• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
আলুর কেজি ৪ টাকা, তবুও নেই ক্রেতা

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

পণ্যবাজার

আলুর কেজি ৪ টাকা, তবুও নেই ক্রেতা

  • মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৬ জানুয়ারি ২০২২

মুন্সীগঞ্জের হিমাগারগুলোতে এখনো প্রচুর পরিমাণ আলু মজুদ রয়েছে। নতুন আলু উঠতে শুরু করায় দিন দিন কমছে পুরানো আলুর চাহিদা। হিমাগারে ৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে আল। তারপরেও মিলছে না ক্রেতা। দাম না থাকায় আলু মালিকরা হিমাগারেও আসছে না। ফলে বিপাকে পড়েছেন হিমাগার মালিকরা। কিছু দিনের মধ্যেই হিমাগারের শীতল হাওয়া বন্ধ করে দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। এরপর নতুন মৌসুমের আলু সংরক্ষণে হিমাগারগুলোকে প্রস্তুত করতে হবে। কিন্তু মজুদ আলু নিয়ে ভোগান্তিতে পরেছেন তারা।

হিমাগার মালিকরা বলছেন, আলু মালিকদের দলিলগুলো আমাদের দিয়ে গেলে আমরা নামেমাত্র মূল্যে বিক্রি করে হলেও ভাড়ার টাকার আংশিক আদায় হতো। এছাড়া মালিকেরা আমাদের কাছে আলু রেখে বস্তা প্রতি ঋণ নিয়েছে। ঋণের সুদের টাকাতো দূরের কথা মূল টাকার থেকেও যদি কিছু অংশ বাদ দিয়ে আমাদের দিতো আর তাদের আলু নিয়ে যেতো তাহলে হয়তো সময়মতো আমরা নতুন মৌসুমের জন্য হিমাগারগুলো প্রস্তুত করতে পারতাম।

সরেজমিনে টঙ্গিবাড়ী ও মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি হিমাগারের ভিতরে ও হিমাগারের পাশে পচাঁ আলুর স্তুপ। দীর্ঘদিন হিমাগারে আলু সংরক্ষনের কারণে বস্তাগুলো পঁচে ফেটে যাচ্ছে এবং ভালো আলুর সাথে পচাঁ আলু এক সাথে বের হচ্ছে।

মুন্সিগঞ্জ সদর ও টঙ্গিবাড়ী উপজেলার বেশ কিছু হিমাগার ঘুরে দেখা যায়, এ মৌসুমে হিমাগারগুলো থেকে নামে মাত্র আলু বের হচ্ছে। কিন্তু হিমাগার কর্তৃপক্ষ বলছে, এখনো প্রচুর পরিমাণ আলু হিমাগারে মজুদ রয়েছে। আলু বর্তমানে ৪ থেকে ৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে যা ছিল ৬ থেকে ৭ টাকা । ৫০ কেজি এক বস্তা আলু বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। অথচ হিমাগার ভাড়া ৩০০ টাকা। হিমাগার ভাড়াসহ উৎপাদনসহ খরচ পড়েছে ১৮ থেকে ২০ টাকা। দিন দিন আলুর দাম আরো কমছে।

আলু পাইকার হাজী আব্দুল হাই দেওয়ান বলেন, আলু কিনে হিমাগারে রেখেছিলাম। এখন কেনার মতো কেউ নেই। তাই নিজের আলু নিজেই আড়তেই নিয়ে যাচ্ছি। যা বিক্রি করতে পারলাম।

আলু ব্যাবসায়ী মো. রতন বলেন, গত সপ্তাহে ৬ থেকে ৭ টাকা কেজি দরে হিমাগার হতে আলু কিনেছি। কিন্তু এখন ৪ থেকে ৫ টাকা কেজি দরে কিনেছি। তারপরেও আলু বিক্রি করে লোকসান হচ্ছে।

টঙ্গিবাড়ী উপজেলার সানোয়ারা ও নুর কোল্ডস্টোরের সুপার ভাইজার ইউসুফ হোসেন বলেন, আমাদের হিমাগারে এখনো ১৭ হাজার বস্তা আলু রয়েছে। এখন আর আলু নিতে হিমাগারে আসছে না আলু মালিকরা। আমরা আলু রাখার শর্তে ঋণ দিয়েছিলাম কিন্তু ঋণের সুদতো দূরের কথা আসল টাকাও পাচ্ছি না। যদি লোনের আসল টাকার কম দিয়েও আলু নিয়ে যেত তাহলে আমরা আলু দিয়ে দিতাম। কিন্তু কেউ আমাদের সাথে যোগাযোগই করছে না।

মুন্সিগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ৩৭ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছিল। উৎপাদন হয়েছিল প্রায় ১৩ লাখ টন আলু। এর মধ্যে কৃষকরা সাড়ে ৫ লাখ টন আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করেছেন।

মুন্সীগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. খুরশীদ আলম বলেন, গত বছর চাহিদার তুলনায় আলুর উৎপাদন বেশি হয়েছিল। বিকল্প ব্যবহার না বাড়ায় আলুর এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads