• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ৮৯ ভোট কেন্দ্র

ছবি: বাংলাদেশের খবর

নির্বাচন

কুসিক নির্বাচন

বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ৮৯ ভোট কেন্দ্র

  • কুমিল্লা প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৭ জুন ২০২২

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে স্থানীয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে। এরই মধ্যে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে কুসিকের দুই উপজেলার ২৭টি ওয়ার্ডের ১০৫টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ৮৯ ভোট কেন্দ্রে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে নির্দিষ্ট সংখ্যক পুলিশ, এপিবিএন, আরআরএফ সদস্য ও আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে।

এছাড়া কেন্দ্রের বাইরে মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স, বিজিবির টহল টিম, রিজার্ভ ফোর্স ও ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে থাকবে। সব মিলিয়ে ভোটের দিনে নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকবে ভোট কেন্দ্রসহ পুরো কুসিক নগরী। মাঠে মোতায়েন থাকবে অন্তত ৬ হাজারেরও অধিক আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য। এছাড়াও নগরীর প্রতিটি প্রবেশ পথ ও গুরুত্বপূর্ণ সড়কে থাকবে চেকপোস্ট। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে থাকবে বুলেট প্রুপ-আরমোরেড পারসোনাল ক্যারিয়ার (এপিসি) ও জলকামান গাড়ি। জেলা পুলিশ সুপারের বিশেষ শাখা (ডিএসবি) এসব তথ্য জানায়।

আগামী ১৫ জুন অনুষ্ঠিতব্য কুসিক নির্বাচনে সদর ও দক্ষিণ উপজেলার ২৭টি ওয়ার্ডের সকল কেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ভোট নিয়ে প্রার্থীদের নানা শংকার কথা থাকলেও এরই মধ্যে স্থানীয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন থেকে নেওয়া হয়েছে বেশকিছু পদক্ষেপ। ১০৫ ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ৮৯টি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ, ৭টি কম ঝুঁকিপূর্ণ এবং ৯টি সাধারণ ভোট কেন্দ্রে হিসেবে চিহ্নিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এর মধ্যে সদর দক্ষিণ উপজেলার ৯টি ওয়ার্ডের (১৯ থেকে ২৭ নম্বর) ৩২টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে সকল কেন্দ্রই অধিক ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় রয়েছে। অবশিষ্ট সব কেন্দ্র সদর উপজেলায়। শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণের জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে অন্তত ৬/৭ সদস্য পুলিশ সদস্য, ২০ জন পুরুষ ও মহিলা আনসার সদস্য, কেন্দ্রের বাইরে পুলিশের ১টি মোবাইল টিম, প্রতিটি কেন্দ্রের জন্য বাইরে একজন পরিদর্শকের নেতৃত্বে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে টহল, ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে থাকবে মোবাইল টিম। এছাড়াও নির্দিষ্ট কেন্দ্র এলাকায় থাকবে বিজিবি ও র্যাবের টহল টিম। অধিক ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা নজরদারি থাকবে বলেও পুলিশ জানিয়েছে। কুসিক নির্বাচনে সব মিলিয়ে অন্তত ছয় সহস্রাধিক আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য ও কর্মকর্তা মাঠে থাকবে। এদিকে ভোটের দিন কুসিক এলাকার আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও নির্বাচনি পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে নগরীতে প্রবেশ পথে মোতায়েন থাকবে পুলিশের ৭৫টি চেকপোস্ট ও ১০টি পিকেট টিম।

কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) এম তানভীর আহমেদ বলেন, কুসিকের ভোট অধিক গুরুত্ব দিয়ে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। জেলা পুলিশের বাইরেও আশপাশের জেলা থেকে আনা হচ্ছে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য। এছাড়াও ঢাকা থেকে পর্যাপ্ত সংখ্যক আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) ও চট্টগ্রাম থেকে রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্স ( আরআরএফ) সদস্য আনা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ভোটের দিন রাস্তায় থাকবে এপিসি ও জলকামান গাড়ি। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই নগরীর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্থাপন করা হয়েছে চেকপোস্ট। পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি টহল দিচ্ছে।

র‍্যাব-১১, সিপিসি-২ কুমিল্লার অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন বলেন, নির্বাচনে কঠোর নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হবে। এ জন্য কুসিক এলাকায় র্যাবের অন্তত ২৭টিম কাজ করবে। প্রয়োজনে এ সংখ্যা আরো বাড়ানো হতে পারে।

কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, শান্তিপূর্ণ ভোটের পরিবেশ প্রত্যাশা করছে কুসিকের প্রার্থী ও ভোটাররা। তাই আমরা এ বিষয়ে সকল ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। আশা করি এ ভোট হবে অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর। তিনি আরো বলেন, ভোটের দিন আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিটি কেন্দ্রে কঠোর নিরাপত্তা থাকবে। ২৭টি ওয়ার্ডে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট ও ১২ প্লাটুন বিজিবি দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়াও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাসমূহকে সহায়তা করতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে থাকবে।

রিটার্নিং অফিসার শাহেদুন্নবী চৌধুরী বলেন, কুসিক নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করতে স্থানীয় প্রশাসন সব দিক থেকে সহায়তা দিচ্ছে। আমরা নির্বাচন কমিশন থেকেও বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি। সুষ্ঠু ভোট নিয়ে প্রার্থী ও ভোটারদের কোনো শঙ্কিত হওয়ার কারণ দেখছি না, আশাকরি ভোটের পরিবেশ ভালো থাকবে।

এদিকে, নির্বাচন উপলক্ষে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ৩০ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এছাড়া সোমবার থেকে সিটির আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মাঠে থাকবে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে এসব বিষয় জানিয়েছেন কুমিল্লা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) এম তানভীর আহমেদ।

এসময় তিনি জানান, ২৮ এপ্রিল তফসিল ঘোষণার পর থেকে ৫ জুন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৫টি চেকপোস্ট, ১৯টি স্পেশাল মোবাইল, ২টি ডিবি মোবাইল টিম অভিযান পরিচালনা করেছে। অভিযানে ৯২৯ মোটরসাইকেল থেকে ৩০ লাখ ১৯ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads