• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪২৯
ভিলেন সংকটে ঢালিউড

সংগৃহীত ছবি

ঢালিউড

ভিলেন সংকটে ঢালিউড

  • সালেহীন বাবু
  • প্রকাশিত ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১

ঢালিউডের কমার্শিয়াল ছবির ভিলেন কিংবা খলচরিত্রে দীর্ঘদিন ধরেই এককভাবে রাজত্ব করে আসছেন মিশা সওদাগর। প্রায় এক হাজার ছবিতে অভিনয় করা মিশা যেন নিজেই নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী। অনেক চেষ্টা করেও তার ধারেকাছে আসতে পারছেন না কেউ। মিশা ছাড়া অন্য কোনো খল অভিনেতা ঢালিউডে নিজের আসন পোক্ত করতে পারেননি। একটা সময় সবাইকেই থামতে হয়। তখন ঢাকাই ছবিতে দর্শক গ্রহণযোগ্য খল হিসেবে হাল ধরবেন কে বা কারা? শিমুল খান, ডিজে সোহেল, শিবা শানু, জিয়া ভিমরুল, টাইগার রবি-তাদের বড়জোর প্রধান খলনায়কের পার্শ্ব খলচরিত্র হওয়ার মতো অভিনয় শিল্পী বলে মনে করেন দর্শক। তা ছাড়া নতুনদের কেউ খল অভিনেতা হতেও চাচ্ছেন না। নায়িকাকে পাশে পাবেন বলে সবাই ‘নায়ক’ হতে চান।

কিন্তু তারা ভুলে যান, নায়ক-নায়িকা নয়, দর্শকের মনে একজন দক্ষ খল অভিনেতাই গোটা চলচ্চিত্রের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকেন। একটি সিনেমার ক্লাইমেক্স-অ্যান্টি ক্লাইমেক্সের কেন্দ্রেই থাকেন একজন খল অভিনেতা। নায়ক-নায়িকা শুধু রোমান্টিকদের জন্য আর খলনায়ক সবার জন্য। প্রথম ঢাকাই সিনেমা ‘মুখ ও মুখোশে’ প্রধান চরিত্রই ছিল খল ইনাম আহমেদ। একটা শ্বাসরুদ্ধকর পরিবেশের মধ্য দিয়ে খল অভিনেতাই একটি সিনেমার সার্থক সমাপ্তি টানেন। অভিনয়ের দিক থেকে খল চরিত্র নায়কের চাইতেও অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং। মোট কথা, একটি চলচ্চিত্রে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেন একজন দক্ষ খল অভিনেতাই।

ঢালিউডের ছবিতে ভিলেন হিসেবে আরো যারা নিজেদের জাত চিনিয়েছেন তারা হলেন-ফতেহ লোহানী, দারাশিকো, খলিল, গোলাম মুস্তাফা, রাজু আহমেদ, এ টি এম শামসুজ্জামান, আরিফুল হক, বাবর, আদিল, কায়েস, আহমেদ শরিফ, কেরামত মাওলা, জুবের আলম, রাজিব, রাজ, মেহফুজ, জাম্বু, হুমায়ুন ফরীদি, মিজু আহমেদ, সাদেক বাচ্চু, ডিপজল, ডন, ড্যানি সিডাকসহ আরো অনেকে। নায়কদের মধ্যেও অনেকে খলনায়ক হিসেবে অভিনয় করেন। যেমন-গোলাম মুস্তাফা, খলিল, আলমগীর, ওমর সানী, অমিত হাসান প্রমুখ। চাইলেই কেউ হুট করে খল হতে পারবেন না। আগে তাকে অভিনয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। যেটা গোলাম মুস্তাফা, খলিল, হুমায়ুন ফরীদির মাঝে দেখা গেছে। ভিলেন হওয়ার আগে তারা অভিনেতা হিসেবেই নিজেদের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এখানে ‘গাইতে গাইতে গায়েন’ হওয়ার মতো ভিলেন হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার সুযোগ কম। নায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে দীর্ঘ সময় নেওয়া যায়। খলনায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে হলে শুরুতেই বাজিমাত করতে হবে। যেমন আমরা হুমায়ুন ফরীদিকে দেখেছি। এই দক্ষতার অভাবেও খল চরিত্রের সংকট চলছে এখন।

অথচ ষাটের শুরু থেকে নব্বই দশক পর্যন্ত খল চরিত্রের কোনো সংকট ছিল না ঢাকাই সিনেমায়। একই সঙ্গে অনেক খলচরিত্র মিলে একটা বৈচিত্র্যও ছিল। এখন মিশা ছাড়া উল্লেখযোগ্য খল কোথায়? ডিপজল ছিলেন। অনেকদিন হলো তিনিও খল চরিত্রে নেই। জসিমের মতো চরিত্র বদল করেছেন। তার মানে ঢাকাই সিনেমার খলনায়কের মাঠে বেশ বড়সড় ফাঁকা অবস্থা চলছে। খলনায়কের খোঁজে এখন ঢাকাই সিনেমা। এই সংকট নিরসনের উপায় কী?

এ নিয়ে পরিচালক মালেক আফসারি বলেন, ‘খলনায়কের সংকট কোথায়, ছবিই তো হচ্ছে না। এখন ছবিও নেই, খলনায়কও নেই। সংকট হচ্ছে ফাইন্যান্সারের, প্রডিউসারের।’ বর্তমানে খল অভিনেতা হিসেবেই দেখা যাচ্ছে চিত্রনায়ক হিসেবে পরিচিতি পাওয়া অমিত হাসানকে। তিনি বলেন, ‘কারো জন্যই কোনো কিছু থেমে থাকে না। শূন্যস্থান পূরণ হওয়ার মতো অনেক শিল্পী আছেন। এটা ঠিক, আগে একসঙ্গে অনেক খল অভিনেতা ছিলেন। কথায় আছে না, যায় দিন ভালো, আসে দিন খারাপ।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads