• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
শার্শার সেই হেলাল সুযোগ পেয়েছে সরকারি বাংলা কলেজে

ছবি: বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

শার্শার সেই হেলাল সুযোগ পেয়েছে সরকারি বাংলা কলেজে

  • নয়ন সরদার, শার্শা প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৯ জানুয়ারি ২০২২

নাম হেলাল উদ্দিন (২১)। পযার্য়ক্রমে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে এখন অনার্সে সমাজকর্ম বিষয়ে চান্স পেয়েছেন সরকারি বাংলা কলেজে। হেলালের পড়ালেখার শুরু থেকে পরিবার ও সহপাঠীদের কাছ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা পেয়েছেন। হয়তো তার অন্যদের মত হাতের ১০টি আঙুল নেই ও হাতের কবজির নিচ অংশ নেই বললেই চলে। তারপরও সে নিজের মনোবল ও ইচ্ছে শক্তিকে কাজে লাগিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে।

হেলাল যশোরের শার্শা উপজেলার নিজামপুর ইউনিয়নের কন্দপপুর গ্রামের লিকনুর রহমান ও সামিরা খাতুনের চার সন্তানের মধ্যে তৃতীয় সন্তান।

২০১৮ সালে কেরালখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে জিপিএ ৩.২৮ ও ২০২০ সালে সরকারি বীরশ্রেষ্ঠ নুর মোহাম্মদ ডিগ্রি কলেজ থেকে জিপিএ ৩.৪২ পেয়ে উত্তীর্ণ হন হেলাল। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকলেও তাকে থামিয়ে রাখতে পারেনি।

হেলালের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেন, আমার হাতের সমস্যার কারণে হাত দিয়ে লিখতে খুব কষ্ট হতো। এখন অভ্যাস হয়েছে। তবে এখনও কষ্ট হয়। আমি সংগ্রাম করছি আর সংগ্রাম করে বাঁচতে শিখেছি। সকলে আমার জন্য দোয়া করবেন। আমি যেন ভালো ফলাফল করে বাবা-মাসহ শিক্ষকদের মুখ উজ্জ্বল করতে পারি। স্বপ্ন উচ্চ শিক্ষিত হয়ে দেশ ও দেশের মানুষের কল্যানে কাজ করতে। আমি যেন একজন আদর্শবান শিক্ষক হয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারি।

তিনি আরো বলেন, ‘আমার বাবা একজন কৃষক। তার পক্ষে আমার পড়াশোনার খরচ যোগানো কষ্টের। এটাই আমার জীবনের একমাত্র সমস্যা। তবুও আমি চেষ্টা করে যাব লক্ষে পৌঁছানোর’।

হেলালের বাবা লিকনুর রহমান জানান, তারাও হেলালকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেন। তার ছেলে মেধাবী। সে নিজের চেষ্টায় পড়াশুনা করছে। আমার আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় হেলালের চাহিদা সবসময় মেটাতে পারি না। তবে আমি আপ্রাণ চেষ্টা করব উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে। হেলালের জন্য সকলে দোয়া করবেন।

হেলালের সহপাঠী সংবাদকর্মী নয়ন হোসেন বলেন, হাতের কবজি দিয়ে লিখলেও হেলালের লেখা অনেকের চেয়ে সুন্দর ও ঝকঝকে। সে মেধাবী শিক্ষার্থী। পড়াশুনার পাশাপাশি খেলাধুলাতেও সে দক্ষ। তার অনেক গুণ আছে। হেলালের মধ্যে ইচ্ছে শক্তিটা বাস্তবায়ন করতে সকলের সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে। শুধুমাত্র পরিবারের সহযোগিতায় এগিয়ে যেতে তার অনেক কষ্টসাধ্য। তাছাড়া তাকে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরণের সুযোগ সুবিধা দেওয়া হলে হেলাল তার লক্ষে পৌঁছাতে পারবে।

নিজামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সেলিম রেজা বিপুল বলেন, হেলাল প্রতিবন্ধী হলেও যথেষ্ট মেধাবী এবং পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলায়ও খুবই পারদর্শী। আমি আশা করবে নতুন শিক্ষা জীবনে সবাই হেলালকে সকল ধরণের সহযোগিতা করবেন। হেলালের জন্য শুভকামনা সবসময় তার মঙ্গল কামনা করি।

এদিকে সরকারি বাংলা কলেজের সমাজকর্মের বিভাগীয় প্রধান শাহিনারা খাতুন মুঠোফোনে এ প্রতিনিধিকে জানান, ফেসবুকে দেখে খুশি হয়েছি হেলাল আমাদের কলেজে তাও সমাজকর্ম বিষয়ে। তাকে কলেজে ভর্তি থাকাসহ সার্বিক সহযোগিতায় দেওয়া হবে। ভর্তি হোক সকলে ওর পাশে থাকবো।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads