ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় সামান্য বৃষ্টিতে পানি বন্দি হয়ে দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। পৌর শহরের ৪নং ওয়ার্ডের পূর্ব মসজিদ পাড়া এলাকার অর্ধশতাধিক পরিবার পানি বন্দি হয়ে এখন জন দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। বৃষ্টির পানির জনে পানি বন্দি হয়ে তারা এখন ঘর থেকে বের হতে পারছেন না । অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হওয়ার ফলে এবং ড্রেন ও পয়:নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় চারদিকে পানি জমে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। পানি জমে থাকায় সব চেয়ে বেশী কষ্ট করছেন বয়স্ক ,শিশু ,শিক্ষার্থী ও অসুস্থ লোকজনরা।
স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেন, অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ড্রেন পরিস্কার না করার কারণে এ দুর্ভোগ তাদের পোহাতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছেন বিষয়টি স্থায়ী সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
জানা যায়, পৌর শহরের পূর্ব মসজিদ পাড়া এলাকায় দীর্ঘ বছর ধরে অনেক পরিবার বসবাস করছেন। দিন দিন বাড়ছে মানুষের বসতঘরের সংখ্যা। এরমধ্যে অপরিকল্পিত ভাবে অনেক পরিবার তৈরী করছেন বাড়ি ঘর।
সরজমিনে পৌর এলাকার বাইপাস সংলগ্ন পূর্ব মসজিদ পাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, বিশাল একটি খালি জায়গাজুড়ে পানি আর পানি। এর ঠিক উল্টোদিকেই বেশ কিছু বাড়ি। একটি বাড়ি থেকে পানি মাড়িয়ে আসতে থাকা নারী এ প্রতিবেদককে দেখে বিব্রতবোধ করেন। সাংবাদিক পরিচয় জেনে কাছাকাছি একটি বাড়ির এক নারী ছুটে এসে দুর্ভোগের কথা জানান। জড়ো হয় কয়েক শিক্ষার্থী। গত ২ দিন আগে রাতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। বৃষ্টিতে সড়ক বাজার, মসজিদ পাড়া এবং খড়মপুর সড়কের মধ্যে পানি জমে যায়। পাশাপাশি পূর্ব মসজিদ পাড়া এলাকায় পানি জমে জনদুর্ভোগ চরমে উঠে। একই সময়ে বিদ্যুৎ না থাকায় দুর্ভোগ আরো বেড়ে যায়।
পূর্ব মসজিদপাড়ার কাসেম মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকা আজগর আলীর স্ত্রী তাসলিমা আক্তার বলেন, ‘প্রায় ১৪ বছর ধরে এখানে থাকি। এবার বৃষ্টির মৌসুমের শুরুতেই আমরা দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছি। বাড়ি থেকে বের হওয়ার দুই পথেই পানি আর পানি। মূলত যে পথ দিয়ে পানি বের হতো সেখানে একটি জায়গার মালিক মাটি ফেলে পাইপের মুখ বন্ধ করে দিয়েছেন।’
মো. আলমাস মিয়া নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা পৌর কাউন্সিলরের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি এলাকা ঘুরে দেখেছেন। নিজ নিজ জায়গাতে মাটি ফেলার কথা বলছেন। পাশাপাশি ছোট ছোট ড্রেন কেটে দিয়েছেন। কিন্তু এতে কোনো সমাধান হবে না। আমরা স্থায়ীভাবে এর একটা সামাধান চাই।’
নাছরীন নবী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী জান্নাত আক্তার বলে, ‘পানির জন্য বাড়ি থেকে বের হতে পারি না।’ সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী বৃষ্টি আক্তার বলে, ‘আমাদের বাড়ির উপর দিয়ে সবাই চলতো। এখন পানি উঠায় তাদের আসতে কষ্ট হয়। আমি তাদের এলাকা দিয়ে স্কুলে যেতাম। এখন বিকল্প পথে যেতে গিয়ে অনেক সময় নষ্ট হচ্ছে।’
৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. সিরাজুল ইসলাম এমরান কিছু পরিবার পানিবন্দি থাকা ও সড়কে পানি জমে থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, রোববার দিনভর এ নিয়ে কাজ করেছেন। পূর্ব মসজিদ পাড়ায় মাটি কেটে ছোট ছোট ড্রেন করা হয়েছে। স্থায়ী সমাধানের চেষ্টা করা হবে।