• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বড় জয় বাংলাদেশের

সংগৃহীত ছবি

ক্রিকেট

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বড় জয় বাংলাদেশের

  • ক্রীড়া প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১১ জুলাই ২০২১

কিছুটা হলেও টেনশনে পড়েছিল বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা। কারণটা ছিল, স্বাগতিক জিম্বাবুয়ের আজ রোববারের শুরুর খেলা। সকাল থেকে উইকেটে থিতু হওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা ছিল প্রায় সবারই। তারপরও বাংলাদেশের বোলাররা কার্যকর ভূমিকা রাখায় তাদের সব চেষ্টা বৃথা যায়। দ্বিতীয় ইনিংসে ২৫৬ রানে অলআউট হয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। পঞ্চম দিন শেষ হওয়ার বেশ আগেই ২২০ রানের বিশাল জয় নিশ্চিত হয়ে যায় মুমিনুল হকের দলের। এর আগে বাংলাদেশ তাদের দুই ইনিংসে ৪৬৮ ও ২৮৪/১ (ডিক্লেয়ার্ড) এবং জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংসে ২৭৬ রান করে। এই জয়ে একমাত্র টেস্টের সিরিজ ট্রফিও লাভ করল বাংলাদেশ।

রানের হিসেবে এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বড় জয়। চট্টগ্রামে ২০০৫ সালে ২২৬ রানে জিতেছিল বাংলাদেশ এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই।

স্বাগতিকদের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ করে দেওয়ার পথে ৪টি করে উইকেট পান মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাসকিন আহমেদ। ৬৬ রানে ৪ উইকেট নেন মিরাজ, আর ৮২ রানে ৪ উইকেট তাসকিনের।

গতকাল ৭ উইকেট নিয়ে পুরো দিন টিকে থাকার চ্যালেঞ্জ ছিল জিম্বাবুয়ের। সেই লক্ষ্যে দিনের প্রথম ঘণ্টা অবশ্য নির্বিঘ্নে পার করে দিয়েছিলেন আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান ডোলান্ড টিরিপানো আর ডিওন মেয়ার্স। কিন্তু প্রথম ঘণ্টা পার হওয়ার পরই নামে ধস। মেয়ার্স মিরাজের বলে ফ্লিকের মতো করে ক্যাচ দেন শর্ট মিড অনে।

এতেই খুলে যায় যেন বাঁধ। এরপর টিমসেন মারুমাকেও এলবিডব্লিউ করে বিদায় করেন মিরাজ। যদিও তার করা বলের ডেভিয়েশন দেখে মনে হয়েছে বলটা টার্ন করে লেগ স্টাম্প মিস করার সম্ভাবনা ছিল। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও কোনো রান করতে পারেননি মারুমা।

লাঞ্চের আগে বল করতে এসে দারুণ এক স্পেল করেন তাসকিন। ৫০ ওভার পুরনো বলে গতির সঙ্গে দেখান রিভার্স সুইংয়ের মুন্সিয়ানা। এতেই স্বাগতিকদের সব সম্ভাবনা নিভে যায়।

প্রথম ইনিংসের মতো এবার রয় কাইয়া শিকার তাসকিনের। এবারও তিনি রানের খাতা খুলতে পারেননি। তবে তিনিও কিছুটা দুর্ভাগ্যের শিকার।  রিপ্লে দেখে মনে হয়েছে তাসকিনের মিডল স্টাম্প লাইনে পড়া বল ভেতরে ঢুকে মিস করে যাচ্ছিল লেগ স্টাম্প। কিন্তু আম্পায়ার মরিস এরামুস তুলেন আউটের আঙুল। রিভিউ না থাকায় আরেকবার পুড়ে স্বাগতিকরা।

এরপর রেজিস চাকাভাকে দারুণ এক রিভার্স সুইংয়ে তাকে বোল্ড করে দিয়ে লাঞ্চের আগেই শেষের সম্ভাবনা তৈরি করে ফেলেছিলেন তাসকিন। খানিক পর ভিক্টর নিয়াউচিকেও বোল্ড করেছিলেন। কিন্তু নো বলের কারণে বেঁচে যান নিয়াউচি।

লাঞ্চের আগেই পড়ে যায় ৪ উইকেট। ৭ উইকেটে ১৭৬ রান তুলে লাঞ্চ বিরতিতে যায় জিম্বাবুয়ে। লাঞ্চ থেকে ফিরে ঝটপট খেলা শেষ হওয়ারই বাস্তবতা ছিল। কিন্তু দুই টেল এন্ডারকে নিয়ে অনেকক্ষণ লড়ে গেছেন টিরিপানো।

৮ম উইকেটে নিয়াউচির সঙ্গে আসে ৩৫ রানের জুটি। সবচেয়ে বড় কথা এই জুটি পার করে দেয় ১৫ ওভারের বেশি। দ্বিতীয় সেশনে নিয়াউচিকে স্লিপে ক্যাচ বানিয়ে জুটি ভাঙেন তাসকিনই।

এরপর ব্লেসিং মুজারাবানিকে নিয়ে নবম উইকেটেও দাঁড়িয়ে যান টিরিপানো। এই জুটিও লম্বা সময় হতাশা বাড়ায় বাংলাদেশের। টিরিপানো তুলে নেন ফিফটি। তবে তার বিদায়ে দায় কেবলই আম্পায়ারের। আরো একবার ম্যাচে ভুল সিদ্ধান্ত দেন এমামুস। ৪১ রানের জুটি ভাঙে ইবাদত হোসেনের বলে। ভেতরে প্রবেশ করা বলটা খেলতে গিয়ে পরাস্ত হন টিরিপানো। তার থাই প্যাডে লেগে যায় কিপারের হাতে। আম্পায়ার আঙুল তুলে ঘোষণা করেন কট বিহাইন্ড। ম্যাচে একমাত্র উইকেট যায় ইবাদতের পকেটে।

শেষ উইকেট তুলে নিতে আরো পাঁচ ওভার লেগেছে। তাসকিনের সামনে ছিল ৮ বছর পর বাংলাদেশের কোনো পেসার হিসেবে ৫ উইকেট লাভের সুযোগ। কাছে গিয়েও পারেননি তিনি। রিচার্ড এনগারাভাকে বোল্ড করে শেষ উইকেট পান মিরাজই। ম্যাচসেরা হয়েছে মাহমুদউল্লাহ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ৪৬৮

জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংস : ২৭৬

বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস :  ২৮৪/১ (ইনিংস ঘোষণা)

জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ইনিংস : ৯৪.৪ ওভারে ২৫৬ (লক্ষ্য ৪৭৭) (শুম্বা ১১, কাইটানো ৭, টেইলর ৯২, মেয়ার্স ২৬, টিরিপানো ৫২, মারুমা ০, কাইয়া ০, চাকাভা ১, নিয়াউচি ১০, মুজারাবানি ৩০*, এনগারাভা ১০;  সাকিব ১/৪৪, মিরাজ ৪/৬৬, তাসকিন ৪/৮২, ইবাদত ১/৩৯, মাহমুদউল্লাহ ০/৯)। ফল : বাংলাদেশ ২২০ রানে জয়ী।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads