গাইবান্ধা সদরের ফিরোজ আলম। লেখাপড়ার জন্য গিয়েছিলেন চীনে। সেখানে এক সেমিনারে দেখা হয় প্রশিক্ষক চীনা নাগরিক ওয়াং লু ফিং সুফিরের সঙ্গে। প্রথমে পরিচয়, পরে ২০১১ সালে তা গড়ায় পরিণয়ে। লেখাপড়ার পাশাপাশি আমদানি-রপ্তানির ব্যবসা শুরু করেন এই দম্পতি। করোনাকালে তাদের কিছু সময় অবসর মেলে। আসেন বাংলাদেশে। চীন থেকে সঙ্গে আনেন বেশ কিছু মুরগির ডিম। চীনা নাগরিক সুফি শখের বশে গাজীপুরের কালিগঞ্জের নগরভেলা গ্রামে ১২ শতাংশ ভাড়া করা জমিতে গড়ে তোলেন মুরগির শেড। চীন থেকে আনা ওইসব ডিম থেকে ১৩ জাতের ৮৪টি বাচ্চার জন্ম হয়। বাচ্চাগুলো দিয়ে এসএস রেয়ার ব্রিড অ্যাগ্রো ফার্ম নামে একটি প্রতিষ্ঠান চালু করেন। এক বছরেই তাদের খামারের বিভিন্ন জাতের চীনা মুরগির সংখ্যা এখন সাড়ে তিন হাজারে দাঁড়িয়েছে। চাইনিজ সিল্কি, চাইনিজ দেশি, প্রকৃত কাদারনাথ, চাইনিজ বড় জাতের মুরগির জাত হু হেই জী, হং অ জি, চীনা টার্কি দেশে প্রথমবারের মতো পালন হচ্ছে সুফির অ্যাগ্রো ফার্মে। এসব মুরগির জন্য বাংলাদেশের আবহাওয়া ও তাপমাত্রা খুবই অনুকূল।
সুফি বলেন, এসব মুরগি খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়। আড়াই কেজি ওজন হতে সময় লাগে মাত্র দুই মাস। এত দ্রুত খুব কম মুরগিই বৃদ্ধি পায়। এসব মুরগির খাবারের খরচ দেশে বাণিজ্যিকভাবে পালন করা অন্য মুরগির চেয়ে প্রায় ৭০ শতাংশ কম। ফলে বাণিজ্যিকভাবে এ মুরগি চাষের সম্ভাবনা অনেক বেশি। শুধু তৃণ ও শাকসবজি খেয়েও এসব মুরগি বড় হতে পারে। তিনি বলেন, ডিম দেওয়া মুরগিগুলো মাত্র ৪ মাস বয়সে ডিম দেওয়া শুরু করে। একটি মুরগি বছরে ৩৫০টি পর্যন্ত ডিম দিতে পারে।
ফিরোজ আলম জানান, তার স্ত্রী চীনা নাগরিক সুফি একজন সফল নারী উদ্যোক্তা। তাদের সংসারে তিন ছেলে রয়েছে। বড় ছেলে চীনে লেখাপড়া করছে। তিনি, স্ত্রী ও দুই ছেলে বর্তমানে বাংলাদেশেই অবস্থান করছেন।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এসএম উকিল উদ্দিন বলেন, আমাদের আবহাওয়া চীনা জাতের মুরগি পালনের উপযুক্ত। ব্যক্তি উদ্যোগে দেশে চীনা জাতের মুরগি পালনের উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসার। আমরা খবর পেয়ে ইতোমধ্যে খামারটি পরিদর্শন করেছি।