• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
কিভাবে শিশু ছেলেদের মানুষ করব

সংগৃহীত ছবি

সারা দেশ

কিভাবে শিশু ছেলেদের মানুষ করব

  • প্রকাশিত ১০ জানুয়ারি ২০২২

সাঘাটা (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি

সাঘাটা উপজেলা সদর বোনারপাড়া-জুমারবাড়ী সড়ক। এই সড়কের দুরত্ব উপজেলা পরিষদ থেকে ১৪ কি.মি। দুইপাশেই বাড়ি-ঘর, দোকানপাট রয়েছে। কিছু স্থানে ফাঁকাও রয়েছে। সব সময় সড়কে যানবাহন ও মানুষের আনাগোনা বিরাজমান। ঈদ বা অন্য কোনো দিনের মতো উৎসাহ উদ্দিপনার কমতি নেই। সর্বত্রই চলছে ভোটের আনন্দ। এই ভোটের আনন্দ ভাগ করতে অনেকেই দূর-দূরান্ত থেকে ভোট দেওয়ার জন্য ভোটকেন্দ্রে আসছেন।

দিনটি ছিল গত ৫ জানুয়ারি। দেশের অন্য স্থানের মতোই এখানেও ছিল ভোটের দিন। যে যার মতো ভোট দেওয়ার জন্য হাসি মুখে ভোট দিয়ে চলে যাচ্ছেন। কে জানে ওই দিন এমন ঘটনা ঘটবে। এ ঘটনায় এলাকায় শোকে মূহ্যমান এলাকার মানুষজন। কারো মুখে আর সেই হাসি নেই। চোখে মুখে শুধু শোকের ছাপ। এমনি করে একটু দূরে গিয়ে দেখা গেল নিহত তাহেরের বৃদ্ধ বাবা, অবুঝ দুই শিশু সন্তান ও তার স্ত্রীকে। বাড়ির সামনেই দাঁড়াতেই নিহত তাহেরের বাবা হাউমাউ করে কেঁদে কেঁদে বলছে, ‘আমার ছেলেকে কেন খুন করা হলো? আমি এর বিচার চাই।’ 

অবুঝ দুই শিশু পারভেজ ও নীরব বুঝতেই পারছে না যে, তাদের বাবা আর নেই। একটু পাশেই নিহতের স্ত্রী নাদরীন বেগম। চোখের জ্বলে ছলছল চোখে শুধু ফেলফেল করে তাকিয়ে বলছেন, ‘আমার স্বামী ভোটের দিন খুন হওয়ার পর থেকেই নিরুপায় হয়ে পড়েছি। আমার স্বামীকে হারিয়ে আমি এখন দিশেহারা। কি করব ভেবে পাচ্ছি না। গত চার দিন ধরে পাড়া প্রতিবেশিদের চালে দুই সন্তান ও শ্বশুরকে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছি। আমার অভাব কে পূরণ করবে? কিভাবে শিশু ছেলেদের মানুষ করব?’ 

তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী খুন হওয়ার আগে বলে গিয়েছিল, ভোট দিয়ে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরব, তোমরা চিন্তা করব না।’ 

এমন হৃদয় বিদারক ঘটনাটি ঘটেছিল সাঘাটা উপজেলার জুমারবাড়ি ইউনিয়নের জুমারবাড়ি আদর্শ কলেজ ভোট কেন্দ্রে। এই ঘটনাটি ঘটে ভোট চলাকালে বিকাল সাড়ে ৩টায়। মানুষের হই হুল্লুরে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে ওই ভোট কেন্দ্রটি। উপজেলার মামুদপুর গ্রামের ওমর আলীর ছেলে তাহের ভোট দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে ভোট কেন্দ্রের পাশে ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় ওঁৎ পেতে থাকা প্রতিপক্ষ মেম্বার প্রার্থী রাসেল মাহমুদ ও তার সঙ্গীরা নির্মমভাবে অস্ত্র দিয়ে তাকে কুপিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। মুহূর্তের মধ্যেই আর্তচিৎকারে লোকজন ছুটে এসে উদ্ধার করলেও তাকে আর বাঁচানো যায়নি। ওই ঘটনার কথা চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে খুনিরা ততক্ষণে পালিয়ে যায়। পরে সাঘাটা থানা পুলিশ নিহত তাহেরের লাশ উদ্ধার করে গাইবান্ধা মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। তাতে মেম্বার প্রার্থী রাসেল মাহমুদসহ আসামি করা হয়েছে ৩০ জনকে। এছাড়াও অজ্ঞাত ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়। ঘটনার পাঁচদিন অতিবাহিত হলেও কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এ বিষয়ে সাঘাটা থানার ওসি মতিউর রহমান বলেন, এ ঘটনায় খুনিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads