• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
মেঘনায় মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ

ফাইল ছবি

সারা দেশ

মেঘনায় মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ

  • প্রকাশিত ৩১ জুলাই ২০২১

মোস্তাফিজুর রহমান টিপু, লক্ষ্মীপুর

মেঘনা নদীতে জেলেদের জালে মিলছে না প্রত্যাশিত রূপালি ইলিশ। এতে করে জেলে সমপ্রদায়ের দিন কাটছে চরম হতাশায়। পরিবার নিয়ে ভালো নেই তারা। এদিকে নদীতে ইলিশ না পাওয়ার কারণ হিসেবে এ বছর অতি খরা, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও নাব্যতা সংকটকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, জেলা মৎস্য অফিসের তালিকা অনুযায়ী জেলার পাঁচটি উপজেলায় ৪২ হাজার জেলে রয়েছে। তবে এ জেলায় আড়তদার ও মৎস্য ব্যবসায়ীসহ অর্ধলক্ষাধিক জনগোষ্ঠী জেলে ও মৎস্যজীবী হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করছেন। জেলায় চলতি বছর ইলিশ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৫ হাজার মেট্রিক টন। এখানকার ইলিশ সুস্বাদু হিসেবে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ অন্য জেলায় এর চাহিদা রয়েছে ব্যাপক।

সরেজমিনে দেখা যায়, সদর উপজেলার মজুচৌধুরীরহাট, বুড়িরঘাট, চেয়ারম্যানঘাট, শাহজালাল মাছঘাট, কমলনগরের মতিরহাট ঘাট, বাত্তির খালঘাট, লূধয়াঘাট, রামগতির আলেকজান্ডার মাছঘাট, রায়পুরের আলতাফ চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি মাছঘাট ঘুরে দেখা গেছে পর্যাপ্ত ইলিশ নেই। এসব এলাকার ঘাটগুলোতে প্রতি বছর এ সময়ে মৎস্যজীবী জেলে, আড়তদার ও ক্রেতারা ইলিশ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করতেন বলে জানান স্থানীয়রা। ইলিশের ভরা মৌসুমে এসে এবার ভিন্ন চিত্র এসব এলাকায়। আড়তদারদের কেউ কেউ অলস সময় পার করছেন এখন। আবার কেউ অন্য ছোট মাছ বিক্রি করতে দেখা গেছে।

এসব এলাকার জেলেরা নৌকা, ট্রলার ও জাল নিয়ে নদীতে যাওয়ার প্রস্তুতি আর নদীতে অবস্থানের দৃশ্যও চোখে পড়ে। তবে তাদের জালে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ মিলছে না বলে জানান তারা।

স্থানীয় জেলে জহির, রহিম, সহিদ বেপারী, সায়েদ আলী ও হারিছ সর্দারসহ বেশ কয়েকজন জেলের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, প্রতিদিন ভোরে একটি ট্রলারে সাত থেকে আটজন করে জেলে জাল নিয়ে নদীতে যান। ট্রলারের তেল ও নিজেদের খাবারে পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা খরচ হয় তাদের। কিন্তু নদীতে ফেলা তাদের জালে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ মিলছে না এবার। এতে করে খরচ উঠাতেও হিমশিম খেতে হয় তাদের।

স্থানীয় আড়তদার ফিরোজ মেম্বার, মনির, শাহজালাল, সালেহ আহম্মদ ও শাহজাহান মেম্বার জানান, গেল বছরের তুলনায় ইলিশ মাছ একেবারেই কম। অনেক জেলে নদী থেকে শূন্য হাতে ফিরছে। কেউ কেউ দু-চারটি ইলিশ নিয়ে ফিরলেও খরচ পোষায় না। যা আসে তার মধ্যে বড় ইলিশ ১৩শ থেকে ১৪শ টাকা কেজি, মাঝারিটা ৬শ থেকে ৭শ টাকা, ছোট ইলিশ ৩শ থেকে ৪শ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তারা।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বিল্লাল হোসেন জানান, এবার ২৫ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু এখনো আশানুরূপ ইলিশ মিলছে না। এর কারণ হিসেবে তিনি বলছেন, এ বছর অতি খরা, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও নদীতে নাব্যতা সংকট রয়েছে তাই ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। তবে আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে ভালো ইলিশ পাওয়া যাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads