• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
পাল্লেকেলেতে ম্যাড়মেড়ে ড্র

ছবি: শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট

ক্রিকেট

পাল্লেকেলেতে ম্যাড়মেড়ে ড্র

  • মাহমুদুন্নবী চঞ্চল
  • প্রকাশিত ২৬ এপ্রিল ২০২১

নিষ্প্রাণ উইকেট। বিশেষ করে বোলারদের জন্য উইকেটে কিছুই ছিল না। পাঁচ দিনে উইকেট পড়েছে মাত্র ১৭টি। রান উঠেছে দুই দল মিলিয়ে প্রায় তেরো শ। এমন ম্যাচ ড্র না হয়ে উপায় নেই। অনুমিতভাবে ড্র-ই হয়েছে পাল্লেকেলেতে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার মধ্যকার প্রথম টেস্ট। ম্যাচের তখনো নির্ধারিত ওভার বাকি ছিল ৩৫। এর মধ্যে হানা দেয় বৃষ্টি। আশাহত তামিম, সেঞ্চুরিটা হলো না তার।

প্রথম ইনিংসে সাত উইকেটে ৫৪১ রানে ডিক্লেয়ার দেয় বাংলাদেশ। জবাবে করুনারত্নের ডাবল সেঞ্চুরির সঙ্গে ধনাঞ্জয়ের দেড়শোর্ধ্ব ইনিংস লঙ্কানদের পৌঁছে দেয় রান পাহাড়ে। ৮ উইকেটে ৬৪৮ রানে ইনিংস ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা। গতকাল শেষ দিনে বাংলাদেশ দ্বিতীয় সেশন পর্যন্ত ব্যাট করে। তামিমের ঝড়ো ফিফটিতে রান আসে ১০০। তৃতীয় সেশন শুরুর আগে ঝামেলা পাকায় বৃষ্টি। পরে দুই অধিনায়ক ম্যাচ ড্র মেনে নেন। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের এটি চতুর্থ টেস্ট ড্র। শ্রীলঙ্কার মাটিতে দ্বিতীয়। ২০১৩ সালে গলেতে প্রথম ড্র করেছিল বাংলাদেশ। দেশের বাইরে টানা ৯ টেস্ট হারার পর একটি ম্যাচ বাঁচাতে পারল বাংলাদেশ। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ষষ্ঠ ম্যাচে প্রথম পয়েন্টের দেখাও মিলল। গতকাল ম্যাচের পঞ্চম ও শেষ দিনের প্রথম সেশনে ছিল রান আর উইকেটের মেলা। উইকেটশূন্য চতুর্থ দিনের পর এ দিন এক সেশনে বাংলাদেশ তুলে নেয় পাঁচ উইকেট, শ্রীলঙ্কা রান তোলে ওভারপ্রতি প্রায় পাঁচ করে।

১৫৪ রানে দিন শুরু করা ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে ১৬৬ রানে বিদায় করেন তাসকিন আহমেদ। দিমুথ করুনারত্নের সঙ্গে তার বিশাল জুটি থামে ৩৪৫ রানে। তাসকিন নিজের পরের ওভারে করুনারত্নেকে ফেরান। ৬৯৮ মিনিট উইকেটে কাটিয়ে ৪৩৭ বল খেলে ২৪৪ রানে থামে করুনারত্নের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। বাংলাদেশের বিপক্ষে কোনো অধিনায়কের সর্বোচ্চ ইনিংস এটিই। পেছনে পড়ে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকার গ্রায়েম স্মিথের ২৩২।

১০৭ রানে পিছিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। শুরুটা ছিল ভয়াবহ। আতঙ্ক চেপে বসেছিল, না জানি ম্যাচের রেজাল্ট হয়ে যায়। কারণ ২৭ রানে পড়ে দুই উইকেট। ৮ বলে ব্যক্তিগত এক রানে লাকমলের শিকার সাইফ হাসান। প্রথম ইনিংসে তিনি করেছিলেন শূন্য।

এরপর বিদায় নেন গত ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান নাজমুল হোসেন শান্ত। দেড়শোর্ধ্ব ইনিংস খেলা শান্ত এবার বিদায় নেন রানের খাতা খোলার আগেই। তবে বল মোকাবেলা করেছেন ৮টি। তিনি লাকমলের বলে হন বোল্ড।

২৭ রানে ২ উইকেট হারিয়ে হঠাৎই তখন চাপে বাংলাদেশ। ধনঞ্জয়ার পরের ওভারেও ক্রিজ ছেড়ে ছক্কা মারেন তামিম। তবে জোড়া ধাক্কার পর গুটিয়ে নেন নিজেকে। মুমিনুল হকও ধীরস্থির ব্যাটিংয়ের পথ বেছে নেন।

এর মধ্যে খানিকটা নাটক হয় একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে। ধনঞ্জয়ার বলে তামিমের ড্রাইভ সিলি পয়েন্টে ওশাদা ফার্নান্দোর বুটে লেগে ক্যাচ হয়ছে বলে আবেদন করে শ্রীলঙ্কা। মাঠের আম্পায়ার ‘সফট সিগন্যাল’ আউট দিয়ে সিদ্ধান্ত পাঠান তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে। তিনি লম্বা সময় নানা অ্যাঙ্গেল থেকে দেখে সিদ্ধান্ত নেন ‘নট আউট’।

জুটি একটু থিতু হওয়ার পর আবারো দারুণ গতিতে ছুটতে থাকেন তামিম। বিশ্ব ফার্নান্দোর এক ওভারে তিন বাউন্ডারিতে ফিফটি স্পর্শ করেন ৫৬ বলে। টেস্টে যেটি তার ৩০তম অর্ধশতক। তার যখন ফিফটি হলো, দলের রান তখন ৫২।

ফিফটির পরও এগোতে থাকেন একই গতিতে। ধনঞ্জয়াকে টানা দুটি বাউন্ডারির পরের ওভারে ছক্কা মারেন আরেকটি। পরে চা বিরতির আগে আবার সাবধানী ব্যাটিংয়ে পার করেন সময়। বিরতির পর আর সময়ই পেলেন না! বেরসিক বৃষ্টি ড্রকে করে ত্বরান্বিত। ডাবল সেঞ্চুরির সুবাদে ড্র হওয়া ম্যাচে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জেতেন লঙ্কান অধিনায়ক করুনারত্নে।

মুমিনুলের সঙ্গে তামিমের অবিচ্ছিন্ন জুটির রান ৭৩। বাংলাদেশ অধিনায়ক অপরাজিত থাকেন ৮৬ বলে ২৩ রান করে। সবুজ উইকেটে পেসারদের চোখ রাঙানিতে শুরু ম্যাচ শেষ পর্যন্ত হয়ে থাকল ব্যাটসম্যানদের একপেশে দাপটের। টানা ২৮ টেস্টে ফল হওয়ার পর শ্রীলঙ্কায় ড্র হলো কোনো টেস্ট। স্বাগতিকদের তা নিয়ে মাথা ব্যথা থাকলেও খুশি বাংলাদেশ। টানা হারে ক্লান্ত ছিল যে টাইগার শিবির।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads