• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪২৯
ডাক্তার আসেন ১০টার পর চলে যান ১টার আগেই

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

মানিকগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল

ডাক্তার আসেন ১০টার পর চলে যান ১টার আগেই

  • নুরুজ্জামান, মানিকগঞ্জ
  • প্রকাশিত ২৮ জুলাই ২০২১

মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট থাকায় কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অনেক চিকিৎসক এখানে চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন। রুটিন অনুযায়ী সকাল ৮টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত ডিউটি থাকলেও মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ও কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধিকাংশ চিকিৎসক আসেন ১০টার পরে। অনেকেই আবার ডিউটিতে যোগ দিয়েই ওয়ার্ড রাউন্ডে যান। জেলার একমাত্র আধুনিক সরকারি হাসপাতাল হওয়ায় দূর-দূরান্ত থেকে মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের সাধারণ রোগীরা আসেন চিকিৎসা নিতে। এসব পরিবারের লোকজন হাসপাতালে এসেই ভোগান্তিতে পরেন। মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের এমন চিত্র নিত্যদিনের। এখানে অধিকাংশ ডাক্তাররা আসেন প্রায় ১০টার দিকে আবার চলে যান ১ টার আগেই। সাধারণ অসহায় রোগীরা সরকারি হাসপাতালে এলেও যন্ত্রপাতি নেই বা নষ্ট হয়ে গেছে এমনসব অজুহাতে রোগীদের প্রাইভেট চেম্বারে যেতে বাধ্য করা হয়। সেখানে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা ভিজিট দিয়ে ডাক্তার দেখাতে হয় গরীব অসহায় রোগীদের।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নতুন ভবনের ২১৩ নং রুমের সামনে রোগীরা জটলা বেঁধে দাড়িয়ে আছে। ঘড়ির কাটা তখন প্রায় দশটার দিকে। ২০৪ নং রুমের সার্জারি বিভাগের সামনেও দাঁড়িয়ে আছেন অনেক রোগী, কিন্তু কোনো রুমেই চিকিৎসক নেই। এমনটাই নজরে পড়ে হাসপাতালের অধিকাংশ ডাক্তারের রুমের সামনে। গত শনিবার দুপুর ১২টার দিকে ২১২ নং রুমের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. দিলীপের চেম্বারে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। বাইরে অনেক রোগী টিকিট হাতে ডাক্তারের অপেক্ষায় আছে। ওই রুমে থাকা ডাক্তারের সহকারী জানান, স্যার সাড়ে ৯টার দিকে আসছে। তিনি এখন রাউন্ডে আছেন। রাউন্ড শেষে আউটডোরের রোগী দেখবেন। এরপর বেলা ১টা ২০ মিনিটে সেই চেম্বারে গেলে রুমটি তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখা যায়। পাশেই থাকা হাসপাতালের ঝাড়ুদার নাসিমা বলেন, ডাক্তার সাহেব একটু আগে চলে গেছেন।

সকাল ১০টা দশ মিনিটে অর্থোপেডিকস বিভাগের ২১৪ ও ২১৫ নং রুমের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা রোগীদের মধ্য থেকে কথা হয় সাটুরিয়া উপজেলার পারতিল্লি এলাকার জামাল ও সদর উপজেলার বালিরটেক থেকে আসা সিজান রিফাত নামে দুই রোগীর সঙ্গে। তাদের দুজনেরই হাত ভাঙা। সিজানের মা বলেন, বালিরটেক থেকে এসেছেন সকাল ৮টার সময়। কিন্তু দশটার বেশি বেজে গেলেও তখনো ডাক্তার আসেনি। ছেলেটা হাত ভাঙা ব্যাথায় কাতরাচ্ছে।

ডিউটিতে দেরি করে আসার বিষয়ে জানতে চাইলে কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. দিলীপ কুমার বলেন, ডিউটিতে কখন যাবো আসবো সে বিষয়ে আপনাদের কাছে বলবো কেন? আপনার কিছু জানার থাকলে প্রিন্সিপালের সঙ্গে কথা বলেন।

এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ ২৫০শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আরশাদ উল্লাহ বলেন, কোনো ডাক্তার দেরি করে আসলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তাররা দেরি করে আসলে আমরা তেমন চাপ দিতে পারি না। এ বিষয়ে কর্ণেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা. জাকির হোসেন বলেন, বিষয়টা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব। এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল লতিফ বলেন, সিভিল সার্জনের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টা খতিয়ে দেখবো।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads