• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
মাতামুহুরী নদীতে তলিয়ে গেছে চকরিয়ার কোনাখালী-বদরখালী সড়ক

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

মাতামুহুরী নদীতে তলিয়ে গেছে চকরিয়ার কোনাখালী-বদরখালী সড়ক

  • মো. সাইফুল ইসলাম খোকন, চকরিয়া (কক্সবাজার)
  • প্রকাশিত ১৬ জুন ২০২১

টেকসই বেড়িবাঁধ না হওয়ার কারণে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার উপকুলীয় জনপদ কোনাখালী-বদরখালী সড়কটির সিংহ ভাগ অংশ মাতামুহুরী নদীতে তলিয়ে গেছে।

মাতামুহুরী নদীর ভাঙ্গনে বছরের পর বছর সড়কটি একেবারে সরু হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে ওই সড়কে সবধরনের যানবাহন চলাচল। এতে যাতায়াতের ক্ষেত্রে চরম দুর্ভোগে পড়েছে কোনাখালী ইউনিয়ন ছাড়াও উপকূলীয় জনপদের অন্তত লাখো মানুষ।

প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমের অবিরাম ভারী বর্ষণ ও মাতামুহুরী নদীতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের অস্বাভাবিক প্রভাব এবং সামুদ্রিক জোয়ারের পানির ধাক্কায় চলতি বছর সড়কটির অধিকাংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে পড়েছে। সড়কের ভাঙ্গা স্থান দিয়ে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছে সাধারণ মানুষ।

স্থানীয়রা জানায়, এ গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি ভাঙ্গন চলছে বিগত পাঁচ বছর ধরে। বর্তমানে সড়কটির দৃশ্যমান বেহাল দশা পরিলক্ষিত হলেও টেকসই প্রকল্প বাস্তবায়নে এলজিইডি কিংবা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কোন নজরদারি নেই বলে অভিযোগ তুলেছেন এলাকার জনসাধারণ।

সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা গেছে, চকরিয়া পৌরশহরের চিরিঙ্গা-জনতা মার্কেট হয়ে কোনাখালী ইউনিয়ন পর্যন্ত যান চলাচল উপযোগী থাকলেও কোনাখালীর বাঘগুজারাস্থ মাতামুহুরী নদীর উপর নির্মিত সেতু থেকে বাংলাবাজার হয়ে বদরখালী বাজার পর্যন্ত মাতামুহুরী নদীর তীর ঘেঁষেই সড়কটি চলে গেছে। প্রায় ১২ কিলোমিটার আয়তনের সড়কটির অন্তত এক কিলোমিটার সড়ক বর্তমানে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কোনাখালী-বাঘগুজারা-বদরখালী সড়কটি মূলত পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মিত বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। মানুষের যাতায়াত ও যানবাহন চলাচলের সুবিধার্থে এই বাঁধটি সড়ক হিসেবে ব্যবহারের জন্য বিগত ২০০৪ এবং ২০০৯ সালে দুই দফায় সড়কটিতে কার্পেটিং ও ঢালাইকাজ করে চলাচল উপযোগী করে দেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির মেরামত ও সংস্কার কাজে এগিয়ে না আসায় এ বেহাল দশা সৃষ্টি হয়েছে।

কোনাখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা সমাজ সেবক ডাক্তার নূরুল কবির বলেন, সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন কম হলেও প্রায় ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী এবং কোনাখালী-ঢেমুশিয়া ইউনিয়নের বিপুল জনসাধারণ যাতায়াতের ক্ষেত্রে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কিন্তু সড়কটি মেরামতের ব্যাপারে স্থানীয় চেয়ারম্যান, এলজিইডি ও পানি উন্নয়ন বোর্ড কোন ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছে না। দীর্ঘ ৯ বছর ধরে সড়কের বড় কোনো সংস্কার কাজ হয়নি।

কোনাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান দিদারুল হক সিকদার বলেন, সড়কটি মূলত আমার ইউনিয়নের রক্ষাকবচ হলেও বর্তমানে অনেকাংশ জুড়ে যানবাহন চলাচল সম্ভব হচ্ছে না। প্রতিবছর ভয়াবহ বন্যা এবং সমুদ্রের অস্বাভাবিক জোয়ারের প্রভাবে সড়কটি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। সড়কটি মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে।

এলাকাবাসী সড়কটি দ্রুত মেরামতের দাবি জানিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য জাফর আলম, উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী এবং ইউএনও সৈয়দ শামসুল তাবরীজসহ সংশিষ্ট প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন। ইতোমধ্যে ইউএনও সড়কটি পরির্দশন পরবর্তী প্রদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

চকরিয়া উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী কমল কান্তি পাল বলেন, সড়কটি টেকসইভাবে নির্মাণের জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। বাঘগুজারা সেতু থেকে বদরখালী পর্যন্ত সড়কটি মেরামতের বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা প্রেরণ করা হয়েছে।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী র্কর্মকর্তা সৈয়দ শামসুল তাবরীজ বলেন, নদীর তীরবর্তী সড়কটি সংস্কার এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে পাথরের ব্লক দ্বারা টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। আশা করি খুব শীঘ্রই বরাদ্দ সাপেক্ষে সংস্কার কাজ শুরু করা যাবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads