• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪২৯
উপনির্বাচনে মনোনয়ন পেতে তোড়জোড় শুরু

ফাইল ছবি

নির্বাচন

উপনির্বাচনে মনোনয়ন পেতে তোড়জোড় শুরু

  • সালাহ উদ্দিন চৌধুরী
  • প্রকাশিত ১৮ মে ২০২১

ঘোষণা হয়নি তফসিল। কবে নাগাদ হতে পারে ঠিক হয়নি দিনক্ষণও। দলের পক্ষ থেকেও প্রার্থী নির্বাচনের বিষয়ে শুরু হয়নি কোনো তোড়জোড়। কিন্তু তারপরও ঢাকা-১৪ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেতে মাঠে নেমেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অর্ধশতাধিক মনোনায়ন প্রত্যাশী। ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়ে তাদের ব্যানার, পোস্টারে সয়লাব মিরপুর, শাহআলী, দারুস সালাম ও রূপনগর এলাকার অলিগলি। সেইসাথে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও জোর প্রচারণা চালাচ্ছেন তাদের কর্মী-সমর্থকরা। পুরো রমজান মাসজুড়ে অনেকে ত্রাণ বিতরণের মাধ্যমেও আসন্ন নির্বাচনে নিজেদের উপস্থিতির বিষয়টি জানান দিয়েছেন ভোটারদের মধ্যে। ব্যাপক শো-ডাউনের মাধ্যমে বিতরণ করেছেন ত্রাণসামগ্রী। ভার্চুয়াল সভাসহ ঘরোয়া ও বাইরের নানা অনুষ্ঠানে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা উপস্থিত হচ্ছেন। এদিকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এই আসনটিতে একজন সাংগঠনিক ও জনপ্রিয় নেতা খোঁজ করা হচ্ছে বলে দলীয় সূত্রে জানা যায়। এজন্য একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা এবং দলের পক্ষ থেকে যোগ্য প্রার্থী খোঁজার পাশাপাশি মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীদের বিষয়েও ব্যাপক খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।

এই আসনটির কর্তৃত্বলাভে যারা মাঠে নেমেছেন তাদের মধ্যে আছেন, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি, মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দারুস সালাম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানুর এবিএম মাজহারুল আনাম মাজহার আলম, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক মো. মোবাশ্বের চৌধুরী, শাহআলী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আগা খান মিন্টু, দারুস সালাম থানা অওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ফরিদুল হক হ্যাপি, মিরপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম হানিফ, সংরক্ষিত আসনের সাবেক এমপি ও যুব মহিলা লীগ নেত্রী সাবিনা আক্তার তুহিন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ফু ওয়াং ফুডস লিমিটেডের এমডি ড. আরিফ আহমেদ চৌধুরী, সাবেক কাউন্সিলর ও অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল। এছাড়া যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলের নামও শোনা যাচ্ছে এই তালিকায়। অন্যদিকে আসলামুল হকের সমর্থক নেতা-কর্মীদের একটি অংশ চাচ্ছেন তার স্ত্রী মাকসুদা হককে দিয়ে এই আসনের নির্বাচন করিয়ে সেখানে নিজেদের কর্তৃত্ব টিকিয়ে রাখতে।

মনোনয়ন প্রত্যাশী কাজী ফরিদুল হক হ্যাপী জানান, তিনি ৩০ বছর ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। গত নির্বাচনেও তিনি এই আসনের মনোনয়ন চেয়েছিলেন উল্লেখ করে জানান, এবারও তিনি মনোনয়ন চাইবেন। আমার মতো নতুন অনেকেই এ আসনে প্রার্থী হতে চাইছেন। কিন্তু এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। তবে নেত্রীর কাছে আমাদের অনুরোধ থাকবে, এই এলাকার সঙ্গে সম্পৃক্ততা আছেন এমন প্রার্থীকে যেন মনোনয়ন দেওয়া হয়।

চলতি বছরের ৪ এপ্রিল ইন্তেকাল করেন ঢাকা-১৪ অসনে সংসদ সদস্য আসলামুল হক আসলাম। তিনি পরপর তিনবার এই আসনের এমপি ছিলেন। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান আসলামুল হক। তিনি বিএনপি প্রার্থী এস এ খালেককে পরাজিত করেন। এরপর ২০১৪ এবং ২০১৮ সালেও এমপি নির্বাচিত হন তিনি। বেশ কিছু ক্ষেত্রে বিতর্ক থাকলেও এলাকায় তার একক নেতৃত্ব ও কর্মী বাহিনীর কাছে তিনি বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। সবক্ষেত্রে নিজস্ব একটি বলয় তৈরি করেন তিনি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অন্যান্য মনোনয়নবঞ্চিতদের মধ্যে কেউ কেউ গোপনে ও প্রকাশ্যেই আসলামুল হকের বিরোধিতা করেছিল। ঢাকা-১৪ আসনের অর্ন্তগত তিন থানা আওয়ামী লীগের শীর্ষ ৬ নেতার মধ্যে ৫ জনই আসলামুল হকের বিরোধিতা করেছিলেন।

তার মৃত্যুর পর গত ১৩ এপ্রিল আসনটি শূন্য ঘোষণা করে এর গেজেট নির্বাচন কমিশনে পাঠায় সংসদ সচিবালয়। যদিও করোনা পরিস্থিতির অবনতির কারণে আসনটিতে উপনির্বাচন নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

রাজধানীর মিরপুর, শাহআলী ও দারুস সালাম থানা, রূপনগর থানার আংশিক এবং সাভার উপজেলার কাউন্দিয়া ইউনিয়ন নিয়ে ঢাকা-১৪ আসন। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৭, ৮, ৯, ১০, ১১ ও ১২ নং ওয়ার্ড এ আসনের অর্ন্তভুক্ত।

দলীয় প্রার্থী মনোনয়নের বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ সবসময় সৎ, যোগ্য এবং সাংগঠনিক বিষয়গুলোতে প্রাধান্য দেয়। এই আসনের (ঢাকা-১৪) ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হবে না। এছাড়া দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য দলের মনোনয়ন বোর্ড আছে। মনোনয়ন প্রত্যাশীদের অতীত কর্মকাণ্ড পর্যালোচনার পাশাপাশি দলের জন্য তার ত্যাগের বিষয়টিও মনোনয়নের ক্ষেত্রে অন্যতম মাপকাঠি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনাই নেবেন বলে জানান তিনি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads