• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
তিন মাসে ৩০ প্রাণহানি

প্রতীকী ছবি

সারা দেশ

তিন মাসে ৩০ প্রাণহানি

  • জাহাঙ্গীর আলম, চাটমোহর (পাবনা)
  • প্রকাশিত ১৪ আগস্ট ২০২১

মণিরামপুরে পারিবারিক কলহের জেরে গত তিন মাসের ব্যবধানে ৩০ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে শতবর্ষী বৃদ্ধ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুও রয়েছে। পারিবারিক কলহে অতিরিক্ত চাপ কিংবা হতাশাগ্রস্ত হয়ে নিজেকে হারিয়ে ফেলায় নিজেকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এ প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।

জানা গেছে, গত ৩ মে উপজেলার চাকলা মাঠপাড়া আবু মুছার ছেলে কলেজছাত্র রাকিব হাসান (২০), ২২ মে জুড়ানপুর গ্রামের কাজীপাড়ার মজনু সরদারের মেয়ে রীনা বেগম (৩০), ২৬ মে পলাশীর অলি মোহাম্মাদের ছেলে জহির হোসেন (৪৩) ও কাঁঠালতলার অশোক দাসের স্ত্রী ডলি দাস (৩২), ২৭ মে একই গ্রামের সুখদেবের ছেলে অশোক কুমার (৪৫) ও নিশ্চিন্তপুরের মামুন হোসেনের স্ত্রী লতা বেগম (৩৫), ৩০ মে কপালিয়ার নজরুল ইসলামের স্ত্রী ফতেমা বেগম (৪২), ১০ জুন চিনাটোলার দেব কুমারের ছেলে বৃন্তিলা পাল (১৭), ১৮ জুন খর্দ্দো গাংড়া গ্রামের টিটু হোসেনের ছেলে লিথুন হোসেন (১১), ২৪ জুন সুজাতপুরের রতন বিশ্বাসের ছেলে অঞ্জন বিশ্বাস (৫৫), ২৫ জুন ঘুঘুরাইলের ঝন্টু সরদারের ছেলে করিম সরদার (৫৫), ২৮ জুন সুন্দলপুরের সামাদ বিশ্বাসের ছেলে হাফিজুর রহমান (৩৫) ও হাজরাকাটির সাখাওয়াত আলী মোড়লের স্ত্রী রুমা খাতুন (২২), ২ জুলাই রতনদিয়ার এনামুল হকের স্ত্রী কোহিনুর খাতুন (২৬), ৩ জুলাই ফুলবাড়িয়ার মৃত জানাতি বিশ্বাসের ছেলে রতন বিশ্বাস (১০), ৪ জুলাই খানপুরের হাফিজুর রহমানের ছেলে শরিফুল ইসলাম (২১), ৮ জুলাই চাপাকোণার হীরক মন্ডলের ছেলে লংকেশর মন্ডল (৭২), ১৬ জুলাই বালিয়াডাঙ্গার অনন্ত দাসের ছেলে বিপ্লব দাস (২৫), ২১ জুলাই খালিয়ার আব্দুল মোমিনের ছেলে মামুনুর রশিদ (৪০) ও শ্যামনগরের শহিদুল ইসলামের ছেলে রনি আহম্মেদ (২২), ২২ জুলাই মনোহরপুরের আকাম মহলদারের ছেলে শাহানুর রহমান (৩৫), ২৩ জুলাই সুবলকাটির মৃত মতিয়ার রহমানের স্ত্রী মোমেনা বেগম (৪০) ও হানুয়ারের মিজানুর রহমানের মেয়ে সুরাইয়া খাতুন (২৮), ২৬ জুলাই সমসকাটির মুনঝুর বিশ্বাসের ছেলে সুজন বিশ্বাস (২৫), ১ আগস্ট বাটবিলার আব্দুর রহিম গাজীর ছেলে আব্দুর রাজ্জাক গাজী (৬০), ৩ আগস্ট সিংহের খাজুরার সুখচাঁদ দফাদারের ছেলে ইসমাইল হোসেন (২৪), ৬ আগস্ট পাঁচাকড়ির শৈলন মন্ডলেল মেয়ে বিশাখা মন্ডল (৩৫), ৭ আগস্ট দেবিদাসপুরের করিম গোলদারের ছেলে আমির আলী গোলদার (৭০) এবং ৮ আগস্ট বাকোশপোলের দীপক বিশ্বাসের স্ত্রী অর্চনা বিশ্বাস (৪০)। এছাড়া গত ৭ আগস্ট স্বামীর পরকীয়া নিয়ে বিবাদের জেরে তিন বছরের মেয়ে কথাকে এক রশিতে ঝুলিয়ে মারার পর আরেক রশিতে আত্মহত্যা করেন মা পিয়া মন্ডল (২২)। এ ঘটনায় স্বামী কলেজ শিক্ষক কণার মন্ডলের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা হয়েছে। পুলিশ ওই দিনই স্বামী কণার মন্ডলকে আটক করে।

পারিবারিক সহিংসতায় প্রাণহানি ঘটনা ঘটছে কেন-এমন প্রশ্নের জবাবে যশোর সরকারি এমএম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হামিদুল হক শাহিন বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে কারো ওপর জোর করে বল প্রয়োগ করা হলে, তখন সেই অতিরিক্ত চাপে ভেঙে পড়ে, গভীর হতাশায় মানুষ যখন জীবনের মূল্য খুঁজে পাই না কিংবা অভাবগ্রস্ত হয়ে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হলে তখন নিজেকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

মণিরামপুর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, যেহারে আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে, তা চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু চলতি মাসেই ১০ জনের আত্মহত্যার ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads