• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪২৯
উদ্বোধনের আগেই সড়কে ফাটল

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

সরকারের ২৫ কোটি টাকা গচ্চা

উদ্বোধনের আগেই সড়কে ফাটল

  • প্রকাশিত ২০ মে ২০২১

মুহাম্মদ আমজাদ হোসাইন, সিলেট 

উদ্বোধনের আগেই ফাটল দেখা দিয়েছে সিলেট-জগন্নাথপুর সড়কে। এতে সরকারের ২৫ কোটি টাকা গচ্চা যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কয়েক লাখ মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার দীর্ঘদিনের স্বপ্নও ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। নতুন কাজ হওয়া ওই সড়কের ভাঙনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে ক্ষোভের ঝড় ওঠে। এক মিনিট চার সেকেন্ডের ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে দেখা যায়, সিলেট-জগন্নাথপুর সড়কের জগন্নাথপুর অংশের ভবেরবাজার সেতু এলাকায় পাকা সড়কের বিভিন্ন অংশে ফাটল সৃষ্টি হওয়ায় ব্লক থেকে পাকাসড়ক বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

স্থানীয় যুক্তরাজ্য প্রবাসী ছাত্রলীগ নেতা মাসুম হোসেনের ফেসবুক আইডি থেকে ভিডিওটি আপলোড করা হয়। তিনি লেখেন, ‘ভাঙনের দৃশ্যটি দেখে খুবই কষ্ট পেলাম। উদ্বোধনের আগেই এক মাস যেতে না যেতে আমাদের বহুদিনের কাঙ্ক্ষিত সড়কটি ভেঙে যাচ্ছে। দেশের বাহিরে থাকলেও নিজের এলাকার প্রতি সব সময় ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা রয়েছে। নিজ এলাকায় নিম্নমানের কাজ করে সরকারি অর্থ লুটপাট মেনে নেওয়া যায় না। তাই অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হতে হবে।’

ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর জগন্নাথপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি উপজেলা আওয়ামী লীগের সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক মুজিবুর রহমান মুজিব তার ফেসবুক আইডিতে ভাঙনের ছবিসহ একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। মুজিবুর রহমান লিখেছেন, ‘জগন্নাথপুর-বিশ্বনাথ-রশিদপুর সড়কের জগন্নাথপুর অংশ সংস্কারে বিগত দিনে দুই/তিন কোটি টাকা বরাদ্দ হতো। এবার কাজের মান ভালো করতে পরিকল্পনামন্ত্রী ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেন। কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা দুর্নীতিবাজ এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী আমির হোসেনের কারণে সড়কটি উদ্বোধনের আগেই ভেঙে গেল, যা আমাদের বিব্রতকর ও লজ্জায় ফেলেছে।’

তবে সড়কের কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা জগন্নাথপুর উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী আমির হোসেন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সড়কের পাশে একটি দেয়াল থাকায় সেখানে বৃষ্টির পানি জমে কিছু ক্ষতি হয়েছে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে মেরামত করা হয়েছে।

জানা গেছে, ২০১৭ সালে সিলেট-জগন্নাথপুর (জগন্নাথপুর-বিশ্বনাথ-রশিদপুর) সড়কে বেহাল দশা দেখা দেয়। সংস্কারের অভাবে প্রায় অচল হয়ে পড়ে সড়কটি। এই সড়ক দিয়ে জগন্নাথপুরের প্রায় চার লাখ মানুষ বিভাগীয় সিলেট ও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করেন। স্থানীয়দের আন্দোলন ও পরিবহন শ্রমিকদের লাগাতার কর্মসূচির পর ২০১৯ সালে জগন্নাথপুর উপজেলা অংশের ১৩ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের জন্য দরপত্র আহবান করা হয়। এতে মাদারীপুরেরর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হামীম সালেহ (জেভি) অংশ নেয়। এ সময় দ্রুত সড়কের কাজ বাস্তবায়ন করতে ১০ শতাংশ অতিরিক্ত দরে ২৫ কোটি টাকায় তাদেরকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। সে অনুযায়ী ২০২০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে সড়কে কাজ শুরু করে চলতি বছরের ৩১ মার্চ কাজ শেষ করার কথা থাকলেও কাজ শেষ হয় ঈদের এক সপ্তাহ আগে। গত সোমবার পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সড়কের জগন্নাথপুর উপজেলা অংশের শেষ হওয়া কাজের উদ্বোধন করার কথা ছিল। কিন্তু মহামারী করোনায় বিধিনিষেধ থাকায় তা স্থগিত করা হয়। কিন্তু এখন উদ্বোধনের আগে ভেঙে যাওয়ায় তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে স্থানীয়দের মাঝে।

এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের জগন্নাথপুর উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম সারোয়ার বলেন, সড়কের কাজ চলমান রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও প্রচার হওয়ার পর সরেজমিনে দেখে ঠিকাদারকে ভাঙন অংশ সংস্কার করতে বলা হয়েছে। তবে তিনি দাবি করেন, কাজে কোনো অনিয়ম হয়নি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads