জেলার মতলব উত্তর উপজেলার দেওয়ানজীকান্দি গ্রামের বাচ্চু মোল্লার বড় ছেলে মাসুদ। ১৯৯০ কিংবা ১৯৯১ সালে দিকে তার চাচা খোরশেদ মোল্লা সঙ্গে ঢাকা মুগদা পাড়ায় বেড়াতে যায়। ঢাকা আসার একদিন পর চাচাতো ভাই বোনদের সঙ্গে রাস্তায় খেলতে খেলতে হারিয়ে যায় মাসুদ। ৫/৬ বছরের মাসুদ তখন অনেক খুঁজেও নিজের চাচার বাসা আর চিনতে পারেনি। পরিবারের কতো আহাজারি তখনকার সময় পত্রিকায় হারানো বিজ্ঞপ্তি দিয়েও, ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করেও খোঁজ মিলেনি মাসুদের। দীর্ঘ তিন দশক পুত্র শোকে ভুগে পরিবারটি। কিছু দিন আগে একটি ইউটিউব চ্যানেলে একটি অনুষ্ঠানে নিজের আপন ঠিকানা খুঁজতে আসে মাসুদ। সেখানে এসে নিজের হারিয়ে যাওয়া অতীতের স্মৃতি যতটুকুু মনে ছিলো তা তুলে ধরে। ৫/৬ বছরের বাচ্চা মাসুদ কিছু স্মৃতি মনে রাখতে পারলেও, মনে রাখতে পারেনি নিজের জন্ম স্থান চাঁদপুরের কথা। হারিয়ে যাওয়া পর সে এতটুকু-ই বলতে পেরেছিলো যে তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়া, এবং সে চাচার সঙ্গে লঞ্চে করে ঢাকা এসেছে। এরপর হারিয়ে যায় পরিবার থেকে ২৯ টি বছর।

আরজে কিবরিয়ার অনুষ্ঠান ‘আপন ঠিকানা’ ১৬ নাম্বার এপিসোড প্রকাশিত মাসুদের পরিবার হারানোর কথা বলে। পরে তা জানতে পারে মাসুদের পরিবার। আরো জানা যায়, মাসুদ যে মা, বাবার কাছে এই দীর্ঘ ২৯ বছর পর্যন্ত থেকেছে যাদের কাছে বড় হয়েছে তার সেই মা, বাবা কেউ-ই বেঁচে নেই। অনুষ্ঠানটি দেখার পর নানা মাধ্যমে মাসুদের পরিবার যোগাযোগ করে, আরজে কিবরিয়া এবং মাসুদের সঙ্গে। অবশেষে আর. জে কিবরিয়ার স্টুডিও-তে মাসুদের সঙ্গে তার পরিবারের মিল ঘটিয়ে দেয় আরজে কিবরিয়া। যদিও অনেক প্রমাণ বা তথ্যাদি হাতে পেয়েই সে গত শনিবার দীর্ঘ ২৯ বছর পর পরিবারের কাছে মাসুদের পরিচয় করিয়ে দেয়। মাসুদের জীবনের হারিয়ে যাওয়া ঠিকানা বুঝিয়ে দেয়। দীর্ঘ ২৯ বছর পর নিজের ছেলে কে পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে কান্নায় ভেঙে পরে মাসুদের মা বাবা। দীর্ঘ ২৯ বছর পর হারানো ছেলেকে পেয়ে অনেক খুশি মাসুদের পরিবার।