• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯

উদ্যোক্তা

এডিপির দৈন্য দশা

বেশি অর্থ ব্যয়েও আসছে না বেসরকারি বিনিয়োগ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১১ নভেম্বর ২০১৮

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট সরকার দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম বছর ২০০৯-১০ অর্থবছরে বাংলাদেশ মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ বিনিয়োগ করেছিল। গত ২০১৭-১৮ অর্থবচর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৯৭ শতাংশ। সরকারের দুই মেয়াদে ৩৭ হাজার ২৭৬ কোটি টাকা থেকে বেড়ে বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৭৯ হাজার ৪১৭ কোটি টাকায়। ৯ বছরে সরকারের বিনিয়োগ প্রায় পাঁচগুণ বাড়লেও এ সময়ে সরকারি বিনিয়োগ সাড়ে ২১ থেকে সাড়ে ২৩ শতাংশে ওঠানামা করেছে। সরকারি বিনিয়োগ বাড়লেও বেসরকারি বিনিয়োগে স্থবিরতার কারণ নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন ভাবনা সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তা ও অর্থনীতিবিদদের মধ্যে।

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অবকাঠামো খাতে বড় বিনিয়োগের মাধ্যমে সরকার বেসরকারি খাতের জন্য পথ তৈরি করে দিয়ে থাকে। এরই অংশ হিসেবে গত কয়েক মাসেও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বড় আকারের বেশ কিছু প্রকল্প। এসব প্রকল্পের কাজ শেষ হলে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়বে বলে মনে করছে সরকার। অন্যদিকে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সরকারের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) গলদ রয়েছে। রাজনৈতিক বিবেচনায় এডিপিতে প্রকল্প নেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন হয় না। ফলে ঝুলে থাকা প্রকল্পের ব্যয় বেড়েই চলেছে। বেসরকারি বিনিয়োগ টানতে সরকারি বিনিয়োগের মান বাড়ানোর তাগিদ দেন তারা।

এডিপি ঘিরেই সরকারের বিনিয়োগের বড় অংশ পরিচালিত হয়ে থাকে। আর বাংলাদেশে গুণগত এডিপি বাস্তবায়ন বরাবরই থাকে প্রশ্নের মুখোমুখি। গত অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে এডিপি বাস্তবায়নে ব্যয় হয় ১৬ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকা। আর শেষ মাস জুনে ব্যয় হয় ৪৯ হাজার ১৯৮ কোটি টাকা। শেষদিকে বাড়তি ব্যয়ের কারণে কাজের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে মাত্র ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ। এ ধারা চলতে থাকলে সরকারি বিনিয়োগের মান কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে উন্নীত করা সম্ভব হবে না বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য এটা অনেক পুরনো সমস্যা। বছরের শুরু থেকে প্রকল্প ফেলে রেখে শেষদিকে দায়সারা কাজ করা হয়। বর্তমান সরকারও এ বিষয়ে অবহিত। বছরের শুরুতে কাজ করতে প্রতিবারই নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু কোনো নির্দেশনারই বাস্তবায়ন হয় না। তিনি আরো বলেন, একসঙ্গে বেশি প্রকল্প নেওয়ায় বাস্তবায়নে গতি আসে না। শেষদিকে কিছু কাজ করে টাকা উঠিয়ে নেওয়া হয়। এতে জনগণের কোনো কাজে আসে না।

জানতে চাইলে আইএমইডির সচিব মো. মফিজুল ইসলাম বলেন, সারা বছর ধরে কাজ হলেও ঠিকাদারের বিল অর্থবছরের শেষের দিকেই বেশি পরিশোধ করা হয়ে থাকে। এর ফলে শেষের দিকে বাড়তি বাস্তবায়ন দেখা যায়। সার্বিক অর্থনীতির শৃঙ্খলার স্বার্থে এ বিষয়টি কাম্য নয় বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads