• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
লাল তারকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হওয়ার পরামর্শ ইউজিসির

সংগৃহীত ছবি

শিক্ষা

লাল তারকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হওয়ার পরামর্শ ইউজিসির

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৬ অক্টোবর ২০২১

যেসব বিশ্ববিদ্যালয় ক্রমাগত শর্ত ভেঙে শিক্ষার্থী ভর্তি করছে তাদের লাল তারকা দেওয়া হয়েছে। লাল তারকা চিহ্নিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। ইউজিসির ওয়েবসাইটে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তথ্যও তুলে ধরা হয়েছে যাতে শিক্ষার্থীরা যাচাই করে ভর্তি হতে পারেন। কোনো শিক্ষার্থী এগুলোর কোনো একটিতে ভর্তি হলে তার দায় তাকেই নিতে হবে। ইউজিসি কোনো দায় নেবে না বলে জানায়। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয় মাসেরও বেশি উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ নেই সেগুলোতে ভর্তি না হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের সতর্ক করেছে ইউজিসি।

এ বিষয়ে ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে যেসব শর্তে সাময়িক সনদ দেওয়া হয়েছে, সেগুলো তারা পূরণ করেনি। কোনো শর্তসাপেক্ষ প্রোগ্রাম দেওয়া হলে তারা তা পূরণ করে না। মোটকথা শর্তচ্যুতির কারণে লাল তারকা চিহ্নিত করা হয়েছে। এখন এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে যদি অ্যাকশন নেওয়া হয়, তবে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন হুমকিতে পড়বে।’ তিনি বলেন, ‘কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রাস্টির মাঝে দ্বন্দ্ব রয়েছে। যে কোনো সময় সেগুলোর শিক্ষা কার্যক্রমও বন্ধ হতে পারে। এ কারণেও অনেককে লাল তারকা দেওয়া হয়েছে।’

গত ২৩ সেপ্টেম্বর শিক্ষার্থীদের সতর্ক করে একটি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে ইউজিসি। তাতে জানানো হয়, দেশের ১০৮টি অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থাকলেও ইউজিসির অনুমতিক্রমে ৯৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। বাকি ৯টি বিশ্ববিদ্যালয় এখনো শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেনি।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০, কমিশনের নিয়মনীতি ও নির্দেশনা উপেক্ষা করে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় অননুমোদিত ক্যাম্পাস, প্রোগ্রাম ও নির্ধারিত আসন সংখ্যার অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করেছে। এদেরকে অবৈধভাবে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা থেকে বিরত থাকতে কমিশন থেকে একাধিকবার সতর্ক করা হয়েছে।

গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় অর্জিত ডিগ্রির মূল সার্টিফিকেটে স্বাক্ষরকারী হবেন সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগ করা ভিসি ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক। শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনাকারী ৯৯টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রপতির নিয়োগ করা ভিসি, প্রো-ভিসি ও ট্রেজারার সকলেই নিয়োজিত রয়েছেন। এ ছাড়া, রাষ্ট্রপতির নিয়োগ করা ভিসি রয়েছে ৬৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে, প্রো-ভিসি ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং ট্রেজারার আছে ৫৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে।

২১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রপতির নিয়োগ করা ভিসি, প্রো-ভিসি ও ট্রেজারার পদে কেউ নেই। কমিশনের ওয়েবসাইটে ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যাবলি’ শিরোনামের সেবাবক্সে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য রয়েছে।

ড. মোহাম্মদ আলমগীর গণমাধ্যমকে আরো বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে উপচার্য, রেজিস্ট্রার ও টেজারার নিয়োগ দেওয়া হয়নি। স্থায়ী ক্যাম্পাস পরিচালনার অনুমোদন না নিয়েই শিক্ষা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। কোনো প্রজেক্টের কাজ দিলে সেটারও শর্ত পূরণ করছে না। একাধিকবার নোটিস দেওয়ার পরও যেসব বিশ্ববিদ্যালয় শর্ত পূরণ করেনি সেখানে ভর্তি হলে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।’

যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপারে সতর্ক করেছে ইউজিসি : গত ২৩ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সর্বশেষ তথ্যে বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়। তথ্যমতে, অবৈধ ক্যম্পাস পরিচালনা করছে ইবাইস ইউনিভার্সিটি। বিশ্ববিদ্যালয়টির অনুমোদিত ঠিকানা নেই। উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ পদে কোনো বৈধ কর্তৃপক্ষ নেই। সরকার কর্তৃক বন্ধ, তবে আদালতের রায় নিয়ে পরিচালিত আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ-সুবিধা নেই।

কুইন্স ইউনিভার্সিটিও সরকার কর্তৃক বন্ধ। এক বছরের জন্য শিক্ষা কার্যক্রমের অনুমতি দেওয়া হলেও নির্ধারিত সময়ে এটি কার্যক্রম চালু করতে পারেনি। দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লাকে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি দেওয়া হয়নি। এটির উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ পদে বৈধ কর্তৃপক্ষ নেই।

এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয়টির ২০২১ সালের স্প্রিং সেমিস্টার থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধক্ষ্য পদে বৈধ কর্তৃপক্ষ নেই। তবে বিশ্ববিদ্যলয় কর্তৃপক্ষ জানায়, দীর্ঘদিন ধরে প্যানেল জমা দিলেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি মন্ত্রণালয় থেকে। টাইমস ইউনিভার্সিটি ইউজিসির অনুমোদন না নিয়েই বিবিএ, এমবিএ, এলএলবি (অনার্স) এবং এলএলএম প্রোগ্রামে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে চলেছে।

সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি চট্টগ্রামের দুটি ক্যাম্পাস ছাড়া সকল ক্যাম্পাস আদালতের রায়ে অবৈধ।  ২০১৭ সাল থেকে ভর্তি বন্ধ রাখার জন্য কমিশনকে নির্দেশনাও দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গণবিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ, এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স, এমবিবিএস, বিডিএস এবং ফিজিওথেরাপি প্রোগ্রাম নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা রয়েছে। এছাড়া উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য পদে বৈধ কর্তৃপক্ষ নেই।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads