• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯

সম্পাদকীয়

শিক্ষাক্ষেত্রে বুলিং

আজওয়াদের মৃত্যু আমাদের অপরাধী করে

  • মামুন রশীদ
  • প্রকাশিত ১৩ জুলাই ২০২১

৯ জুলাই ২০২১ অসংখ্য খবরের ভিড় সরিয়ে সংবাদপত্রের পাতার একটি প্রতিবেদনে চোখ আটকে গেল। সেখান থেকে কিছু অংশ তুলে ধরছি— ‘১৬ বছর বয়সী কিশোর আজওয়াদ আহনাফ করিম। বয়সের তুলনায় ওজন বেশি হওয়ায় আজওয়াদকে নিয়ে তার সহপাঠীরা হাসাহাসি করতো। আর এটাই তার জীবনের কাল হয়ে দাঁড়ায়। সহপাঠীদের বুলিংয়ের শিকার হয়ে তাকে চিরতরে হারিয়ে যেতে হয়েছে। দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া কিশোর কোনো উপায় না পেয়ে ইন্টারনেট থেকে নিজেই খাবার নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি ফলো করা শুরু করে। করোনায় স্কুল বন্ধ থাকায় বাসায় ব্যায়াম করা বাড়িয়ে দেয়। একটু বেশি খেলেই বমি করে ফেলত। মা-বাবা তখনো ততটা চিন্তিত হননি। কিন্তু ৯৩ কেজি ওজন থেকে ছেলের ওজন যখন দ্রুত কমতে থাকে এবং অন্যান্য জটিলতা দেখা দেয় তখন চিকিৎসক, মনোরোগ বিশেষজ্ঞসহ বিভিন্ন জনের কাছে ছেলেকে নিয়ে দৌড়াতে থাকেন। কিন্তু ততদিনে সময় আর হাতে নেই। গত ২৬ জুন আজওয়াদ রাজধানীর একটি হাসপাতালে মারা গেছে।’

খবরটি জানার পরেই বুকের মধ্যে একটি বেদনাবোধ দুমড়ে মুচড়ে উঠতে থাকে। আমাদের অসহায়ত্ব, সন্তানের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পরিবারের উৎকণ্ঠা আরো একবার স্পষ্ট হলো। বিদ্যালয় চলাকালে বা বিদ্যালয় শুরু হওয়ার আগে বা পরে, শ্রেণিকক্ষে বা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বা বাইরে কোনো শিক্ষার্থী কর্তৃক (এককভাবে বা দলগতভাবে) অন্য কোনো শিক্ষার্থীকে শারীরিকভাবে আঘাত করা, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করা, অশালীন বা অপমানজনক নামে ডাকা, অসৌজন্যমূলক আচরণ করা, কোনো বিশেষ শব্দ বারবার ব্যবহার করে উত্ত্যক্ত বা বিরক্ত করা ‘স্কুল বুলিং’ হিসেবে গণ্য, যা অপরাধ। অথচ প্রতিনিয়ত এ ধরনের অপরাধ ঘটে চলেছে। যার কোনো কোনোটি সংবাদমাধ্যমে আসছে। কিন্তু অধিকাংশই রয়ে যাচ্ছে সংবাদমাধ্যমের অগোচরে। আজওয়াদের করুণ মৃত্যুর খবর সংবাদমাধ্যমে এসেছে। এরকম অসংখ্য আজওয়াদ প্রতিদিন নানাভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের বুলিংয়ের শিকার হচ্ছে। তাদের অনেকেই হারিয়ে যাচ্ছে, অনেকেই নানান মানসিক যন্ত্রণা নিয়ে ক্রমশ নিজের ভেতরে নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছে। সেসব খবর আমরা জানছি না, ফলে বুলিংয়ের ভয়াবহতাও থেকে যাচ্ছে অজানা। কিন্তু অজানা থাকলেও থেমে নেই বুলিংয়ের ভয়াবহতা। একটা সময় ভাবা হতো বুলিং বুঝি বাইরের দুনিয়ার বিষয়। আমাদের এখানে শব্দটিও খুব বেশি পুরনো না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের নির্যাতনকে আমরা পোশাকি নামে ডাকা শুরু করেছি মাত্র সেদিন। কিন্তু এই সমস্যাটি সেদিনের না। বুলিংয়ের ব্যাপ্তি বোঝাতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ন্যাশনাল সার্ভের তথ্যে বলা হয়েছে, স্কুলজীবনে কোনো না কোনো সময়ে ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীই বুলিংয়ের শিকার হয়। অন্যদিকে ভার্জিনিয়ার এক গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, শুধু টিজিং ও বুলিংয়ের কারণে সেখানে ২৯ শতাংশেরও বেশি শিক্ষার্থী স্কুল থেকে ঝরে পড়ে। অন্য একটি প্রতিবেদন বলছে, ৩০% ছাত্রছাত্রী বুলিংয়ের শিকার হয়ে স্কুলে যায় না, তাদের মধ্যে ভয়ভীতি ও বিষণ্নতা কাজ করে। এদের মধ্যে ১৩-২৩ বছরের তরুণ-তরুণীরা আত্মহত্যার ওপর বেশি প্রলোভিত থাকে। বাংলাদেশে এর ব্যাপ্তি এবং ভয়াবহতা স্পষ্ট হয় টেলিনর গ্রুপের এক গবেষণা প্রতিবেদনে। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ৪৯ শতাংশ স্কুল শিক্ষার্থীর একই ব্যক্তির দ্বারা উৎপীড়নের শিকার হওয়া অথবা অনলাইনে উত্ত্যক্তের শিকার হওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে।

কিশোর আজওয়াদের জন্য যতটা খারাপ লাগা, ঠিক ততই ঘৃণায় গলার কাছটা ক্রমশ তিতো হয়ে উঠছিল খবরের আরো একটি অংশ দেখে। শুধু সহপাঠীরাই নয়, তার স্কুলের শিক্ষকদের মধ্যেও কয়েকজন হাসি-তামাশা করতেন। এতে বিব্রত হতো সে। মাঝেমধ্যে সে তার এই সমস্যার কথা বাসায় এসে বলেছেও। স্কুলে যেতে চাইত না। তবে বাব-মা ভাবতেন ছেলে ভিডিও গেম খেলার জন্য মিথ্যা অজুহাতে স্কুল কামাই করতে চাইছে। আজওয়াদকে মানসিক নির্যাতন শুধু তার সহপাঠীরাই করেনি, তার অনেক শিক্ষকও করেছে। এই উদাহরণও কিন্তু আমাদের জন্য নতুন নয়। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে শিক্ষক কর্তৃক এ ধরনের নির্যাতনের শিকার অনেক শিক্ষার্থীর হারিয়ে যাওয়ার কথা সংবাদমাধ্যমেও এসেছে। সংবাদপত্রের পাতা থেকেই কয়েকটি উদাহরণ তুলি ধরি : এক. ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০ : বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় নিজ ঘর থেকে তৃতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে স্বজনরা। এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থীর স্কুলের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা করেছেন তার বাবা। এ ব্যাপারে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছে পুলিশ; দুই. ২০ নভেম্বর ২০১৯ : নওগাঁর পত্নীতলায় প্রধান শিক্ষকের অপমান সইতে না পেরে দশম শ্রেণির এক ছাত্রের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। ওই ছাত্রের নাম রাব্বী হাসান (১৬)। এবার গগনপুর উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল তার; তিন. আগস্ট ১৬, ২০১৮ : মাদারীপুরে প্রধান শিক্ষকের নির্যাতনে অপমানিত হয়ে দশম শ্রেণির স্কুলছাত্রীর বিষপানে আত্মহত্যা। প্রধান শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে শিক্ষার্থীদের সমাবেশ।

এরকম অসংখ্য উদাহরণ সংবাদপত্রের পাতায় ঠাঁই পেলেও, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা হারিয়ে গেছে। আমাদের মনের কোনায় বড় দাগ কাটতে পারেনি। তাই হয়তো, আমরা ভুলে গেছি। আবার কিছু ঘটনা নাড়া দিয়েছে পুরো সমাজকেই। তাই আমরা ভুলতে পারিনি ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজের ছাত্রী অরিত্রি অধিকারীর আত্মহত্যার মর্মান্তিক সংবাদটি। সে সময় অরিত্রি’র দুঃখজনক মৃত্যুর ঘটনায় হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে একটি আদেশে শিক্ষার্থীরা যেন অসৌজন্য-অশালীন আচরণ, উপদ্রব, নির্যাতনের বিষয়ে অভিযোগ জানাতে পারে, সেজন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অভিযোগ বাক্স রাখার পক্ষে মত দিয়েছিলেন। একইসঙ্গে আদালত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ বাক্সে অভিযোগ জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে সচেতনতা বাড়াতেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রচার চালানোর কথা বলেছিলেন এবং জমা হওয়া অভিযোগ খুলে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া বা তদন্ত করার দায়িত্ব ব্যবস্থাপনা বা পরিচালনা পর্ষদের হাতে দেওয়ার কথা বলেছিলেন।

আজ শিক্ষার্থী, শিক্ষক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অ-শিক্ষক কর্মচারী— সকল পক্ষ থেকেই শিক্ষার্থীরা বুলিংয়ের শিকার হচ্ছে। এ থেকে বেরিয়ে আসতে, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী অভিযোগ বাক্স স্থাপন এবং যথাযথভাবে যদি সেই বাক্সগুলো খুলে ভেতরে জমা অভিযোগগুলো প্রতিকারের উদ্যোগ নেওয়া হয়, তাহলে বুলিংয়ের মতো ব্যাধির প্রকোপ কমবে, সন্দেহ নেই। কিন্তু প্রশ্ন হলো, আদালতের নির্দেশনা মেনে কতটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যথাযথভাবে অভিযোগ বাক্স স্থাপন করা হয়েছে? আবার যেসব প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের অভিযোগ বাক্স স্থাপিত হয়েছে, সেগুলোর যথাযথ ব্যবহার হচ্ছে কিনা, জমা পড়া অভিযোগের সঠিক তদন্ত হচ্ছে কি-না তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব তো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষেরই।

 

দুই

 

আমাদের শৈশব-কৈশোরের সঙ্গে বর্তমানকে মেলানোর আর কোনো সুযোগই নেই। আমাদের বেড়ে ওঠা জেলা সদরে। সেই বেড়ে ওঠার সঙ্গে উপজেলা, থানা বা ইউনিয়ন পর্যায়ের শিশু-কিশোরদের খুব বেশি ফারাক ছিল না। বাবা-মা আমাদের কখনো হাত ধরে স্কুলে পৌঁছে দিত না। শিক্ষকের কাছে ব্যক্তিগতভাবে পড়তে যাওয়া-আসার পথেও বাবা-মা সঙ্গী হতো না। আমাদের জন্য তাদেরও উৎকণ্ঠা ছিল, ভালোবাসা ছিল, কিন্তু নিরাপত্তাহীনতার ভয় খুব বেশি ছিল না। আর এটা ছিল না বলেই আমরা অবাধে এখানে-সেখানে যেতে পারতাম। স্কুল ও স্কুলের বাইরে পড়তে যাওয়া তো বটেই, এর বাইরেও আমরা একাই চলে যেতাম এখানে-ওখানে, এপাড়া-সেপাড়ায়। কোথায় কোন বন্ধু, তাদের সবার বাড়ি ছিল আমাদের মুখস্থ। নির্ধারিত মাঠে বিকেলে প্রায় সবাই আসতো। সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে যেতো যে যার মতো। আর যাদের বাড়ি তুলনামূলকভাবে দূরে, তাদেরও এলাকাভিত্তিক খেলার মাঠ, জায়গা বা কোথাও বসে সময় কাটানোর মতো সুযোগ ছিল।

কোথায় কোন নদী, কোথায়  কার পুকুর, বর্ষা ভেজা দুপুরে আমাদের ছিল অবাধ দাপাদাপি। লাল টকটকে জবা ফুলের মতো চোখের রঙ না আসা পর্যন্ত ওঠার নামও করতাম না আমরা। অথচ এখন, সেই আমরাই আমাদের সন্তানকে একা কোথাও ছাড়তে সাহস পাই না। মেয়েশিশু তো বটেই, ছেলেশিশুকে নিয়েও বাবা-মায়ের দুশ্চিন্তার অন্ত নেই। বাড়ির বাইরে ওঁৎ পেতে আছে মানুষরূপী দৈত্য, দানো, রাক্ষস-খোক্কস। তাই কোনো শিশুকেই আমরা একা ছাড়ার সাহস পাই না। রাজধানী তো বটেই, এখন জেলা-উপজেলাতেও বাবা-মায়েরা সন্তানকে চোখের আড়াল করতে ভয় পান। কেন? কারণ তো রয়েছেই। নেশাজাতীয় দ্রব্য আজ এতটাই সহজলভ্য হয়ে উঠেছে, কোন ফাঁদে পড়ে আমার শিশু সেই অন্ধকারে পা রাখবে তা আমরা জানি না। হালে এর সঙ্গে যোগ হয়েছে গ্যাং কালচার। পাড়ায় পাড়ায় উঠতি মাস্তান। আমাদের সময়ে গ্রীষ্মে আম কাটার জন্য ভোঁতা চাকু কারো হাতে থাকলেও, তা ছিল বিরাট ভয়ের। আর এখন কথায় কথায়, যাকে তাকে ছুরিকাঘাতে আহত করার খবর এত সস্তা হয়ে গেছে যে, তা আর সংবাদপত্রের পাতাতেও ঠাঁই পায় না।

একটি মানবশিশুকে বড় করে তোলার মধ্যে কতেটা শ্রম, ভালোবাসা, আবেগ, আদর মিশে থাকে, তা জানেন না বোঝেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন বলেই মনে করি। এই যে খুঁজে পাওয়া কঠিন বলছি, অথচ এই কঠিনের মধ্যে এই আমরাই সবচেয়ে জঘন্য আচরণ করতেও দ্বিধা করি না। আমাদের সব শিক্ষা, সব চিন্তা-চেতনা, সব সংযমের বাঁধ যেন মুহূর্তেই ভেঙে যায়। তাই সবচেয়ে জঘন্য অপরাধ করতেও আমাদের মন বাধা দেয় না। তারপরও আমরা মানুষ।

একজন শিক্ষক, যার দায়িত্ব শিক্ষা দেওয়া। জ্ঞান বিতরণের দায়িত্বকেই তিনি পেশা হিসেবে নিয়েছেন। দীর্ঘদিন জ্ঞান বিতরণের মতো একটি পেশার সঙ্গে থাকলে, তার ভেতরে শিশুসুলভ সরলতা প্রকাশ পায়। এজন্যই হয়তো একসময় শোনা যেতো, একটি নির্ধারিত সময় পর্যন্ত যদি কেউ শিক্ষকতা করেন, তবে সাক্ষী হিসেবে তার বিপক্ষে দাঁড়াতো অপরাধীপক্ষ। কারণ শিশুর সরলতায় তিনি সত্য বলে দেবেন, যাতে করে অপরাধী ফেঁসে যাবে। কথাটি সত্যি না মিথ্যে, বা ছড়ানো কথাটির সত্যাসত্য যাচাই করতে যাইনি কখনো, এমনকি এই লেখাটি লেখার সময়েও। কারণ কিছু কিছু বিশ্বাস, ধারণা যাচাই করতে হয় না। সামাজিক স্থিতিশীলতা এবং শৃঙ্খলা ধরে রাখার জন্যই অনেক সময় সমাজের জন্য সুখকর ও শুভ ইচ্ছাকে জারি রাখতে যাচাই প্রক্রিয়াকে সরিয়ে রাখতে হয়।

আজওয়াদকে নিয়ে প্রতিবেদনটির অন্য অংশে বলা হয়েছে, ‘এক আজওয়াদ চলে গেছে, কিন্তু এমন আজওয়াদ বা সন্তান তো অনেক আছে। ওদের বাঁচানোর আকুতিও জানিয়েছেন এই মা-বাবা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের প্রতি তাঁদের আহ্বান— আর কোনো আজওয়াদকে যেন এ ধরনের পরিস্থিতিতে পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে না হয়।’ আজওয়াদের বাবা-মায়ের আর্তি কি আমাদের কর্ণে প্রবেশ করবে? আমরা কি নিজের সন্তানকে দিয়ে উপলব্ধি করতে পারি, কতটা আদর, ভালোবাসা আর যত্নে বুকের ধনকে বড় করে তোলেন বাবা-মা? একটি শিশু শৈশব পেরিয়ে যখন স্কুলের চৌহদ্দিতে প্রবেশ করে, তখন শিক্ষক হয়ে ওঠে তার আরেক অভিভাবক। তার শিক্ষাগুরু। শিক্ষাগুরুর আশীর্বাদ আর দেখানো পথ বেয়েই একটি শিশু ধাপে ধাপে প্রবেশ করতে থাকে জীবনের বৃহৎ ক্ষেত্রে। শিশুর ভিত গড়ে দেন শিক্ষক। তাকে জীবনের কঠিন পরীক্ষায় শক্ত মাটির ওপর দাঁড়ানোর সাহস জোগান। অথচ জ্ঞান বিতরণের সর্বোচ্চ মর্যাদার আসনে থাকা ব্যক্তিটিই যখন, জেনে-বুঝে বা না জেনে-বুঝেই একটি শিশু বা কিশোরকে মানসিক নির্যাতন করেন, তা বড় কষ্টের। মানুষ গড়তে যার ভূমিকা, তিনি কী করে দায়িত্বহীন আচরণের মাধ্যমে একটি শিশু-কিশোরকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দেন? এটা কি এই সত্য স্পষ্ট করে না যে, দিন দিন আমরা কতটা অমানবিক হয়ে উঠছি? সমাজ থেকে এই বুলিং গেম বন্ধে আইনের প্রয়োগ জরুরি। রাষ্ট্রের কাছে দাবি, কঠোর আইনের আওতায় আনুন এ ধরনের অপরাধীদের।

 

লেখক : কবি, সাংবাদিক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads