• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
বিদ্যুৎস্পৃষ্টে বাবা বেঁচে গেলেও রক্ষা হয়নি ছেলের

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

বিদ্যুৎস্পৃষ্টে বাবা বেঁচে গেলেও রক্ষা হয়নি ছেলের

  • কাজী মফিকুল ইসলাম, আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
  • প্রকাশিত ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২

আজ থেকে প্রায় ১০ বছর আগে কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হন বাহার মোল্লা নামে এক শ্রমিক। এর পর থেকে তিনি প্রায় অচল হয়ে কোন রকম এখনো প্রাণে বেঁচে আছেন। এ ঘটনার প্রায় ১০ বছর পর বৃহস্পতিবার সকালে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হন তার ছেলে সৃজন মোল্লা (২৫)। কিন্তু বিদ্যুৎ স্পৃষ্টে পিতা রক্ষা পেলে ও তার ছেলে রক্ষা পায়নি। ঘটনাস্থলেই সে মারা যায়।
এ মৃত্যু যেন কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না তার পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা। অসময়ে পরিবারের সদস্যরা তাকে হারিয়ে সবাই শোকে পাথর হয়ে গেছেন। তাদের পরিবারে এখন চলছে শোকের মাতম।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের ধাতুর পহেলা গ্রামে ওয়ার্কশপে নিজের অটো রিকশা মেরামত করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন সৃজন। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় এমরান হোসেন নামে আরো একজন আহত হয়। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ দুজই সম্পর্কের চাচাতো ভাই।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সকালে অটো রিকশা মেরামত করতে ঘর থেকে বের হয়ে গ্রামের একটি ওয়ার্কশপে যান। সেখানে অসাবধানবশত কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সেখান থেকে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে ধাতুরপহেলা গ্রামে নিহতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় পাড়া প্রতিবেশীর পাশাপাশি তাদের আত্মীয় স্বজনদের ভিড়। ঘরের ভেতরে বসে সৃজনের মা, বাবা স্ত্রীসহ আত্মীয় স্বজনরা বিলাপ করছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. বাবলু বলেন, গত প্রায় ৬ মাস আগে বিয়ে বিয়ে করেন। বর্তমানে তার বাবা খুবই অসুস্থ। পরিবারের খরচ যোগাতে সে একটি অটো রিকশা চালাতো। এতেই চলতো তার সংসার। এরইমধ্যে প্রবাসের যাওয়ার জন্যও অনেক চেষ্টা করছিলেন। অনেকটাই যেন ঠিক ঠাক হয়ে আছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার যাওয়া হলো না তার।

মো. আক্তার হোসেন বলেন সৃজন খুব শান্ত স্বভাবের ছিল। সে সুন্দর সুন্দর কথা বলতো। আমাদের সবাইকে সব সময় সে মাতিয়ে রাখতো। ছোট বড় সবাই তাকে পছন্দ করত। এই কথা বলে সে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

নিহতের চাচী ফাতেমা বেগম, সকালে ঘর থেকে ভাত খেয়ে অটো রিকশা ঠিক করতে বের হয়। তার সঙ্গে ছিল কিস্তির টাকা । অটো ঠিক করে কিস্তির টাকা দিয়ে বাড়িতে আসতে দেরি হবে বলে তার স্ত্রীকে বলে চলে যাই। এরপর সে আসলো ঠিকই কিন্তু জীবিত নয়। এই বলে সে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুল ইসলাম মৃত্যু হওয়ার বিষয়টি সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন নিহতের খোঁজ খবর নিয়ে তার বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads