• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
জিম্বাবুয়েকে বিশ্ব রেকর্ডের টার্গেট বাংলাদেশের

সংগৃহীত ছবি

ক্রিকেট

সাদমান-শান্তর জোড়া সেঞ্চুরি

জিম্বাবুয়েকে বিশ্ব রেকর্ডের টার্গেট বাংলাদেশের

  • ক্রীড়া প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১০ জুলাই ২০২১

স্বাগতিক জিম্বাবুয়ের সাদামাটা বোলিং গুঁড়িয়ে দাপট দেখালেন দুই বাঁহাতি সাদমান ইসলাম ও নাজমুল হোসেন শান্ত। দুজনের সেঞ্চুরিতে স্বাগতিকদের ওপর বিশাল রানের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। সফরকারীরা দ্বিতীয় ইনিংসে ১ উইকেটে ২৮৪ রান তুলে সমাপ্তি ঘোষণা করে। শনিবার হারারেতে একমাত্র টেস্টের চতুর্থ দিনের খেলা শেষে জিম্বাবুয়ে ৩ উইকেটে ১৪০ রান করে। এর আগে বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ৪৬৮ ও জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংসে ২৭৬ রান করে। ফলে বাংলাদেশ ৩৩৭ রানে এগিয়ে থেকে জয়ের পথে রয়েছে।

দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৭৭ রান অর্থাৎ বিশ্ব রেকর্ড গড়েই ম্যাচ জিততে হবে জিম্বাবুয়েকে। এর আগে, চতুর্থ ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪১৮ করে ম্যাচ জিতে বিশ্ব রেকর্ড গড়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০০৩ সালে। এমন হিসেবকে সামনে রেখে জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে খুব সাবধানে খেলতে থাকে। ‘জয় নয় ড্র’-এই চিন্তা মাথায় নিয়ে তাদের ব্যাটসম্যানরা খুব একটা রিস্ক নেননি। ১৪০ রান করে দিন পার করতে তাদের অবশ্য ৩টি উইকেট হারাতে হয়েছে। সাকিব আল হাসান, তাসকিন আহমেদ ও মেহেদি হাসান মিরাজ একটি করে উইকেট পান। 

১৮০ বলে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পান সাদমান। মাত্র  ১০৯  বলেই দ্বিতীয় সেঞ্চুরিতে পৌঁছান শান্ত। দ্বিতীয় উইকেটে এই দুজন তুলেন অবিচ্ছিন্ন ১৯৬ রান। জুতসই রান পাওয়ার পর ১ উইকেটে বাংলাদেশ ২৮৪ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে। তখন ১১৮ বলে ১১৭ রানে অপরাজিত ছিলেন শান্ত। ১৯৬ বলে ১১৫ রান করেন সাদমান। এই ম্যাচ জিততে হলে তাই জিম্বাবুয়েকে করতে হবে ৪৭৭ রান। টেস্ট ইতিহাসে এত রান তাড়া করে জেতার নজির নেই। ম্যাচ বাঁচাতে হলেও ব্র্যান্ডন টেইলরদের টিকে থাকতে হবে চার সেশনের বেশি সময়।

বাংলাদেশের বড় পুঁজি পাওয়ার ভিত তৈরি হয়েছিল আগের দিনই। ১৯২ রানের লিড নেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে কথা বলল বাংলাদেশের টপ অর্ডার। প্রথম ইনিংসে টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান মিলে করেছিলেন মোটে ২৫ রান। এবার তিনজনই পেয়েছেন রান। সাইফ ৪৩ করে আউট হওয়ার পর বাকি দুজন পেলেন সেঞ্চুরি।

২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দারুণ প্রতিশ্রুতি দিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ার শুরু সাদমানের। নিউজিল্যান্ডে গিয়ে বড় ইনিংস খেলতে না পারলেও দেখিয়েছিলেন নিবেদন। আগে দুবার ফিফটি পেরুলেও সেঞ্চুরির দেখা পাচ্ছিলেন না। এবার সুবিধামতো পরিস্থিতি পেয়ে এই ওপেনার তুলে নিলেন নিজের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি।

অষ্টম টেস্টে এসে প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পেলেন বাঁহাতি এই ওপেনার। মিল্টন শুম্বার বল অন সাইডে ঠেলে দিয়ে দুই রান নিয়ে ১৮০ বলে স্পর্শ করেন ম্যাজিক ফিগার। এই সেঞ্চুরিতে তামিম ইকবালের পাশে সঙ্গী হিসেবে সাইফ হাসান থেকে অনেকটা এগিয়ে গেলেন তিনি। সেঞ্চুরির পথে সাদমান মেরেছেন ৮ চার। এমনিতে আরো বেশি সময় নিয়ে খেলা এই ব্যাটসম্যান এদিন পরিস্থিতির দাবিতেই ছিলেন অনেকটা বেশি সচল।

রান বাড়াতে একদম ভুগতেও হয়নি তাকে। জিম্বাবুয়ের সাদামাটা বোলিং আক্রমণ বড় রকমের সমস্যায় ফেলতে পারছিল না। তবে সেঞ্চুরির পথে একবার জীবন পেয়েছেন তিনি। ৫৫ রানে ডোনাল্ড টিরিপানোর বলে পয়েন্টে তার সহজ ক্যাচ ছেড়ে দেন ডিওন মেয়ার্স।

এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। সাইফ হাসানের সঙ্গে ওপেনিং জুটিতে ৮৮ আনার পর শান্তর সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে হয়ে যান আরো দুর্বার।

গত শ্রীলঙ্কা সফরে ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরি পাওয়া শান্তর ব্যাট এদিন আরো চওড়া ছিল। প্রথম ইনিংসে রান না পাওয়ার খেদ মেটান দারুণ সব ছক্কা-চারে। ফিফটির পর স্লিপে ক্যাচ দিয়ে বেঁচেছিলেন। আর কোনো সুযোগ দেননি। এবার তিন অঙ্কে যাওয়ার পথে পাঁচ চারের সঙ্গে শান্ত মেরেছেন ৪ ছক্কা।  যার একটিতে ছক্কায় পৌঁছান নব্বুইয়ের ঘরে, আরেক ছক্কায় যান তিন অঙ্কের কাছে। দারুণ অথরিটি নিয়ে খেলা শান্তকে বিন্দুমাত্র ভোগাতে পারেননি জিম্বাবুয়ের কোনো বোলার। তিন অঙ্কে গিয়ে ছক্কা পিটিয়েছেন আরো দুটি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ৪৬৮

জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংস : ২৭৬

বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস :   ৬৭.৪ ওভারে ২৮৪/১, ইনিংস ঘোষণা (সাদমান ১১৫*, সাইফ ৪৩, শান্ত ১১৭*  ; মুজারাবানি ০/২৭, এনগারাভা ১/৩৬, টিরিপানো ০/৩৩, নিয়াউচি ০/৩৬, শুম্বা ০/৬৭, কাইয়া ০/৮৪)।

জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ইনিংস : ৪০ ওভারে ১৪০/৩ (টেইলর ৯২, শুম্বা ১১, মায়ার্স ১৮*, কাইতানো ৭*, সাকিব ১/২৩, মিরাজ ১/৪৫, তাসকিন ১/৩৯)।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads