ফয়সল চৌধুরী, হবিগঞ্জ:
সাম্প্রদায়িক সহিংসতা চিরতরে বন্ধ ও ২০১৮ সালে সরকারি দলের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নসহ ৪ দফা দাবীতে গণঅনশন ও মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ হবিগঞ্জ জেলা শাখা। শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত হবিগঞ্জ শহরের টাউন হলের সামনে এই গণঅনশন ও মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়।
গণঅনশন ও মানববন্ধনে ২০১৮ সালে সরকারি দলের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দেয়া সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, বৈষম্য বিলোপ আইন প্রণয়ন, দেবত্তোর সম্পত্তি সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পন আইন যথাযথ বাস্তবায়ন, পার্বত্য শান্তিচুক্তি ও পার্বত্য ভূমি কমিশন আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন এবং সমতরের আদিবাসীদের জন্য পৃথক কমিশন গঠনের বাস্তবায়নের দাবীতে বক্তারা বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ হবিগঞ্জ জেলা শাখার আহ্বায়ক এডভোকেট পূণ্যব্রত চৌধুরী বিভুর সভাপতিতে ও আহ্বায়ক কমিটির সদস্য বিপ্লব কুমার রায় সুজনের পরিচালনায় আয়োজিত এই মানববন্ধনে একাত্মতা পোষণ করে বক্তব্য রাখেন হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আলমগীর চৌধুরী, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি হবিগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক পীষুষ চক্রবর্তী। এছাড়াও বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ হবিগঞ্জ জেলা শাখার অন্যতম নেতা এডভোকেট অহীন্দ্র দত্ত চৌধুরী, দীপুল রায়সহ উপজেলা শাখার নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ হবিগঞ্জ জেলা শাখার আহ্বায়ক এডভোকেট পূণ্যব্রত চৌধুরী বিভু বলেন, বঙ্গবন্ধু অসাম্প্রদায়িকতায় হিমালয়ের শীর্ষে ছিলেন। কিন্তু তার যারা দলের লোক তারাই বঙ্গবন্ধুকে অনুসরণ করছেন না। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বাইডেন থেকে শুরু করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পর্যন্ত সম্মান করেন, তিনি হলেন শেখ হাসিনা। আমাদের দাবীগুলো উনার কাছে ঠিকমত পৌঁছায় কি না, তা নিয়ে সন্দেহ হয়। আমাদের ও দেবোত্তর সম্পত্তির সুরক্ষার দাবী করছি। এগুলো তো কোন কঠিন দাবী নয়। তাহলে কেন বছরের পর বছর ধরে আমাদের ক্ষুদ্র দাবীগুলো আদায় হচ্ছে না।
এই গণঅনশন ও মানববন্ধনের সাথে একাত্মতা পোষণ করেছে জানিয়ে হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আলমগীর চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি অসাম্প্রদায়িক চেতনার দল। মহান মুক্তিযুদ্ধে সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষ অংশ নিয়েছিল। ৩০ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে এদেশ স্বাধীন হয়। কিন্তু ৭৫’ পরবর্তী সময়ে সংবিধানকে বহুবার কাটা ছেড়া করে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। মতিউর রহমান নিজামীর মত রাজাকার এদেশে মন্ত্রী হয়েছেন। আজ বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সরকারকে উৎখাত করতে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। এসব ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করতে হবে।
গণঅনশন ও মানববন্ধনের সাথে একাত্মতা পোষণ করে হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান সেলিম বলেন, অনেক বিষয় আমরা কিন্তু বুঝি। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি মাথায় নিয়েই কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে দেশ পরিচালনা করতে হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য বা প্রতিশ্রুতি দেন, হয়ত সময়সাপেক্ষ বিষয় হলেও তিনি তার বাস্তবায়ন করেন।
সভা শেষে হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর চৌধুরী জুস ও পানি খাইয়ে সকলের অনশন ভাণ্ডান।