• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮

সারা দেশ

সাফারি পার্কে এবার জলহস্তী শাবকের জন্ম

  • শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৬ নভেম্বর ২০২১

গাজীপুরের শ্রীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে বহুদিন পর ফের একটি জলহস্তী শাবকের জন্ম হয়েছে। আগেও একাধিক শাবকের জন্ম হয়েছিল তবে সেগুলা বাঁচেনি। বাবা জলহস্তীর নিষ্ঠুর থাবায় প্রাণ হারায় সে শাবকগুলো। সেগুলো পুরুষ হওয়াতে এমন নিষ্ঠুরতার শিকার হয় জলহস্তী শাবকগুলো। তবে এবারের শাবকটি যদি স্ত্রী শাবক হয়ে থাকে তবে জলহস্তীর সংখ্যা বাড়তে পারে। কিন্তু এটিও যদি পুরুষ শাবক হয় তবে মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে এ শাবকটি। এখনো শাবকের লিঙ্গ নির্ণয় করা যায়নি। তাই শাবকটি নিয়ে একটি সংশয় থেকেই যাচ্ছে।

গত মাসের শেষের দিকে জলহস্তী শাবকের জন্ম হয়েছে বলে ধারনা পার্ক কর্তৃপক্ষের। জন্মের পরে মা বাবার সঙ্গে পানিতে থাকতে দেখা গেছে জলহস্তী শাবকটিকে। কখনো কখনো সন্ধ্যার পরে পাড়ে উঠতে দেখা যায়। এ সময় খাবার খেতেও দেখা গেছে শাবকটিকে। দিনের বেশি সময়ই পানিতে ডুবে থাকে জলহস্তী শাবক।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, শিশু পার্কে যেতে সড়কের পাশে উঁচু দেয়াল ঘেরা একটি জলবেষ্টিত জলাধারায় জলহস্তী শাবকটি বাবা মার সাথে খুঁনসুটিতে ব্যস্ত সময় পার করছে। কখনো মায়ের পাশ কাটিয়ে এক ডুবে বাবার সামনে ভেসে উঠছে ফের ডুব মেরে মায়ের কাছে ভেসে উঠে। এ সময় অনেক দর্শনার্থীরাও এ দৃশ্য দেখে দারুন আনন্দ পাচ্ছে। কখনো কখনো উচ্চ শব্দে জলহস্তীরা দর্শনার্থীদের ভয় দেখায়। বিকট শব্দে লেকের পানিতে ঢেউ তুলে বাবা জলহস্তী । এ সময় মায়ের পাশে থাকা শাবকটি ঢেউয়ের তালে নাচতে থাকে।

আগত দর্শনার্থীরা জানান, জলহস্তী শাবকটি মাঝে মাঝে পানির নিচ থেকে মাথা ভাসিয়ে বড় দুটির সঙ্গে খেলা করে। জলেই থাকে বেশি। পাড়ে উঠেনা জলহস্তী শাবকটি। বড় দুটি মাঝে মাঝে বিকট শব্দে পানিতে ঢেউ তুলে। শিশুরা দারুন আনন্দ পাচ্ছে জলহস্তীর ডুবাডুবিতে। অনেক সময় জলহস্তীর গায়ে পাখি বসে থাকে যা দেখতে দারুন সুন্দর লাগে। সাফারি পার্কে অন্য প্রাণীগুলোও দেখতে দারুন লাগে। শিশুসহ সব বয়সের দর্শনার্থীদের দারুন উপভোগের একটি জায়গা এ সাফারি পার্ক।

সাফারি কিংডমের দায়িত্বে থাকা ওয়াইল্ড লাইফ সুপার ভাইজার মো. আনিসুর রহমান জানান, গত মাসের ২১ তারিখে শাবকটি আমাদের নজরে আসে। এর পর থেকেই বিশেষ ভাবে যত্ন ও খাবার বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। জলহস্তী সাধারণত তৃণভোজী প্রানী। সবুজ ঘাস,শাক সবজি এদের প্রিয় খাবার। এ নিয়ে পার্কে শাবকসহ জলহস্তী তিনটি। তিনি জানান,জলহস্তী আফ্রিকান প্রাণী। এগুলো আফ্রিকা থেকে পার্কের জন্য আনা হয়েছিল। কেনিয়া তানজানিয়াসহ আফ্রিকান রিজনের জলহস্তীর অবাধ বসবাস। জলহস্তী কাঁদা পানিতে থাকতে বেশি পছন্দ করে।

তিনি জানান, জলহস্তী ২৪০ থেকে ২৪৩ দিন গর্ভকালীন সময় পার করে সন্তান জন্ম দেয়। সাধারনত একটি শাবকই জন্ম দেয় জলহস্তী। তবে একাধিক শাবক জন্মের রের্কড রয়েছে। স্ত্রী জলহস্তী পাঁচ থেকে ছয় বছরে আর পুরুষ জলহস্তী ছয় থেকে সাত বছরে প্রাপ্ত বয়স্ক হয়। এরা ৪০ থেকে ৫০ বছর আয়ুকাল পার করে। ক্যাপটিভে আরো বেশি বেঁচে থাকতে পারে।

তিনি আরো জানান, পুরুষ জলহস্তীরা সাধারনত পুত্র সন্তান জন্ম নিলে তাদের প্রতিদ্বন্দী মনে করে। এক সময় পুরুষ শাবককে বাবা নিয়েই নিষ্ঠুর ভাবে হত্যা করে নিজের অবস্থান নিরাপদ রাখে। বাবা জলহস্তীদের এটা নিষ্ঠুর এটি প্রাকৃতিক স্বভাব।

সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (এসিএফ) মো.তবিবুর রহমান জানান, আমরা এখনো শাবকটির লিঙ্গ নির্ণয় করতে পারিনি। এ নিয়ে সাফারি পার্কে প্রাপ্তবয়স্ক একটি নারী একটি পুরুষ জলহস্তী রয়েছে। এগুলো আফ্রিকা থেকে আনা হয়েছিল। নতুন করে একটি শাবকের জন্ম হলো। তিনি বলেন শাবকটি যদি স্ত্রী হয় তবে সার্ভাইব করার সুযোগ আছে। বাবা জলহস্তী খুব হিংসুটে ও ভয়ঙ্কর হয়ে থাকে। বিশেষ করে পুত্র সন্তান জন্ম নিলেই এক সময় প্রতিদ্বন্দী মনে করে মেরে ছেলে। কিন্তু শাবকটিও পুরুষ হলে ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। তবে আগত দর্শনার্থীরা জলহস্তী শাবক দেখে বেশ আনন্দ উপভোগ করছে। বিশেষ করে শিশুরা বেশি আনন্দ পাচ্ছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads