• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯
প্রার্থীদের পাল্টাপাল্টি বাক্যবাণে উত্তপ্ত কুমিল্লা সিটি

সংগৃহীত ছবি

নির্বাচন

প্রার্থীদের পাল্টাপাল্টি বাক্যবাণে উত্তপ্ত কুমিল্লা সিটি

  • খায়রুল আহসান মানিক, কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৯ জুন ২০২২

কুমিল্লা সিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মেয়র প্রার্থীদের উত্তপ্ত ও পাল্টাপাল্টি বাক্যবাণই এখন ভোটাদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে আড্ডার টেবিলে একজন আরেকজনকে চোর বলছেন অপরজন বলছেন বড় চোর। এরমধ্যে উপভোগ্য অবস্থানে আছেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার। তিনি বলছেন, এসব সত্য বেরুচ্ছে ফ্রুটিকার প্রভাবে।

প্রার্থীদের নিক্ষিপ্ত বাক্যবাণে জমে ওঠা আসরে যুক্ত হয়েছে একে অপরের দোষ-ত্রুটি অন্বেষণ ও নানান সমালোচনা। এক নির্বাচনি পথসভায় মনিরুল হক সাক্কু বলেন, আজ যদি রিফাত ভাই নৌকার মাঝি না হয়ে সীমা মনোনয়ন পেতো তাহলে রিফাত ভাই আমার পিছে থাকতো আর কইতো সীমাকে ফেল করাও।

এসব বাক্যবাণে ২০১৭ সালের সিটি নির্বাচনের ঘটনাও ওঠে আসছে। প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যক্ষ আফজল খানের মেয়ে আঞ্জুম সুলতানা সীমা সে বছর সিটি নির্বাচন করেন। আর তাতে সীমাকে কৌশলে হারানোর অভিযোগও ওঠে। সীমা সম্পর্কে মনিরুল হক সাক্কুর ওই বক্তব্য দুইদিন ধরে আবারো মানুষের মুখে মুখে, আলোচনার টেবিল ও চায়ের আড্ডায় উত্তাপ ছড়াচ্ছে। আঞ্জুম সুলতানা সীমার অনুসারীরা কথাগুলো ছড়িয়ে দিচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

কাগজে কলমে প্রার্থী ৫ জন থাকলেও মাঠে রয়েছেন তিনজন। বাকি দুইজনকে দেখা যায় না। এই তিন প্রার্থীই চষে বেড়াচ্ছেন নগরীর অলিগলি। শনিবার আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত গণসংযোগ করেন নগরীর ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চকবাজার, তেরীপট্টি, শাপলামোড়সহ বিভিন্ন এলাকা।

এসময় তিনি মনিরুল হক সাক্কুর চ্যালেঞ্জের জবাবে বলেন, সাক্কু স্থান নির্ধারণ করুক, আমি প্রমাণ দেব তিনি দুর্নীতিবাজ। সেখানে থাকবেন গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ ও সাংবাদিকরা। তিনি বলেন, কুমিল্লাবাসী এবার পরিবর্তন চায়। আমি মেয়র হলে কুমিল্লা নগরীকে তিলোত্তমা করে তুলব।

স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু এর আগে রিফাতের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেন, যখন আমি তাদের (আওয়ামীলীগের) জন্য করেছি, তখন আমি চোর ছিলাম না। এখন রিফাত ভাই নির্বাচনে দাঁড়াইছে, তাই আমি চোর হয়ে গেছি। আমি চোর হলে রিফাত বড় চোর। রিফাত হো আর ইউ? উনি কি জজ? সরকার না প্রধানমন্ত্রী। গায়ের জোর বেশি থাকলে স্টেডিয়ামে আসুক। আসেন কোথায় মারপিট করবেন, ঘোষণা দিয়ে আসেন।

মনিরুল হক সাক্কু গণসংযোগ করেন নগরীর ৭ নম্বর ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডের জাঙ্গালিয়া, শাকতলাসহ বিভিন্ন এলাকায়। এসময় তিনি আবারো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, গত ১০ বছর তারা কী করেছেন। এতদিন কিছুই বলেননি কেন? নির্বাচনে না দাঁড়ালে হয়তো কিছুই বলতেন না। এখন পরাজয়ের ভয়ে এত কিছু বলছেন। রিফাত কে? তিনি কে? আমি অন্যায়-অপরাধ করলে দেশে সরকার আছে সরকারে কাছে আমার নামে অভিযোগ করতে পারেন। দেশে আইন আছে, তা না করে মিথ্যা প্রচার করে বিভ্রন্তি ছড়ানো হচ্ছে। সাক্কু আরো বলেন, আমি ১০ বছরে সিটি করপোরেশনকে একটি কাঠামোতে দাঁড় করিয়েছি। এখন আধুনিকায়নের পালা। জনগণ এবার আমাকে নির্বাচিত করলে একটি আধুনিক নগরী পাবে কুমিল্লার মানুষ।

অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার গণসংযোগ করেন নগরীর ৬নং ওয়ার্ডের কাপ্তান বাজার, আদালতপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকা। তিনি বলেন, দুই প্রার্থী একে অপরকে চোর আর বড় চোর বলছে। ফ্রুটিকার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ১১ বছর পর বের হয়ে আসছে কে চোর আর কে বড় চোর। এ দুই চোরের পাশে না থেকে আমার ঘোড়া প্রতীক নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হোন। চোরের আখড়া থেকে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনকে উদ্ধার করতে হবে।

ভোটের মাঠে বসে নেই কাউন্সিলর প্রার্থীরাও। নিজ নিজ নির্বাচনি এলাকায় চষে বেড়াচ্ছেন তারা। আগামী ১৫ জুন হবে সিটি নির্বাচন। প্রচারণা চলবে ১৩ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ৫ জন মেয়র ১৪৭ জন কাউন্সিলর প্রার্থী।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads