কেজি।

ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম দফায় দফায় বাড়লেও অনেকটা স্থিতিশীল রয়েছে লাল লেয়ার মুরগির দাম। সেপ্টেম্বর ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া এই মুরগির দাম কয়েক সপ্তাহ ধরে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

মুরগির দামের বিষয়ে কাপ্তান বাজারের ব্যবসায়ী আকতার বলেন, বাজারে এখন মুরগির সরবরাহ বেশ কম। এ কারণে মুরগির দাম বাড়ছে। সামনে ব্রয়লার মুরগির কেজি দুইশো টাকা হয়ে গেলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। তবে মাসখানেক পর মুরগির দাম কমতে পারে। কারণ তখন নতুন মুরগি বাজারে আসবে। মিরপুর-১ ব্যবসায়ী আসলাম বলেন, হোটেল ও রেস্টুরেন্টগুলো এখন প্রচুর সোনালি ও ব্রয়লার মুরগি কিনছে। তাছাড়া বিভিন্ন অনুষ্ঠান হচ্ছে। এসব অনুষ্ঠানের জন্যও ব্রয়লার ও সোনালি মুরগি কেনা হচ্ছে। এ কারণে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে। লাল লেয়ার মুরগি হোটেল ও রেস্টুরেন্টগুলোতে চলে না। আমাদের ধারণা এ কারণে লেয়ার মুরগি দাম খুব একটা বাড়েনি। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৭৫ টাকা বিক্রি করেছি। পাইকারিতে যে হারে দাম বেড়েছে তাতে ১৮৫ টাকার নিচে বিক্রি করার উপায় নেই। আগামী সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির কেজি দুইশো টাকাও হয়ে যেতে পারে। এদিকে গত সপ্তাহে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমে এখন ৬৫ থেকে ৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। গতকালও পেঁয়াজের কেজি ৭৫ টাকা বিক্রি হতে দেখা যায়। তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে পেঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক কমানোয় একদিনে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০ টাকা কমে গেছে।

কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী করিম শেখ বলেন, সরকার পেঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এ কারণে শ্যামবাজারসহ বিভিন্ন পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। আমাদের ধারণা কয়েকদিনের মধ্যে পেঁয়াজের দাম আরো কিছুটা কমবে। তিনি বলেন, আসলে বাজারে পেঁয়াজের ঘাটতি নেই। প্রচুর দেশি পেঁয়াজ আছে। কিন্তু ভারতে পেঁয়াজের দাম বাড়ায় এবং পূজার কারণে কয়েকদিন কম পেঁয়াজ আসার কারণে হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে।

এসব বাজারে বেড়েছে ভোজ্যতেল দাম। লিটার প্রতি ১০ টাকা বেড়ে খুচরা প্রতি লিটার তেল বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা। এছাড়াও বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের তেলের লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৫৩ থেকে ১৫৮ টাকায়।

বাজারে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকায়। এছাড়া প্যাকেট চিনি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। আটা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকায়। বাজারে অপরিবর্তিত আছে ডিমের দাম। লাল ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। হাঁসের ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকা। সোনালি (কক) মুরগির ডিমের দাম বেড়ে ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। গত সপ্তাহের ব্যবধানে ডজনের দাম বেড়েছে ২৫ টাকা।

 

এছাড়া শুকনো মরিচ প্রতি কেজি ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা, রসুনের কেজি ৮০ থেকে ১৩০ টাকা, দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। চায়না আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা। হলুদের কেজি ১৬০ টাকা থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ইন্ডিয়ান ডাল কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। দেশি ডাল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়।

সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা এখন সব থেকে বেশি দামে বিক্রি করছেন গাজর ও টমেটো। মানভেদে এক কেজি গাজর ১০০ থেকে ১৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৪০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে এই সবজি দুটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এই দুই সবজির পাশাপাশি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে অন্যান্য সবজি। শীতের আগাম সবজি শিম গত সপ্তাহের মতো কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। ঝিঙের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। ছোট ফুলকপি ও বাঁধাকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা। মুলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। এ সবজিগুলোর দাম সপ্তাহের ব্যবধানে খুব একটা হেরফের হয়নি।

এছাড়া চিচিঙ্গা, বরবটি, ঢেঁড়স, পটোল, করলার দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে। করলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি, পটোলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ঢেঁড়সের কেজি পাওয়া যাচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে, বরবটির কেজি পাওয়া যাচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। এছাড়া কাঁচকলার হালি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, লালশাকের আঁটি ১০ থেকে ২০ টাকা, মুলাশাকের আঁটি ১৫ থেকে ২০ টাক, কলমিশাকের আঁটি ৫ থেকে ১০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এগুলোর দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে।

মিরপুর ১১ নম্বর বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. ফারুক বলেন, বাজারে সবজির আমদানি কম থাকায় বেড়েছে দাম। কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা দাম বেড়েছে। শীতের মৌসুম  সবজির দাম কমবে। এসব বাজারে আলুর দাম বিক্রি হচ্ছে ১৮ থেকে ২০ টাকা কেজি। সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি কমেছে ৫ থেকে ১০ টাকা। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা। ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads